পদ্মা সেতুর প্রভাব পড়েছে দেশের বিমান সেক্টরে। সেতু উদ্বোধনের পাঁচদিনের মধ্যে যশোরে উড়োজাহাজে যাত্রী কমেছে ৫০ ভাগ। বিশেষ করে খুলনা ও সাতক্ষীরার যাত্রীরা এখন বিমানবন্দরমুখী হচ্ছে না। তারা সরাসরি পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহনে অল্প সময়েই ঢাকায় পাড়ি জমাচ্ছেন। এ কারণে প্রায় অর্ধেক সিট খালি রেখেই যশোর থেকে তিনটি এয়ারলাইন্সের বিমান ঢাকার উদ্দেশে উড়াল দিচ্ছে।
দেশে ২০২০ সালে করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়ে বিমান সেক্টরে। জরুরি প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া মানুষ তখন জেলার বাইরে যাতায়াত করতেন না। এক পর্যায়ে সরকার দেশের অভ্যন্তরিণ রুটে যাত্রীবাহী বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে ২০২১ সালের শেষ নাগাদ করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে প্রাণ ফিরে আসে বিমান সেক্টরে।
বর্তমানে যশোর বিমানবন্দর থেকে ১৪টি বিমান যাত্রী নিয়ে ঢাকায় যাতায়াত করে। এরমধ্যে বাংলাদেশ বিমানের দুটি ফ্লাইট রয়েছে। এছাড়া বেসরকারি সংস্থা ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের সাতটি ও নভোএয়ার এয়ারলাইন্সের পাঁচটি ফ্লাইট চলাচল করছে। কিন্তু পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর ব্যাপকহারে বিমানের যাত্রী কমতে শুরু করেছে।
গত ২৫ জুন সেতু উদ্বোধনের মাত্র পাঁচদিনের মাথায় যশোর-ঢাকা রুটে বিমানের যাত্রী কমেছে ৫০ ভাগ বলে সূত্রটি জানিয়েছে। কমে যাওয়া যাত্রীদের বেশিরভাগই খুলনা ও সাতক্ষীরার। আরও যাত্রী কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ দুটি জেলার বিমান যাত্রীরা পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহনে দ্রুততম সময়ে ঢাকায় চলে যাচ্ছেন। এ কারণে তিনটি এয়ারলাইন্সের ১৪টি ফ্লাইটে ধারণ ক্ষমতার প্রায় অর্ধেক যাত্রী নিয়ে যশোর-ঢাকা রুটে চলাচল করছে। এতে তাদের ব্যাপক লোকসান হচ্ছে। এ লোকসান এড়াতে বেসরকারি এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ নানা চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন।
এদিকে যাত্রী ধরে রাখতে বাংলাদেশ বিমান ও ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স ঈদুল আজহা উপলক্ষে নতুন অফার দিয়েছে। শুক্রবার (১ জুলাই) থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত শুধুমাত্র যশোর থেকে ঢাকা যাত্রী প্রতি নতুন ভাড়া নির্ধারণ করেছে তিন হাজার টাকা। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এ রুটে সকল বিমানে গড় ভাড়া ছিল সাড়ে চার হাজার টাকা। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় তারা আগামীতে ভাড়া কমিয়ে আনার চিন্তা করছে বলেও সূত্রটি জানিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের যশোর স্টেশন ইনচার্জ সাব্বির হোসেন টুটুল বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর বিমানে তাদের যাত্রী কমেছে। খুলনা ও সাতক্ষীরা মিলিয়ে যশোরের সব এয়ারলাইন্সে গড়ে ৫০ ভাগ যাত্রী ইতোমধ্যে কমে গেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি আরও জানান, একটি এয়ারলাইন্স বৃহস্পতিবার থেকে তাদের দুটি ফ্লাইট কমিয়ে দিয়েছে। যদিও বিষয়টি তারা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেয়নি।
তিনি বলেন, ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স খুলনায় তাদের যাত্রী ধরে রাখতে চলতি সপ্তাহে নতুন তিনটি অত্যাধুনিক বাস যুক্ত করেছে। শুধুমাত্র খুলনার যাত্রীদের জন্য তাদের এয়ারলাইন্সে ছয়টি বাস চলাচল করে ও সাতক্ষীরায় একটি মাইক্রোবাস যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করে। যশোর থেকে বিমানের ঢাকা রুট আগের মত যাত্রী সরগরম নেই।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি