November 16, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, June 20th, 2022, 9:12 pm

পদ্মা সেতু: যানবাহনের চাপ সামলাতে প্রস্তুত খুলনার সড়কগুলো

পদ্মা সেতু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার কয়েক কোটি মানুষের দীর্ঘদিনের একটি লালিত স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে আগামী ২৫ জুন। সেতু চালু হলেই দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যানবাহনের চাপ ব্যাপক বেড়ে যাবে। বি‌শেষ ক‌রে পদ্মা সেতু থে‌কে গোপালগঞ্জ হ‌য়ে বা‌গেরহা‌টের কাটাখা‌লি, খুলনা-মোংলা, খুলনা-য‌শোর ও খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়‌কের ওপর চাপ পড়‌বে বেশি।

যানবাহনের এই অতিরিক্ত চাপ সামলাতে খুলনাঞ্চলে সড়ক-মহাসড়কগুলো কতটুকু প্রস্তুত এমন প্রশ্নের জবাবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনিসুজ্জামান মাসুদ বলেন, সঙ্গত কারণেই পদ্মা সেতু চালু হলে দক্ষিণবঙ্গে পরিবহনের অতিরিক্ত চাপ বেড়ে যাবে। বিষয়টি মাথায় রেখেই আমরা খুলনাঞ্চলে যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নে গত ২ বছর ধরে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করছি এবং সেই আলোকে প্রকল্প তৈরি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে সেগুলো বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, ময়লাপোতা তেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। খুলনার ফেরিঘাট থেকে আফিল গেট পর্যন্ত সড়ক ৪ অথবা ৬ লেনে উন্নীতকরণ করা হবে। প্রকল্পটির ফিজিবিলিটি এবং ডিজাইনের কাজ চলমান রয়েছে। একইভাবে খুলনা-যশোর রোডের রাজঘাট থেকে আফিলগেট হয়ে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ৪ লেন বিশিষ্ট সড়ক তৈরি করা হবে।

সওজ এর এই কর্মকর্তা জানান, খুলনা জেলখানা খেয়াঘাটে ব্রিজ বা ট্যানেল নির্মাণের ফিজিবিলিটি স্টাডি চলমান রয়েছে। একই সঙ্গে এই প্রকল্পের আওতায় খুলনা রেলস্টেশন পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা হাইওয়ের গোপালগঞ্জের চন্দ্রদিঘলিয়া পয়েন্ট পর্যন্ত ৪ লেন সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রস্তাবিত ৪ লেন বিশিষ্ট এ সড়কটি নির্মিত হলে ঢাকা থেকে খুলনার দূরত্ব আনুমানিক আরও ৩৫ কিলোমিটার কমে যাবে। ঢাকা থেকে খুলনায় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টায় যাওয়া যাবে।

এছাড়া তেরখাদা উপজেলা খুলনা জেলা শহরের সাথে যুক্ত হবে। তেরখাদা এলাকার পরিত্যক্ত জলাবদ্ধ বিলে শিল্পায়নের ফলে ব্যাপক কর্মসংস্থান হবে। খুলনা থেকে গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, চট্টগ্রাম ও বরিশালের দূরত্ব ৩৫ কিলোমিটার কমে যাবে। এতে সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটন শিল্প বিকশিত হবে। ঢাকা থেকে খুলনার আকাশপথের চেয়ে সড়কপথে যোগাযোগ সহজ ও দ্রুততর হবে।

তিনি আরও জানান, দৌলতদিয়া-ফরিদপুর (গোয়ালচামট)-মাগুরা-ঝিনাইদহ-যশোর-খুলনা-মংলা-(দ্বিগরাজ) সড়কের আফিলগেট থেকে পাওয়ার হাউজ পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার সড়ক ৬ লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। খুলনা শহর বাইপাস এবং গল্লামারি-বটিয়াঘাটা-দাকোপ নলিয়ান ফরেস্ট সড়কের সাচিবুনিয়া নামক স্থানে ইন্টারসেকশন নির্মাণ করা হবে। গল্লামারি-বটিয়াঘাটা-দাকোপ-নলিয়ান ফরেস্ট সড়কের ফেরিঘাটে চুনকুড়ি সেতু এবং একইভাবে গল্লামারি-বটিয়াঘাটা-দাকোপ-নলিয়ান ফরেস্ট সড়কের পানখালী ফেরিঘাটে ঝমঝপিয়া সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সেতু দুটি নির্মিত হলে এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ পদ্মা সেতুর সুফল ভোগ করতে পারবে।

পদ্মা সেতু চালু হলে এ অঞ্চলে পরিবহনের বাড়তি চাপের কথা মাথায় রেখে ইতোমধ্যে খুলনা জোনের আওতাধীন মহাসড়কে পাঁচটি কংক্রিট সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান সওজ’র এই প্রকৌশলী।

—-ইউএনবি