অনলাইন ডেস্ক :
দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধচলাকালীন আত্মরক্ষার জন্য অ্যানা ফ্রাঙ্ক ও তার পরিবার আশ্রয় নেয় একটি গোপন কুঠুরি সিক্রেট অ্যানেক্সে, যেখানে তারা ৭৬১ দিন অতিবাহিত করার পর ধরা পড়ে হিটলারের গেস্টাপো বাহিনীর হাতে। সিক্রেট অ্যানেক্সের বন্দি জীবনের রুদ্ধশ্বাস দিনগুলোতে অ্যানা ফ্রাঙ্ক তার ডায়েরিতে ফুটিয়ে তোলে যুদ্ধের বারুদ মাখা ধূসরতা, তার মানসিক বেদনার রঙ, ব্যক্তিগত স্বপ্ন ও সম্ভাবনার রংধনু। অ্যানা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি অবলম্বনে রচিত ম্যাড থেটারের ৩য় প্রযোজনা ‘অ্যানা ফ্রাঙ্ক’ এর উদ্ভোধনী মঞ্চায়ন হয় গেলো ২২ অক্টোবর বাংলাদেশ মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে। নাটকটির প্লেরাইট আসাদুল ইসলাম ও ডিরেকশনে ছিলেন কাজী আনিসুল হক বরুণ। উৎসবের উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মি. এ্যানা ভেন লিউয়েন, অ্যাম্বাসেডর, নেদারল্যান্ডস অ্যাম্বাসি ইন বাংলাদেশ। আরো ছিলেন বিশিষ্ট নাট্যজন নাসির উদ্দীন ইউসুফ, সারা যাকের, আফজাল হোসেন ও ম্যাড থেটারের প্রধান উপদেষ্টা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ও বহুমাত্রিক নাট্য ব্যক্তিত্ব ড. ইসরাফিল শাহীন। মি. এ্যানা ভেন লিউয়েন, অ্যাম্বাসেডর, নেদারল্যান্ডস অ্যাম্বাসি ইন বাংলাদেশ তার টুইটে নাটকের কিছু ছবি পোস্ট করেছেন এবং লিখেছেন, কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি ম্যাড থেটারকে যাদের প্রযোজিত নাটক ‘অ্যানা ফ্রাঙ্ক’। একজন জ্ঞানী ও বুদ্ধিমতী মেয়ের বয়ঃসন্ধিকালের সার্বজনীন গল্প এটি। বিয়োগান্ত এই নাটকটি স্মরণ করিয়ে দেয়, বর্ণবাদ এবং ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা কোথায় নিয়ে যেতে পারে আমাদের। নাটকটিতে আর্য মেঘদূতের অভিনয় এক কথায় ফেনোমেনাল। অ্যানা ফ্রাঙ্ক নাটকটি প্রসঙ্গে ম্যাড থেটারের প্রধান উপদেষ্টা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ও বহুমাত্রিক নাট্য ব্যক্তিত্ব ড. ইসরাফিল শাহীন বলেন, বিশ্বব্যাপি সাম্প্রদায়িক সংঘাত, যুদ্ধ, অগণিত শরণার্থীদের দুর্বিষহ কষ্টগুলো যেন অ্যানা ফ্রাঙ্ক নাটকে আর্য মেঘদূতের অভিনয়ের মাধ্যমে উঠে এসেছে বিক্ষুব্ধ এ সময়ে। আমার মনে হয় একজন অ্যানা ফ্রাঙ্কের বেদনা বুঝতে পারলেই সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষকে না বলতে পারবে সবাই। যুদ্ধ বা কোনো সাম্প্রদায়িক সংঘাত যে কখনোই সমাধান হতে পারে না, এটা এ নাটকে বলা হয়েছে। স্কুল ও কলেজে নাটকটি প্রদর্শিত হলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসাম্প্রদায়িক চেতনা গড়ে উঠবে। নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সেই বীরত্বের কথা, বিপন্ন অগণন মানুষের আত্মত্যাগের কথাও আমরা স্মরণ করে দিব দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধচলাকালীন সময়ের ঘটে যাওয়া অ্যানা ফ্রাঙ্কে কষ্টের আর্তিগুলোর মাধ্যমে। ২৩ অক্টোবর নাটকটির দ্বিতীয় ও শেষ রজনীতে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও গবেষক মফিদুল হক। নাটকটির আলোক পরিকল্পনায় নাসিরুল হক খোকন, মঞ্চ পরিকল্পনায় অনন্তি হোসেন, পোশাক পরিকল্পনায় সোনিয়া হাসান ও সংগীত পরিকল্পনায় ছিলেন খুরশীদ হোসেন।
আরও পড়ুন
ইউটিউব থেকে সরানো হলো শাকিবের ‘তুফান’
চিন্তিত অনন্যা পান্ডে
কনাকে নিয়ে সুখবর দিলেন আসিফ