অষ্টম দিনের মতো কুয়াশায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটার পর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। একই কারণে মানিকগঞ্জের আরিচা ও পাবনার কাজিরহাট নৌপথেও ভোর সাড়ে চারটার পর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে। দুর্ঘটনা এড়াতে কর্তৃপক্ষ এই দুই রুটের ফেরি চলাচল বন্ধ রাখে।
ফেরি বন্ধ থাকায় দৌলতদিয়ায় চারটি, পাটুরিয়ায় ছয়টি ও মাঝ নদীতে একটি ফেরি আটকা পড়ে। আরিচা ও কাজিরহাট থেকে ছেড়ে যাওয়া দুটি ফেরি মাঝ নদীতে আটকা পড়ে। বেলা পৌনে ১১টার পর থেকে কুয়াশা কম থাকায় ফেরিগুলো নির্দিষ্ট ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। দীর্ঘ সময় ফেরি বন্ধ থাকায় উভয় ঘাটে বিভিন্ন যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় আটকা পড়ে। এরমধ্যে বেশিরভাগ ছিল পণ্যবাহী গাড়ি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় জানায়, মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ভারী কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত শেষে বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটার পর থেকে সামান্য কয়েকগজ দূরের কিছুই দেখা যাচ্ছিলনা। দুর্ঘটনা এড়াতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরিসহ সকল নৌযান চলাচল বন্ধ করে।
এসময় দৌলতদিয়ায় রো রো (বড়) ফেরি ভাষা শহীদ বরকত, শাহ জালাল, এনায়েতপুরী ও ইউটিলিটি (ছোট) হাসনা হেনা এবং পাটুরিয়ায় রো রো ফেরি কেরামত আলী, শাহ মখদুম, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, খানজাহান আলী, ইউটিলিটি চন্দ্র মল্লিকা ও কেটাইপ ফেরি কুমিল্লা যানবাহন বোঝাই করে নোঙর করে থাকে। পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে আসা ইউটিলিটি ফেরি রজনী গন্ধ্যা মাঝ নদীতে কুয়াশার কবলে পড়লে নোঙর করতে বাধ্য হয়। দৌলতদিয়া থেকে ছেড়ে যাওয়া রো রো ফেরি শাহ জালাল মাঝ নদীতে দীর্ঘক্ষণ আটকা থাকে। বেলা পৌনে ১১টার পর কুয়াশা কমতে থাকলে নোঙর করে থাকা ফেরিগুলো ছাড়তে থাকে।
বিআইডব্লিউটিসির অধীন আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ভোর সাড়ে চারটার পর থেকে বেলা পৌনে ১১টার পর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ছয় ঘন্টা ফেরি বন্ধ থাকে। এসময় উভয় ঘাটে বেশকিছু গাড়ি আটকা পড়ে। মাঝ নদীতে নোঙর করে থাকা কেটাইপ (মাঝারি) ফেরি ক্যামেলিয়া ও কুঞ্জলতা নির্দিষ্ট ঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ভারী কুয়াশা আর তীব্র শীতে মাঝ নদীতে থাকা ফেরিগুলোর যাত্রী ও গাড়ি চালকদের বাড়তি ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে দৌলতদিয়ায় দেখা যায়, সাত নম্বর ঘাটে দুটি, তিন ও চার নম্বর ঘাটে একটি করে ফেরি যানবাহন বোঝাই করে কুয়াশা কমার অপেক্ষায় রয়েছে। নদী পাড়ি দিতে না পাড়ায় ফেরি ঘাট সড়কে শতাধিক যাত্রীবাহি গাড়িসহ পণ্যবাহী গাড়ি অপেক্ষা করতে দেখা যায়। ভারী কুয়াশার কারনে যাত্রীবাহি পরিবহনে বসে থাকা যাত্রীদের চুপচাপ বসে থাকতে দেখা যায়।
পাটুরিয়ায় দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকা পিরোজপুরগামী বাসযাত্রী জিহাদ হাসান সজল বলেন, মঙ্গলবার গভীররাতে সড়ক দুর্ঘটনায় আমার এক ভাগ্নে মারা যান। খবর পেয়ে রাতেই রওয়ানা করতে পারিনি বলে ভোরে রওনা করি। সকালে পাটুরিয়া ঘাটে এসে প্রায় পাঁচ ঘন্টার মতো আটকে ছিলাম।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ জানান, অষ্টম দিনের মতো মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে নদী অববাহিকায় কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত বাড়ার সঙ্গে কুয়াশা বাড়লে দুর্ঘটনা এড়াতে বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটার পর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া এবং এর এক ঘন্টা আগে সাড়ে চারটা থেকে আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ফেরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। কুয়াশা কেটে গেলে বেলা পৌনে ১১টার পর থেকে দুই নৌপথে পুনরায় ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি