November 18, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, December 5th, 2022, 8:16 pm

দ্বিতীয় ম্যাচেই সিরিজ নিশ্চিত করা ‘জরুরি’ বাংলাদেশের

অনলাইন ডেস্ক :

প্রথম ওয়ানডের পর পেরিয়ে গেছে অনেকটা সময়। তবে বাংলাদেশ পেয়েছে এমন এক জয়, যেটির রেশ দ্রুতই শেষ হওয়ার নয়! স্মরণীয় জয়ের ঘোরে, অভাবনীয় প্রাপ্তির উচ্ছ্বাসে এখনও হয়তো বুঁদ অনেকে। কিন্তু পেশাদার জগতে লম্বা সময় উদযাপনে ডুবে থাকার সুযোগ কোথায়! সামনেই আরেকটি ম্যাচ, যেটি হয়ে উঠতে পারে সিরিজ নির্ধারণী। জয়ের উল্লাস কিংবা পরাজয়ের হতাশা, কোনোটিকেই খুব বেশি সময় সঙ্গী করার বাস্তবতা নেই। তৈরি হতে হবে নতুন চ্যালেঞ্জের জন্য। বাংলাদেশ যখন সেই চ্যালেঞ্জে তাকাবে সামনে, পেছনের অস্বস্তিও এখানে উঁকি দিতে পারে। প্রথম ম্যাচের জয়টা এমনভাবে এসেছে, তাতে আড়ালে পড়ে যাওয়ার শঙ্কা আছে অনেক কিছুই। মিডল অর্ডারের ব্যাটিং ব্যর্থতা আর ৮ রানে ৫ উইকেটের সেই ধস যেমন! পরের ম্যাচেও যদি হয় পুনরাবৃত্তি, তাহলে কমে যাবে সিরিজ জেতার সম্ভাবনা, বাড়বে ভারতের ঘুরে দাঁড়ানোর আশা। সাম্প্রতিক সময়ে যা বেশ কয়েক বার করে দেখিয়েছে সফরকারীরা। তাই ভুল শুধরে দ্বিতীয় ম্যাচেই সিরিজ নিজেদের করতে ঝাপিয়ে পড়ার বিকল্প নেই স্বাগতিকদের। মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মেহেদী হাসান মিরাজ, মুস্তাফিজুর রহমানদের বীরত্বে মনে রাখার মতো এক জয় পায় বাংলাদেশ। টপ ও মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় ১৩৬ রানে ৯ উইকেট পড়লেও অবিচ্ছিন্ন ৫১ রানের শেষ জুটিতে দলকে সিরিজে এগিয়ে দেন ওই দুজন। ওয়ানডে সংস্করণে এখন পর্যন্ত তিন ম্যাচের সিরিজ ২০টি জিতেছে বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে আর একটি ম্যাচ জিতলেই সংখ্যাটি বাড়বে আরেকধাপ। তিন ম্যাচের সিরিজ বাংলাদেশ হেরেছে ৩৮টি। তবে প্রথম ম্যাচ জেতার পর ব্যর্থতার হিসেব করলে পাওয়া যাবে ¯্রফে দুটি সিরিজ। অর্থাৎ, প্রথম ম্যাচ জয়ের পর বাংলাদেশের সিরিজ হেরেছে মোটে দুইবার। ঘরের মাঠে ২০০৮ সালের অক্টোবরে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৭ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। কিউইদের বিপক্ষে যে কোনো সংস্করণে সেটিই ছিল তাদের প্রথম জয়। কিন্তু পরের দুই ম্যাচে ৭৫ ও ৭৯ রানের পরাজয়ে আর জেতা হয়নি সিরিজ। পাঁচ বছর পর জিম্বাবুয়ে সফরে এ অভিজ্ঞতা হয় মুশফিকুর রহিমের দলের। বুলাওয়েতে ১২১ রানের বড় জয়ে উড়ন্ত সূচনা করে বাংলাদেশ। একই মাঠে পরের দুই ম্যাচ ৬ ও ৭ উইকেটে জিতে সিরিজ নিজেদের করে নেয় জিম্বাবুয়ে। এরপর প্রায় ৯ বছর ধরে প্রথম ম্যাচ জেতার পর প্রতিবারই সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে চলতি সিরিজে লিটন দাসদের জন্য যা হতে পারে প্রেরণার জ¦ালানি। তবে আরেকটি তথ্য হয়তো লিটনদের জন্য হতে পারে সতর্কতার বার্তা। ভারত যে বরাবরই ঘুরে দাঁড়াতে