April 27, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, January 19th, 2023, 6:27 pm

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আরডার্নের পদত্যাগের ঘোষণা

এপি, ওয়েলিংটন :

নিজের পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন।

তিনি বলেছেন, ‘তিনি অফিস ছাড়ছেন। দেশটির সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বন্দুক হামলায় হত্যাকাণ্ড ও করোনাভাইরাস মহামারির প্রাথমিক পর্যায় পরিচালনার জন্য বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হয়েছেন।’

বৃহস্পতিবার দেশটির উপকূলবর্তী শহর নেপিয়ারে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ৭ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার শেষ কার্যদিবস।

আরডার্নে নিজ দেশে এমন কিছু রাজনৈতিক চাপ এবং এমন কিছু ব্যক্তির কাছ থেকে তিক্ত সমালোচনার মুখোমুখি হচ্ছিলেন। তার আগে দেশটির কোনো নেতা এগুলোর সম্মখীন হননি। তবুও,তার এই ঘোষণা ৫০ লাখ মানুষের দেশটিতে বড় ধরনের ধাক্কা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

আরডার্ন বলেন,‘অফিসে আমি ষষ্ঠ বছরে পা দিয়েছি এবং এই বছরগুলোতে আমি আমার সব কিছু দিয়েছি।’

তুলনামূলক কম বয়সে ২০১৭ সালে যখন ৩৭ বছর বয়সী আরডার্ন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জয়লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি বিশ্বজুড়ে নারীদের মাঝে অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে ওঠেন।

ব্যক্তিজীবনে অন্যান্য রাজনীতিবিদদের মতো তিনি বিবাহিত ছিলেন না। খণ্ডকালীন ডিজে হিসেবে কিছু মিউজিক রেকর্ড করেছেন তিনি। সবকিছু মিলিয়েই তিনি এক নতুন প্রজন্মের নেতৃত্বের সূচনা করেছিলেন।

অনেকেই মনে করেন যে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিরোধী ছিলেন।

২০১৮ সালে অফিসে থাকা অবস্থায় তিনি সন্তান জন্ম দেন। ওই বছরের শেষের দিকে তিনি তার শিশু কন্যাকে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে নিয়ে আসেন।

২০১৯ সালের মার্চে নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে সবচেয়ে অন্ধকার দিনের সম্মুখীন হন আরডার্ন। সেদিন এক শ্বেতাঙ্গ বন্দুকধারী ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে হামলা চালিয়ে ৫১ জনকে হত্যা করে। এ ঘটনায় যারা বেঁচে গিয়েছিলেন এবং দেশটির মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি যেভাবে সহানুভূতি দেখিয়েছেন তা বিশ্বজুড়ে বেশ প্রসংসিত হয়েছে।

৯ মাসেরও কম সময় পরে তাকে আরেকটি ট্র্যাজেডির মুখোমুখি হতে হয়। সেবার হোয়াইট আইল্যান্ড আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের সময় ২২ জন পর্যটক ও গাইড নিহত হন।

আরডার্ন তার দেশে করোনভাইরাস মহামারির প্রাথমিক পর্যায় পরিচালনার জন্যও বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছিলেন।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছন, আরডার্ন বিশ্বকে দেখিয়েছেন কীভাবে মেধা ও শক্তি দিয়ে নেতৃত্ব দিতে হয়।

আলবানিজ টুইট করে জানান, তিনি দেখিয়েছেন যে সহানুভূতি ও অন্তর্দৃষ্টি শক্তিশালী নেতৃত্বের গুণাবলী।

তিনি আরও বলেন, জেসিন্ডা অনেকের অনুপ্রেরণা এবং আমার একজন ভালো বন্ধু।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো টুইটারে আরডার্নকে তার বন্ধুত্ব, সহানুভূতিশীল, শক্তিশালী ও অবিচল নেতৃত্বের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার আরডার্ন ঘোষণা করেন যে নিউজিল্যান্ডের ২০২৩ সালের সাধারণ নির্বাচন ১৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে এবং ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি একজন আইনপ্রণেতা থাকবেন।

নির্বাচনের আগ পর্যন্ত কে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেবেন তা স্পষ্ট নয়।

উপপ্রধানমন্ত্রী গ্রান্ট রবার্টসন ঘোষণা করেছেন যে তিনি লেবার পার্টির নেতৃত্বের লড়াইয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না।

লেবার পার্টির আইনপ্রণেতারা রবিবার নতুন নেতার জন্য ভোট দেবেন। যদি কোনো প্রার্থীই ককাস থেকে অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন না পায়, তাহলে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা চলে যাবে বৃহত্তর দলের সদস্যপদে।

আরডার্ন সুপারিশ করেছেন যে তিনি ৭ ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব শেষ করার সময় পার্টি তার স্থলাভিষিক্ত বেছে নেবে।