অনলাইন ডেস্ক :
পুরো পশ্চিমা বিশ্ব ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে নতুন করে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। গঠন করেছেন নতুন মন্ত্রিসভা। গত শনিবার বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এবং সরকারের প্রতিনিধিদের নিয়ে এক জাকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই শপথ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানা গেছে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তৃতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার পর নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণা করেছেন রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। এতে স্বাস্থ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী ছাড়া এরদোয়ানের মন্ত্রিসভার প্রায় সব সদস্যকে পরিবর্তন করা হয়েছে।
সাবেক প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা মেহমেত সিমসেককে এরদোয়ানের নতুন মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গত শনিবার রাতে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৮ সদস্যের মন্ত্রিসভায় তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়েছেন সেভডেত ইলমাজ। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হাকান ফিদান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন আলী ইয়ারলিকায়া। অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন মেহমেত সিমসেক। প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন ইয়াসার গুলার, তিনি তুরস্কের চিফ অব জেনারেল স্টাফ জেনারেল। শিক্ষামন্ত্রী দায়িত্ব পেয়েছেন ইউসুফ তেকিন। আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন ইলমাজ তুনশি।
পরিবার ও সমাজসেবা মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন মাহিনুর ওজদেমি। যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন ওসমান আসকিন। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন ফাহরেত্তিন কোচা, তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া সিমসেক যখন ২০০৯ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে তুরস্কের অর্থমন্ত্রী ও উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তখন তিনি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। এখন তার মূল ভূমিকা হতে পারে, বছরের পর বছর ধরে চলা নীতি থেকে বের হয়ে এসে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি সত্ত্বেও সুদের হার কমিয়ে আনা ও বাজারের নিয়ন্ত্রণ রাষ্ট্রের হাতে নিয়ে আসা। বর্তমান নীতি অব্যাহত থাকলে, ক্ষয়প্রাপ্ত বৈদেশিক রিজার্ভ ও অপরিবর্তিত মুদ্রাস্ফীতির কারণে তুরস্কের অর্থনীতি আরও অস্থির হয়ে উঠবে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষকরা।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তুর্কি মুদ্রা লিরা ক্রমেই তার মান হারিয়েছে। আর এসব বিষয় সংস্কারে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন এরদোয়ান। চলতি বছরের এপ্রিলে তুরস্কে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ে ৪৪ শতাংশ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সুদের হার বাড়ানোয় বিরোধীরা এরদোয়ানের ব্যাপক সমালোচনা করেন। সমালোচনার জেরে জনগণের কাছেও কিছুটা জনপ্রিয়তা হারান এরদোয়ান। আর এ কারণেই এবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দ্বিতীয় ধাপে গড়ায়। এ জন্যই এরদোয়ানকে বিরোধী জোটের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কিলিকদারোগ্লুর বিপক্ষে জয় পেতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে।
এর আগে, গত ১৪ মে অনুষ্ঠিত প্রথম দফার ভোটে তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান এগিয়ে থাকলেও নির্বাচিত হতে ব্যর্থ হন। দেশটির নির্বাচনের নিয়ম অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট হতে হলে ৫০ শতাংশ সমর্থন পেতে হয়। প্রথম দফার নির্বাচনে এরদোয়ান পেয়েছিলেন ৪৯ দশমিক ৫২ শতাংশ ভোট। অন্যদিকে, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কিলিকদারোগ্লু পান ৪৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ। ফলে ওই দেশের নিয়ম অনুযায়ী দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। গত ২৮ মে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে ৫২ দশমিক ১২ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন এরদোয়ান। অন্যদিকে, কামাল পান ৪৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ ভোট।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু