জেলা প্রতিনিধি, নাটোর :
নাটোর শহরের আলাইপুরে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে দলের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। নাটোর সদর থানার ওসি মনসুর রহমান, দৈনিক যুগান্তর প্রতিনিধি শহীদুল হক, বিএনপির নেতা–কর্মীসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর দাবিতে জেলা বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিলে গতকাল সোমবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
শহিদুল হক সরকারের অবস্থা অবনতি হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
অপরদিকে এ ঘটরায় ওই দিন দুপুরের দিকে বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয় আলাইপুর থেকে জেলা যুবদলের সভাপতিসহ ৪জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলো, জেলা যুবদলের সভাপতি এ হাই তালুকদার ডালিম, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর বাসার দুই কেয়ারটেকার আসলাম উদ্দিন, আয়েন উদ্দিন এবং বড়াইগ্রাম উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শামসুল হক রনি।
পুলিশ, জেলা বিএনপি ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার (২২ নভেম্বর) সকাল ১০টায় সাবেক উপমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদারের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের নেতৃত্বে জেলা বিএনপির নেতা–কর্মীরা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করেন।
এক পর্যায়ে সকাল সোয়া ১০টার দিকে পুলিশ কর্মসূচি পালনে বাধা দিলে নেতা–কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে যান। প্রথমে নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাক্কা ধাক্কি হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করলে নেতা–কর্মীরা পিছিয়ে যান। পরে নেতা–কর্মীরা নির্মাণকাজের জন্য জড়ো করে রাখা ইট নিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ছুড়তে থাকেন।
পুলিশ ও বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পুলিশের লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের সেলে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদারের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
পুলিশের দাবি, বিএনপির নেতা–কর্মীদের ছোড়া ইটের আঘাতে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনসুর রহমানসহ অন্তত সাত জন পুলিশ আহত হয়েছেন। মাথায় আঘাত পাওয়া ওসি মনসুরকে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।এদিকে সংঘর্ষের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে দৈনিক যুগান্তরের নাটোর প্রতিনিধি শহিদুল হক সরকারসহ অন্তত চার সাংবাদিক আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে শহিদুলকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রহিম নেওয়াজ বলেন, পুলিশ সুপারকে জানিয়ে সোমবার সকালে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শুরু করা হয়। পুলিশের বাধায় নেতা–কর্মীরা কর্মসূচিস্থলে ঢুকতে পারছিলেন না। একপর্যায়ে তাঁরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে বসে পড়লে পুলিশ লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এতে তাঁদের নেত্রী সাবিনা ইয়াসমিনসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
জেলার পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, বিএনপির নেতা–কর্মীরা একতরফাভাবে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছেন। ওসিসহ ৫-৭ জন আহত হলে পুলিশ আত্মরক্ষার জন্য কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এ ব্যাপারে মামলা হবে। এখন এলাকার পরিস্থিতি বর্তমানে পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি