অনলাইন ডেস্ক :
পানির স্তর থেকে উচ্চতা কম হওয়ায় নৌচলাচলে বিঘœ ঘটে, একারণে ভেঙে ফেলতে হচ্ছে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বছিলা সেতু। বুধবার (২৮ জুলাই) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম সরকারের এমন চিন্তার-ভাবনার কথা জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেকে প্রায় ২ হাজার ৫৭৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয় সংবলিত ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে দুই হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আয়রন ব্রিজ পুনর্নির্মাণ/পুনর্বাসন’ সংশোধন প্রকল্পও রয়েছে। আগের এক হাজার ৮৩৫ কোটি ৭০ লাখ টাকার প্রকল্প বাড়িয়ে দুই হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা করা হয়েছে। এই প্রকল্প নিয়ে আলোচনাকালে প্রধানমন্ত্রী ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণে উচ্চতা ঠিক রাখার নির্দেশনা দেন। পরে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনের প্রসঙ্গটি তুলে ধরেন। এ বিষয় আলোচনাকালে প্রতিমন্ত্রী বছিলা ব্রিজের (শহীদ বুদ্ধিজীবী সেতু) প্রসঙ্গটিও টানেন। এ সস্পর্কে তিনি বলেন, বছিলা ব্রিজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এখানে বর্ষাকালে কার্গোগুলো আসতে পারে না। ২০০৯ সালে এটা উদ্বোধন হয়েছে। কিন্তু এখন এটাকে উঁচু করার জন্য নতুন করে ভাঙার চিন্তা করা হচ্ছে। কিন্তু এটা তো জাতীয় অপচয়। প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে খুবই সচেতন। বছিলা ব্রিজ কত টাকায় নির্মাণ করা হয়েছিল এবং এটা নিয়ে আপনাদের পরিকল্পন কী, এমন প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, বছিলা ব্রিজ হচ্ছে একটি বিশেষ কেস। এটা নিয়ে এই মুহূর্তে কিছু বলতে চাই না। এটা জানতে হলে পরে যোগাযোগ করলে বিস্তারিত জানানো হবে। ২০০৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটি উদ্বোধন করেন। বছিলা এলাকাটি রাজধানীর সঙ্গে কেরাণীগঞ্জের সংযোগ স্থাপন করেছে। জানা গেছে, ৮৪ কোটি ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটির দৈর্ঘ ৭০৮ মিটার ও প্রস্থ ১০ মিটার। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্ষাকালে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে বছিলা ব্রিজের নিচ দিয়ে বড় নৌযানগুলো চলতে পারে না। পরিমাণ অনুযায়ী, পানি থেকে ব্রিজের উচ্চতা ১২ মিটারের বেশি থাকার কথা থাকলেও ওই সময় তা থাকে না। ফলে এ পথে চলাচলকারী নৌযানগুলো আটকে যায়। গত বছর তামজিদ-১ নামে একটি কার্গো ব্রিজটির নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এদিকে দক্ষিণাঞ্চলের ব্রিজ প্রকল্প বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনের কথা তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বরিশালে ৮০৫টি লোহার ব্রিজ ভেঙে নতুন ব্রিজ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে আমাদের আগেও বলেছেন যে, আমরা ব্রিজ কালভার্ট করতে গিয়ে নৌপথগুলোকে অচল করে ফেলেছি। এজন্য উনি বলেছেন, সেতু-ব্রিজ নির্মাণ করার সময় এগুলো ভালো করে দেখতে হবে। পণ্য ও যাত্রীবাহী নৌযান যেন চলাচল করতে পারে। দরকার হলে অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে এগুলো করবেন। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ৮০৫টি ব্রিজ সব যে ভাঙা হবে তা নয়। অনেকগুলো ইতোমধ্যে ভেঙে গেছে। অনেকগুলো খুবই নড়বড়ে, আঙুল দিলেই ভেঙে পড়বে। বাকিগুলো হয়তো এক/দুই বছর বাঁচবে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার সাথে সাথে আমরা এগুলো পরিবর্তন করছি।
আরও পড়ুন
এলডিসি গ্রাজুয়েশনে বাংলাদেশের সুষ্ঠু উত্তরণে পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস জাতিসংঘের
জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা নিয়ে ইউনূস-আইসিসির আলোচনা
দেশ সংস্কারে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই ও পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র