পটু! নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে তিন ম্যাচের সিরিজে এখনও পর্যন্ত ৮ বার প্রথম ম্যাচ হেরেও ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লিখেছে ভারত। এর মধ্যে গত চার বছরেই এমনটি দেখা গেছে ৪ দফায়। সবশেষটি নজিরটি একদমই টাটকা। গত মাসে ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ ৯ রানে হারে ভারত। পরের দুই ম্যাচ ৭ উইকেটে জিতে সিরিজের ট্রফি দেশেই রাখে তারা। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০২০ সালে দেশের মাঠে ও ২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটায় তারা। ২০১৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও প্রথম ম্যাচ হেরে সিরিজ জিতেছিল তারা। তাই ভারতের বিপক্ষে জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করা মানেই নির্ভার থাকার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ দল অবশ্য শুরুর জয়কেই কাজে লাগাতে চান। প্রথম ম্যাচে ৪ উইকেট শিকারি পেসার ইবাদত হোসেন সোমবার (৫ ডিসেম্বর) বিসিবির ভিডিও বার্তায় বললেন, আগের ম্যাচের আত্মবিশ্বাসকে সঙ্গী করে তারা এগিয়ে যেতে চান নতুন সাফল্যের পথে। “আমরা ১-০তে এগিয়ে আছি মানে এই নয় যে সিরিজ জিতে গেছি। আজ মঙ্গলবার আমাদের অনুশীলন রয়েছে।এরপর খেলব পরের ম্যাচ। সবাই মানসিকভাবে চাঙা আছে যে, আমরা এরকম একটা ম্যাচ জিততে পেরেছি ভারতের সাথে। পরের ম্যাচে আমরা সবাই মিলে ভালো খেলার চেষ্টা করব।” প্রথম ম্যাচের পরাজয়ে ভারতীয়রা ভড়কে যাচ্ছেন না বলেই দাবি রোহিত শর্মার। প্রথম ম্যাচের পর ভারতীয় অধিনায়ক বলেন, নিজেদের লড়িয়ে মানসিকতার ওপর আস্থা আছে তাদের। “আমি জানি না, কয়েকটি অনুশীলন সেশনে কতটা উন্নতি করা যাবে। তবে সবার মধ্যে (ঘুরে দাঁড়ানোর) প্রবৃত্তিটা রয়েছে। এখন শুধু চাপ সামাল দেওয়ার বিষয়। আমি নিশ্চিত ছেলেরা শিখবে এবং আমরা সামনের ম্যাচের দিকে তাকিয়ে। আশা করি আমরা পরিস্থিতি বদলে দিতে পারব। এই কন্ডিশনে ঠিক কী করতে হবে, তা আমাদের জানা আছে।” এমন নয় যে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-১ ব্যবধানে সমতা থেকে শেষ হাসেনি বাংলাদেশ। গত মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচ হারলেও সিরিজ ঠিকই জিতেছিল তামিম ইকবালের দল। ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঘরে-বাইরে দুই সিরিজ কিংবা ২০১৬ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষেও একইভাবে সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু ভারতের মতো প্রতিপক্ষ, যারা ঘুরে দাঁড়ানোর রসায়নটা খুব ভালো জানে, কঠিন চাপ সামলে খেলা যাদের নিত্যদিনের রুটিন, তাদের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচ হারের পর সিরিজ জেতার চ্যালেঞ্জটা হবে একটু বেশিই কঠিন। তাই শেষ ম্যাচ খেলতে চট্টগ্রাম যাওয়ার আগেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে চাইবেন লিটন দাস, সাকিব আল হাসানরা।