November 18, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, January 2nd, 2023, 10:03 pm

দ্বিগুণের বেশি ভোল্টেজ লেভেলের চার্জ বাড়াতে চাচ্ছে পিজিসিবি

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) এবার সঞ্চালন চার্জ বাড়াতে চাচ্ছে। ওই লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সংস্থাটি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) ৩ ধরনের ভোল্টেজ লেভেলে সঞ্চালন (হুইলিং) চার্জ দ্বিগুণেরও বেশি বাড়ানোর প্রস্তাব দাখিল করেছে। ওই প্রস্তাবের ওপর বিতরণ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বিইআরসি ৮ ও ৯ জানুয়ারি গণশুনানি করবে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, পিজিসিবি যে ৩ ধরনের ভোল্টেজ লেভেলের চার্জ বাড়াতে চাচ্ছে মধ্যে ২৩০, ১৩২ ও ৩৩ কেভি রয়েছে। পিজিসিবি সঞ্চালন চার্জ বাড়ানোর প্রস্তাবে দক্ষ নিরবচ্ছিন্ন সঞ্চালন নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ, পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণে ওই চার্জ বাড়ানো প্রয়োজন বলে জানিয়েছে। বিদ্যমান ট্যারিফ অনুযায়ী পিজিসিবি ২৩০ কেভি লেভেলের ভোল্টেজের জন্য প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা শূন্য দশমিক ২৮৫৭ টাকা, ১৩২ কেভির জন্য শূন্য দশমিক ২৮৮৬ টাকা ও ৩৩ কেভি লেভেলের জন্য শূন্য দশমিক ২৯৫৪ টাকা চার্জ পায়। এখন পিজিসিবি বিদ্যমান হুইলিং চার্জ বাড়িয়ে ২৩০ কেভির জন্য শূন্য দশমিক ৬৩১১ টাকা, ১৩২ কেভির জন্য শূন্য দশমিক ৬৩৭৫ টাকা ও ৩৩ কেভির জন্য শূন্য দশমিক ৬৫০৩ টাকা প্রস্তাব করেছে। আর নতুন বছরের ১ ফেব্রুয়ারি বিল মাসে পিজিসিবি নতুন সঞ্চালন চার্জ বিইআরসির কাছে বাস্তবায়ন চেয়েছে।
সূত্র জানায়, দেশের বিদ্যুৎ সঞ্চালনে রাষ্ট্রীয় সংস্থা হিসেবে পিজিসিবি এককভাবে কাজ করছে। সংস্থাটি সারা দেশে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোর সাব-স্টেশনে পৌঁছে দেয়ার কাজ করছে। একই সঙ্গে দেশের সঞ্চালন লাইন নির্মাণ ও ব্যবস্থাপনায়ও নিয়োজিত। সর্বশেষ বিগত ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে পিজিসিবির সঞ্চালন চার্জ পুনর্নিধারণ করা হয়েছিল। তারপর গত তিন বছর পিজিসিবির চার্জ বাড়ানো হয়নি। সঞ্চালন চার্জ বাড়াতে পিজিসিবির যৌক্তিকতা হলো সঞ্চালন চার্জ বাড়ানো হলে পিজিসিবির আর্থিক সক্ষমতা বাড়বে। তাতে সংস্থাটি সরকার ও দাতা সংস্থাগুলোর ঋণের সুদ ও কিস্তির হার যথাসময়ে পরিশোধ করবে।
সূত্র আরো জানায়, পিজিসিবি সঞ্চালন চার্জ বাড়াতে চাইলেও গত ৩ অর্থবছরে খুব বেশি কমাতে পারেনি সঞ্চালন লস। গত ৩ অর্থবছরে পিজিসিবি যে পরিমাণ বিদ্যুৎ আমদানি করেছে এবং যে পরিমাণ সরবরাহ করেছে সেখানে সঞ্চালন লসের চিত্র তুলে ধরেছে। বিইআরসিতে জমা দেয়া পিজিসিবির সঞ্চালন লসের চিত্র থেকে দেখা যায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে পিজিসিবির সঞ্চালন লস ছিল ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ, ২০২০-২১ অর্থবছরে তা বেড়ে হয় ৩ দশমিক শূন্য ৫ এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ২ দশমিক ৮৯ শতাংশ। অর্থাৎ গত ৩ অর্থবছরে পিজিসিবির সঞ্চালন লসে খুব বেশি তারতম্য হয়নি।
এদিকে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গত ২১ নভেম্বর পাইকারি বিদ্যুতের দাম ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বাড়ায়। ওই ঘোষণায় পাইকারি বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিট ৫ টাকা ১৭ থেকে বাড়িয়ে ৬ টাকা ২০ পয়সা করা হয়। আর ওই ঘোষণার এক সপ্তাহের মধ্যে বিতরণ কোম্পানিগুলো বিইআরসিতে খুচরা পর্যায়ে গড়ে ২০ শতাংশ মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব পাঠায়। কমিশনের ওই প্রস্তাবের ওপর চলতি জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে গণশুনানির কথা রয়েছে।
এদিকে জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের মতে, বিতরণ কোম্পানিগুলোর বিদ্যুতের দাম বাড়লে তা জনসাধারণের ওপর নতুন করে চাপ সৃষ্টি করবে। তারপর সঞ্চালন কোম্পানির আরোপিত নতুন চার্জ বিদ্যুতের দামে আরেক দফা চাপ সৃষ্টি করবে। বিশেষ করে সঞ্চালন চার্জ বাড়লে বিতরণ কোম্পানিগুলো ওই টাকা তুলতে গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গে তা যুক্ত করবে।
অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে বিইআরসি সদস্য (বিদ্যুৎ) বজলুর রহমান জানান, সঞ্চালন চার্জ বাড়াতে কমিশনে পিজিসিবি মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে। বিতরণ কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি পিজিসিবি প্রস্তাব জমা দিয়েছে। তাদের প্রস্তাবের বিষয়টি নিয়ে গণশুনানি হবে।