অনলাইন ডেস্ক :
ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে নড়াইলে মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজ অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় শিক্ষার্থী মো. রহমতউল্লাহর ছাত্রত্ব বাতিল করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
এ ছাড়া ঘটনার সময় ‘নেতিবাচক ভূমিকা পালনের জন্য’ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আখতার হোসেন এবং `নির্লিপ্ততার কারণে’ কলেজের গভর্নিং বডিকে শোকজ করা হয়েছে, খবর বিডি নিউজ ২৪ ডটকমের।
ঘটনার ১৯ দিন পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ‘কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ’ করা হয়েছে। বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২৯তম সিন্ডিকেট সভায় এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
উপাচার্য মো. মশিউর রহমান দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় প্রাথমিক সম্পৃক্ততার কারণে এই শস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
“পরবর্তীতে এ বিষয়ে আরও কোনো সম্পৃক্ততা পেলে তখন বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, গত ১৭ জুন সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের এক ছাত্র ভারতের বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার বিতর্কিত বক্তব্য নিয়ে ফেইসবুকে পোস্ট দেওয়ার পরদিন কলেজে গেলে কিছু মুসলমান ছাত্র তাকে ওই পোস্ট মুছে ফেলতে বলেন।
এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিলে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস পুলিশে খবর দেন। এরই মধ্যে ‘অধ্যক্ষ ওই ছাত্রের পক্ষ নিয়েছেন’ এমন কথা রটানো হলে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। অধ্যক্ষ ও দুজন শিক্ষকের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে তাদেরও সংঘর্ষ বাধে।
সে সময় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে কলেজের ছাত্র ও স্থানীয়রা স্বপন কুমারের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয়। তখন পুলিশ ওই ছাত্রের সঙ্গে অধ্যক্ষকেও থানায় নিয়ে যায়।
দেশের অধিকাংশ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন। বিশ্ববিদ্যালয় তার অধীনস্ত যে কোনো কলেজ ও প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
মো. রহমতউল্লাহ নামে যে শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে তিনি খুলনার ব্রজলাল (বিএল) কলেজের ছাত্র। মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজ ও বিএল কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “অধ্যক্ষ লাঞ্ছনার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে খুলনা সরকারি ব্রজলাল (বিএল) কলেজের শিক্ষার্থী মো. রহমাতুল্লাহর ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়েছে। তিনি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের চতুর্থ বর্ষের সম্মান শ্রেণির ছাত্র।”
“এ ছাড়া উক্ত ঘটনা সংঘটিত হওয়ার সময় নেতিবাচক ভূমিকা পালনের জন্য মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আখতার হোসেনের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না- সেই মর্মে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক