November 17, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, March 31st, 2023, 8:36 pm

ন্যাটোয় ফিনল্যান্ড, মেনে নিলো তুরস্ক

অনলাইন ডেস্ক :

নেটো জোটে ফিনল্যান্ডকে যুক্ত করে নেওয়ার প্রক্রিয়ায় তুরস্কের পার্লামেন্ট অনুমোদন দেওয়ায় নর্ডিক দেশটির যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটটির ৩১তম সদস্য হওয়ার পথ খুলে গেছে। রাশিয়ার সঙ্গে দীর্ঘ সীমান্ত থাকা ফিনল্যান্ড ‘সন্ত্রাসীদের’ মদত দিচ্ছে এই অভিযোগে আঙ্কারা দীর্ঘদিন হেলসিঙ্কির আবেদন ঝুলিয়ে রেখেছিল। অবশেষে বৃহস্পতিবার তুরস্কের পার্লামেন্ট ফিনল্যান্ডের নেটোভুক্তিতে সমর্থন দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। গত বছরের মে মাসে প্রতিবেশী সুইডেনও ফিনল্যান্ডের সঙ্গেই নেটোতে যুক্ত হওয়ার আবেদন করেছিল। কিন্তু ‘সন্ত্রাসীদের’ মদত দেওয়ার একই অভিযোগে আঙ্কারা এখনও সুইডেনের আবেদন ঝুলিয়ে রেখেছে। নেটোতে নতুন কাউকে ঢোকাতে হলে জোটভুক্ত সব দেশের সমর্থন লাগে। তুরস্কের আগে নেটোর বাকি ২৯ সদস্য দেশ ফিনল্যান্ডের নেটোভুক্তিতে অনুমোদন দিয়েছিল। তুরস্কের সমর্থনও মিলে যাওয়ায় এখন জুলাইয়ে লিথুয়ানিয়ায় হতে যাওয়া পরবর্তী সম্মেলনেই ফিনল্যান্ডকে আনুষ্ঠানিকভাবে নেটোতে যুক্ত করে নেওয়া হবে। তুরস্কের পার্লামেন্টে তাদের আবেদন নিয়ে ভোটের পর ফিনল্যান্ড সরকার বলেছে, নেটো জোটে যোগ দিলে দেশের নিরাপত্তা যেমন জোরদার হবে, তেমনি আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতারও উন্নতি ঘটবে।“মিত্র হিসেবে, আমরা সুরক্ষা দেবো ও নেবো। আমরা সবাই একে অপরকে সুরক্ষা দেবো। ফিনল্যান্ড বর্তমানে যেমন সুইডেনের পাশে আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে এবং এর নেটোভুক্তির আবেদনে সমর্থন দেবে,” টুইটারে লিখেছেন ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সানা মারিন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান এ মাসের শুরুর দিকে ফিনল্যান্ডের নেটোভুক্তির ব্যাপারে ‘সবুজ সংকেত’ দিয়েছিলেন; তুরস্কের নিরাপত্তার ব্যাপারে হেলসিঙ্কির নেওয়া ‘খাঁটি ও সুদৃঢ় পদক্ষেপের’ প্রশংসাও করেছিলেন তিনি। কিন্তু সুইডেনের ব্যাপারে তার আপত্তি এখনও প্রবল। দেশটি কুর্দি ‘জঙ্গিদের’ আশ্রয় দিয়ে তাদেরকে স্টকহোমের রাস্তায় কর্মসূচি পালনের সুযোগ করে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ তুরস্কের প্রেসিডেন্টের। রাশিয়ার সঙ্গে ১৩৪০ কিলোমিটারের দীর্ঘ সীমান্ত আছে ফিনল্যান্ডের; কামানের সংখ্যা বিবেচনায় এটি পশ্চিম ইউরোপের অন্যতম সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্রভা-ারের অধিকারী। রাশিয়া ইউক্রেইনে অভিযান চালানোর পর ফিনল্যান্ড তাদের ‘নিরপেক্ষতা’ নীতিতে বদল এনে পশ্চিমাদের সঙ্গে জোট বাঁধার সিদ্ধান্ত নেয়। ইউক্রেইনে মস্কোর অভিযান সুইডেনকেও ‘নিরপেক্ষতার’ বেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করে, প্রতিবেশী ফিনল্যান্ডের মতো তারাও নেটোতে যুক্ত হওয়ার আবেদন জানায়। তবে ফিনল্যান্ডের মতো তাদের সঙ্গে রাশিয়ার কোনো সীমান্ত নেই। নেটোর অন্যতম প্রতিষ্ঠাকালীন নীতি হচ্ছে, সম্মিলিত প্রতিরক্ষা নীতি। এর অর্থ হচ্ছে, জোটের কোনো দেশের ওপর হামলা, জোটের সব দেশের ওপর হামলা বলেই বিবেচিত হবে। ফিনল্যান্ডের এই নেটোভুক্তিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের জন্য বড় কৌশলগত পরাজয় হিসেবেই দেখা হচ্ছে। নেটোতে থাকলে রুশ হামলার সম্ভাবনা কম, এই ধারণা থেকেই ফিনল্যান্ড জোটভুক্ত হওয়ার পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে অনুমান বিবিসির। নর্ডিক এই দেশটির জনগণ নেটোতে যাওয়ার ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহী ছিল না। কিন্তু রাশিয়া ইউক্রেইনে হামলা চালানোর পর রাতারাতি ওই পরিস্থিতি বদলে যায়; নেটোতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পক্ষে জনসমর্থন এক তৃতীয়াংশ থেকে বেড়ে একলাফে প্রায় ৮০ শতাংশে পৌঁছে যায় বলে সেসময় দেশটির নাগরিকদের মধ্যে হওয়া বেশ কয়েকটি জনমত জরিপে দেখা যায়।