র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং এর সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর ‘নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার’ করার আহ্বান জানিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে. ব্লিংকেনকে চিঠি লিখেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ কে আব্দুল মোমেন।
রবিবার ওয়াশিংটনের এক কূটনৈতিক সূত্র ইউএনবিকে জানিয়েছে।
সূত্র জানায়,আব্দুল মোমেন তার চিঠিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেনকে বড়দিন ও ২০২২ সালের ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এর পাশাপাশি গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা ও মানবাধিকার, সংখ্যালঘু ও শ্রম অধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান জানিয়ে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি পর্যালোচনার আহ্বান জানিয়েছেন।
চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আত্মবিশ্বাসী যে বন্ধুপ্রতিম দুই দেশের মধ্যে হওয়া আন্তরিক সংলাপ পারস্পরিক সম্মান ও সুবিধার ভিত্তিতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ নিশ্চিত যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি বিশ্বস্ত এবং অবদানকারী অংশীদার হিসেবে আমাদের জ্ঞান-ভিত্তিক, প্রযুক্তি-সচেতন ও উন্নত জাতি হিসেবে উদীয়মান হওয়ার পথে এগিয়ে যাবে।
মোমেন বলেন, বছরের পর বছর ধরে র্যাব সরকারের সবচেয়ে দক্ষ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হিসেবে সন্ত্রাস, মাদক পাচার, মানব পাচার এবং অন্যান্য আন্তদেশীয় অপরাধ দমনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। অপরাধ দমনে র্যাবের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নাগরিকদের মধ্যে অনেক বেশি আস্থা তৈরি করেছে।
মোমেন আরও জানিয়েছেন, র্যাব ও এর কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, নারীর প্রতি সহিংসতা, মাদক পাচার ও দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করার প্রচেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশ সরকার তার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অব্যাহত রাখবে।
ড.মোমেন মনে করেন, আমরা আমাদের জাতীয় ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মনে করি এমন বিষয়গুলো মোকাবিলায় র্যাবের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা আমাদের উপকৃত করবে।
এছাড়াও চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানাতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর করা ফোনকলের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং বলেন এই ধরনের খোলামেলা ও উন্মুক্ত আলোচনা সবসময় চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে সুসংহত করতে সহায়তা করে।
এসময় ড. মোমেন আবারও বলেন, র্যাবের ওপর দেয়া নিষেধাজ্ঞা অপ্রত্যাশিত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য এই ঘোষণাটি ‘আকস্মিক’ ও ‘বিস্ময়কর’,কারণ এমন সময়ে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে; যখন দুই দেশই পারস্পারিক সম্পর্কের পাঁচ দশক উদযাপন করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,বাংলাদেশ সরকার সবসময় র্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া মাত্র তার আইনানুগ বিচার করেছেন। এর জন্য কোনোভাবেই পুরো সংগঠনটির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দেয়া যেতে পারে না।
ড.মোমেন তার চিঠিতে আরও জানিয়েছেন, বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত কিছু এনজিও তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য আমাদের দেশের সরকার ও আরও বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে মিথ্যা, মনগড়া ও বিকৃত তথ্য প্রচার করে। যাতে করে বাংলাদেশের বন্ধু ও অংশীদারেরা বিভ্রান্ত হয়।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২