May 18, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, March 27th, 2023, 9:15 pm

নওগাঁয় র‌্যাব হেফাজতে মৃত সুলতানার সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন তলব হাইকোর্টের

নওগাঁর র‌্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিন (৪৫) নামে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় পোস্টমর্টেম রিপোর্ট তলব করেছেন হাইকোর্ট।

মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের করা সুরতহাল প্রতিবেদন ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ডাক্তারের করা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন তলব করেছেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে কারা ওই নারীকে আটক করেছিলেন এবং কাদের হেফাজতে থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে, তাদের নাম পদবিসহ তথ্য চেয়েছেন আদালত।

এছাড়াও তার মৃত্যুর ঘটনায় কোনো মামলা হয়েছে কি না সেটি জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

এদিকে সরকারের সংশ্লিষ্টদের মঙ্গলবারের মধ্যে এসব প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

সোমবার (২৭ মার্চ) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতকে জানান, এখন পর্যন্ত কোনো মামলা করা হয়নি। তারা (ভুক্তভোগীর পরিবার) কোনো মামলা করেনি।

তখন হাইকোর্ট বলেন, কেন তারা মামলা করবেন? রাষ্ট্রের কী দায়িত্ব নেই? দেশজুড়ে এ ইস্যুটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

একপর্যায়ে হাইকোর্ট রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে বলেন, আমরা ভুক্তভোগী নারীর পোস্টমর্টেম, ময়নাতদন্ত ও সুরতহাল রিপোর্ট দেখবো, সেটা আগামীকাল নিয়ে আসবেন। আর ওই নারীকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে কোন কোন কর্মকর্তা ছিলেন তাদের সবার নাম-পরিচয় আমাদের সামনে নিয়ে আসবেন।

আমরা দেখতে চাচ্ছি এ ঘটনার সঙ্গে আইনের কোনো গাফিলতি আছে কি না।

এসময় হাইকোর্ট আরও বলেন, জনগণ তাকিয়ে আছে ন্যায়বিচার দেখতে। আর আমরা আছি ন্যায়বিচার করতে। এরপর আদালত এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দিন ধার্য করেন। সুলতানা জেসমিন নওগাঁ সদর উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে অফিস সহকারী পদে চাকরি করতেন।

র‌্যাবের দাবি, প্রতারণার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার সুলতানা জেসমিনকে আটক করা হয়। আটকের পর অসুস্থ হয়ে তিনি মারা গেছেন। তবে স্বজনদের অভিযোগ, হেফাজতে নির্যাতনের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।

নিহত সুলতানার মামা এবং নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নাজমুল হক বলেন, তার ভাগনি বুধবার সকালে অফিসে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হন। ওইদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুক্তির মোড় থেকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে র‌্যাবের লোকজন তাকে ধরে নিয়ে যায়। তবে তাকে র‌্যাবের কোন ক্যাম্পে নেয়া হয়, সে ব্যাপারে তারা কিছুই জানতেন না। দুপুর ১২টার পর জানতে পারেন যে সুলতানা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেখানে গিয়ে তিনি র‌্যাবের লোকজন দেখেন। কিন্তু ভাগনি কোনো কথা বলতে পারছিলেন না। কিছুক্ষণ পর তাকে রামেক হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকালে তার মৃত্যু হয়। যদিও লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে শনিবার দুপুরের পর।

এ বিষয়ে র‌্যাব-৫ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর নাজমুস সাকিব বলেন, সুলতানার বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার একটি অভিযোগ পায় র‌্যাব। তার ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগ ছিল। ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখে র‌্যাব অভিযোগের সত্যতা পায়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মুক্তির মোড় এলাকা থেকে র‌্যাবের হেফাজতে নেয়া হয়। কিন্তু আটকের পরপরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেয়া হয়।

প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসকরা তাকে রাজশাহীতে নেয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু রাজশাহীতে নেয়ার পর তার অবস্থা আরও খারাপ হয়।

শুক্রবার রামেক হাসপাতালে স্ট্রোক করে তিনি মারা যান। আইনি প্রক্রিয়া শেষে শনিবার দুপুরে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।

—-ইউএনবি