আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, প্যারাগুয়ে ও উরুগুয়ের সমন্বয়ে গঠিত দক্ষিণ আমেরিকার বৃহৎ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ব্লক মার্কোসুরের সঙ্গে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষরের আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার ব্রাজিলে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুন্নেসা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরী পোশাক উৎপাদক ও বিশ্বমানের ওষুধ প্রস্তুতকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অর্থনীতির শক্তিশালী দিকগুলো তুলে ধরেছেন। তিনি মার্কোসুরের সঙ্গে এফটিএ নিয়ে আলোচনার জন্য ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেইর মেসিয়াস বলসোনারোর সমর্থন চেয়ে বলসোনারোর কাছে তার স্বীকৃতি পত্র পেশ করেন।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী কার্লোস ফ্রাঙ্কাকে আন্তঃবাণিজ্যিক সম্পর্ক, বিশেষ করে কৃষি খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে বলে ব্রাজিলের বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে।
বলসোনারোবাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধিতে তার সমর্থনের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
ব্রাজিলকে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে উল্লেখ করে বলসোনারো বলেন, তার সরকার সব বন্ধুপ্রতিম দেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে আগ্রহী।
এসময় রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুন্নেসা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর উষ্ণ শুভেচ্ছা জানান। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তিনি ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত ও উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়ে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে তাকে অভিনন্দন জানান।
আলোচনার শুরুতে রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন অগ্রযাত্রা বর্ণনা করার পাশাপাশি ব্রাজিল-বাংলাদেশ দ্বি-পক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করেন।
বাংলাদেশ-ব্রাজিল দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তির কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত আরও বলেন যে বন্ধুপ্রতীম দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক দৃঢ়তর করার অনেক সুযোগ রয়েছে। দুই দেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার এবং কৃষি সহযোগিতা বৃদ্ধিতে তিনি ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের সহযোগিতা কামনা করেন।
এসময় বাংলাদেশে ব্রাজিল ফুটবল দলের বিপুল সমর্থনের কথা জেনে প্রেসিডেন্ট বলসোনারো মুগ্ধ হন।
আলোচনার শেষ পর্যায়ে রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা বাংলাদেশ-ব্রাজিল কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে দুই দেশের সম্পর্ক বহুমাত্রিকতায় উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাবার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। দুই দেশের সম্পর্ক পরবর্তী ধাপে নিয়ে যেতে সরকার প্রধান পর্যায়ের একটি দ্বিপক্ষীয় সফরের উপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।
পরিচয় পত্র পেশ এবং ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সৌজন্য বৈঠক শেষে প্রেসিডেন্ট কার্যালয় ত্যাগ করার সময় রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুন নেসাকে গার্ড অফ অনার দেয়া হয়।
প্রেসিডেন্ট কার্যালয় থেকে রাষ্ট্রদূত সরাসরি দূতাবাসে প্রত্যাবর্তন করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
—–ইউএনবি
আরও পড়ুন
এলডিসি গ্রাজুয়েশনে বাংলাদেশের সুষ্ঠু উত্তরণে পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস জাতিসংঘের
জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা নিয়ে ইউনূস-আইসিসির আলোচনা
দেশ সংস্কারে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই ও পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র