ইউএনবি)- ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে বিলুপ্তপ্রায় একটি নীলগাই ধরে জবাই করে ফেলেছে গ্রামবাসী। মাংস খাওয়ার জন্য তারা নীলগাইটি ধাওয়া করে ধরে জবাই করে।
এ নিয়ে জেলায় ছয়টি নীলগাই উদ্ধার হলেও একটিও বেঁচে নেই।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার ধর্মগর ইউনিয়নের উত্তর মণ্ডলপাড়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে এলাকার ফসলের খেতে ছোটাছুটি করছিল অপরিচিত একটি প্রাণী। গ্রামের কয়েকজনের নজরে এলে তারা প্রাণীটিকে ধাওয়া করে ধরে ফেলেন। খবর ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক গ্রামবাসী সেখানে ভিড় জমান। একসময় গ্রামবাসী প্রাণীটিকে জবাই করে মাংস খাওয়ার পরিকল্পনা করেন। তারা প্রাণীটির গলায় ছুরিও চালাতে শুরু করেন। সে সময় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
ধর্মগড় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উত্তর মণ্ডলপাড়া এলাকায় বুধবার সন্ধ্যায় ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে একটি বিলুপ্ত প্রজাতির নীলগাই প্রবেশ করে। এলাকাবাসী ১২ মে দুপুরে সেটিকে আটক করে। নীলগাইটি অসুস্থ হয়ে পড়লে এলাকাবাসী সেটি জবাই করে দেয়। তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করেছেন বলেও তিনি জানান।
প্রতক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, উত্তর মণ্ডলপাড়া গ্রামের কিছু লোক খেত থেকে ভুট্টা তোলার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এসময় তারা হঠাৎ একটি নীলগাই দেখতে পান। তারা সেসময় তাড়া করে নীলগাইটিকে ধরেন তারা। একপর্যায়ে নীলগাইটি অসুস্থ হয়ে গেলে স্থানীয়রা মাংস খাওয়ার জন্য নীলগাইটিকে জবাই করে ফেলেন। নীলগাইটি ভারত থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে এসেছে।
রানীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির স্টিভ বলেন, বিলুপ্ত হওয়া নীলগাই জবাই করা ঠিক হয়নি। তবে গ্রামের মানুষের বক্তব্য গাইটি খুব অসুস্থ ছিল। তাই তারা এটিকে জবাই করেছে। খবর পেয়ে বন বিভাগের লোককে সেখানে পাঠানো হয়েছে। তারা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান ইউএনও।
বন বিভাগ ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস জানান, ঘটনাস্থলে আমাদের পরিদর্শন দল পাঠানো হয়েছে। উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের পরামর্শ মতে ও তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, নীলগাই বিরল প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় একটি বন্য প্রাণী। গাই হিসেবে পরিচিত হলেও নীলগাইটি কখনোই গরু শ্রেণির নয়; বরং এটি এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ হরিণবিশেষ প্রাণী। যার বৈজ্ঞানিক নাম বোসেলাফুস ট্যাগোক্যামেলাস। শত বছর আগে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় নীলগাই দেখা যেত। দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়ের মাঠে-ঘাটে একসময় নীলগাইয়ের দেখা মিলত। এখন দেখা যায় না।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি