April 26, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Saturday, November 20th, 2021, 8:42 pm

নিখোঁজ ৩ বোনকে উদ্ধার: খালার আচরণে বিরক্ত, থাকতে চায় বাবার কাছেই

রাজধানীর আদাবর থেকে নিখোঁজ হওয়া তিন বোনকে উদ্ধার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ছবিটি শনিবার তোলা।

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজধানীর আদাবর থেকে নিখোঁজ হওয়া তিন বোনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। বর্তমানে তারা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। তবে এই তিন বোন তাদের খালা নয় বাবার কাছেই থাকতে চায়। শনিবার (২০ নভে্ম্বর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য দেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসই) বিপ্লব কুমার সরকার। তিনি বলেন, উদ্ধার তিন বোনকে আদালতে নেওয়া হবে। আদালতে তারা তাদের বক্তব্য তুলে ধরবে। এর মধ্যে আবার রোববার দুই বোনের এসএসসি পরীক্ষা। তারা পরীক্ষায় অংশ নিতে চায়। আদালত এ বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করবো। বর্তমানে তাদের সব ধরনের নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, অসুস্থ বাবার কাছে তারা গিয়েছিল। খালা নয় বাবার কাছেই থাকতে চায় তারা। এই তিন বোন বলেছেন, মা মারা যাওয়ার পর দুই খালার কাছে তারা যে ব্যবহার আশা করেছিল সেটি পায়নি। তাই যশোরে অসুস্থ বাবার কাছে চলে গিয়েছিল। বড় বোন একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী রোকেয়া (১৮), মেজো বোন জয়নব আরা (১৭) ও ছোট বোন খাদিজা আরা (১৬)। এর মধ্যে জয়নব ও খাদিজা এবার একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে ডিসি বলেন, তিন বোন জানিয়েছে, ২০১২ সালে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর তারা মায়ের সঙ্গে থাকতো। পরে তাদের মা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তখন থেকে তারা দুই খালার কাছে থাকে। কিন্তু বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারতো না। দুই খালার কাছে তিন বোন থাকলেও বিভিন্ন সময়ে খালাদের নেতিবাচক কর্মকা-ের কারণে তাদের মধ্যে ক্ষোভ হয়। সেই ক্ষোভের কারণে তারা বাবার কাছে চলে যায়। দীর্ঘ ৮-৯ বছর পর ওই তিন বোন তাদের বাবার সঙ্গে দেখা করতে পেরেছে। ১৮ নভেম্বর আদাবরের শেখেরটেকে খালার বাসা থেকে কাউকে না বলে তারা যশোরে বাবার কাছে চলে গিয়েছিল। বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, তাদের বাবা একজন স্কুলশিক্ষক। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ, বর্তমানে তিনি শয্যাশায়ী। তবে মাঝেমধ্যে দাদির মোবাইলে তিন বোনের কথা হতো। আর বাবার কাছে যশোরে আসার জন্য দাদি তাদের বিকাশের মাধ্যমে দুই হাজার টাকা পাঠায়। পরবর্তীতে ১৮ নভেম্বর সকালে তারা যশোরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। বাসা থেকে বের হয়ে তারা গাবতলীতে জননী পরিবহনের একটি বাসে করে যশোর চলে যায়। সেখান থেকে হামিদপুরে বাবার কাছে যায় তারা। এদিকে ওই তিন বোন নিখোঁজ হওয়ার পর আদাবর থানায় তাদের খালা সাজিদা নওরীন একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তখন তাদের খালা অভিযোগ করেছিলেন তিন বোন টিকটকে আসক্ত। কিন্তু পুলিশ সেই অভিযোগের সত্যতা পায়নি। এ বিষয়ে ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, আমরা তাদের কাছে কোনো মোবাইল পাইনি। আর তার খালার গণমাধ্যমে বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা এখন পর্যন্ত পাওয় যায়নি। তিন বোনের অনেকটাই ক্ষোভ রয়েছে তাদের খালাদের ওপর। খালাদের কাছে তারা আশানুরূপ ব্যবহার পায়নি। তিন বোনকে শনাক্ত কিংবা উদ্ধার নিয়ে পুলিশ এবং র‌্যাবের বক্তব্যের বিষয়ে বলেন, কোনো একটি ঘটনা ঘটলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিটি সংস্থাই ছায়া তদন্ত করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিটি বিভাগই ভ্রাতৃপ্রতিম। আমাদের মধ্যে কোনো বিতর্ক সৃষ্টির কারণ নেই। আমরা যশোর থেকে তিন বোনকে উদ্ধার করে ঢাকায় এনেছি। এর আগে খালার বাসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ওই তিন বোন এসএসসি পরীক্ষার এডমিট কার্ড রেজিস্ট্রেশন কার্ড, সার্টিফিকেট এবং ব্যাগ সঙ্গে নিয়ে যায়। তাদের মধ্যে এক বোন আদাবরে সাজিদা নওরীনের বাসায় থাকতো। আর অন্য দুই বোন থাকতো খিলগাঁওয়ে অন্য এক খালার বাসায়।