জেলা প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাছিরনগর উপর দিয়ে তিতাস, বলভদ্র ও লংঘন এ তিনটি নদী বহমান, এ উজেলা মূলত নদী ও হাওড় বেষ্টিত, আর মাত্র কয়েক দিন পরে কৃষকের স্বপ্ন সোনালী ফসল কেটে ঘরে তুলবে, এমনি সময় দেশের উত্তরাঞ্ছল সুনামগঞ্জ সহ বিভিন্ন হাওর এলাকায় বন্যার পানি গত ৩ দিনে অত্র নদী দিয়ে বিপদসীমার ২.৫ থেকে ৩ ফিট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে, অতিরিক্তপানি উপচে হাওড় এলাকা প্লাবিত হয়ে পাকা ও আধাপাকা জমি ডুবে ফসল নষ্ট হয়ে গেছে ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
কৃষকরা জানান, গত ১১ এপ্রিল শিলাবৃষ্টি ও বর্তমানে বন্যার পানি আমাদের সব ফসল নষ্ট কইরা দিসে, অহন আমরা কিতা করুম, আমারা পুলা মাইয়্যা লইয়া কিতা খামু, ডুবে যাওয়া ধান কাটতে বেশী টাকা লাগব এ ট্যাহা পাইমো কই।
এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে কথা বলে জানাযায়, উজানের নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির কারণে নদী ও বিল এলাকা সংলগ্ন জমিগুলো তলিয়ে গেছে, তাহারা বিভিন্ন সমস্যার কথা বললেও মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত কওে বলেন, নদী সঠিকভাবে খনন না করা, অপরিকল্পিত রাস্তাঘাট, বেড়িবাঁধ নির্মাণের কারণে নদীর গতিপথের বিঘœতা সৃষ্টি হয়ে ফসলি ভূমি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন এখানকার কৃষকরা, ফলে হাঁটু পানিতে নেমে আবার কোথাও ডুবে থাকা আধপাকা ধান কাটছেন কৃষকরা।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার আবু সাঈদ তারেক এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান গত ১১ এপ্রিল শেষ রাতে ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে এলাকার ১২০ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে, উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নে মোট এ ১৭৩০০ হেক্টর জমিতে ধান আবাদ হয়েছে, এরমধ্যে হাওড় এলাকায় ১১০৩০ হেক্টর ও নন হাওর এলাকায় ৬৩৮২ হেক্টর জমিতে ধান আবাদ হয়েছে, এরমধ্যে গোয়ালনগর, নাসিরনগর সদর, ভলাকুট, পূর্বভাগ, বড়ড়িশ্বর ও হরিপুর, এ ৬টি ইউনিয়নের হাওড়ে ১৫০ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে নিজ নিজ এলাকার সকল কৃষককে জানানো হচ্ছে যে ৮০ শতাংশ পাকাধান যেন তারা অতিসত্বর কেটে নেয় কারণ পানি আরো বাড়তে পারে, শ্রমিক সংকটে হলে তারা যেন কৃষি কর্মকর্তাদের অবহিত করে সে ক্ষেত্রে হারভেস্টার মেশিন দ্বারা ধান কর্তন করে ফসল বাড়িতে তুলতে পারে সে বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন সর্বদা তৎপর রয়েছে, উপজেলায় মোট ৩০ টি হারভেস্টার মেশিন রয়েছে, একটি হারভেস্টার মেশিন ১ ঘন্টায় তিন বিঘা জমির ধান কর্তন করতে পারে,
তিনি আরো জানান, ক্ষতিগ্রস্ত, ২০৫০ জন কৃষকের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে এবং তাদেরকে প্রণোদনা জন্য সরকারের তরফ হতে ব্যবস্থা করা হবে, পরবর্তী ধান আবাদের সময় ঐসকল কৃষকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সার ও বীজ দেওয়া হবে।
কৃষি উপ পরিচালক, এডিসি এবং বহু উর্দ্ধতন কর্মকর্তা হাওরের এই অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন।
শফিকুর রহমান শাহীন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ০১৭১৭-৪৯০৭৫৬
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি