অনলাইন ডেস্ক :
দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে পাকিস্তানকে বাংলাওয়াশ করলো বাংলাদেশ। রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের পঞ্চম দিনে সফরকারী বাংলাদেশ ৬ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তানকে। প্রথম টেস্ট ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে জিতেছিলো টাইগাররা। ফলে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ। এই প্রথমবারের মত পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের ইতিহাস গড়লো নাজমুল হোসেন শান্তর দল। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে নবম টেস্ট সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ। এর মধ্যে তৃতীয়বারের মত বিদেশের মাটিতে সিরিজ জয় টাইগারদের।
এর আগে ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০ এবং ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের মাটিতে এক ম্যাচের সিরিজ ১-০ ব্যবধানে জিতেছিলো টাইগাররা। দুই বা ততোধিক ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ের পর পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশ। ১৮৫ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে বিনা উইকেটে ৪২ রান করেছিলো বাংলাদেশ।
দুই ওপেনার জাকির হাসান ৩১ ও সাদমান ইসলাম ৯ রানে অপরাজিত ছিলেন। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) পঞ্চম দিনের ষষ্ঠ ওভারে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। পাকিস্তানের পেসার মির হামজার বলে বোল্ড হন জাকির। ৩৯ বল খেলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন তিনি। দলীয় ৫৮ রানে জাকির ফেরার পর হামজার বলে ব্যক্তিগত ১৭ রানে স্লিপে সালমান আঘাকে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান সাদমান। জীবন পেয়ে বেশি দূর যেতে পারেননি তিনি। আরেক পেসার খুররম শাহজাদের বলে মিড অনে অধিনায়ক শান মাসুদকে ক্যাচ দেন ২টি চারে ২৪ রান করা সাদমান।
৭০ রানের মধ্যে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর জুটি গড়ার চেষ্টায় সফল হন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও মোমিনুল হক। এরপর ৫২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে প্রথম সেশনের খেলা শেষ করেন তারা। ২ উইকেটে ১২২ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। এ সময় জয় থেকে ৬৩ রান দূরে ছিলো টাইগাররা। দ্বিতীয় সেশন শুরুর পর সাজঘরে ফিরেন শান্ত। স্পিনার সালমানের লেগ স্টাম্পের বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দেন ৫টি চারে ৩৮ রান করা টাইগার অধিনায়ক।
মোমিনুল-শান্ত ৫৭ রানের জুটি গড়েন। দলীয় ১২৭ রানে শান্ত ফেরার পর মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন মোমিনুল। দলের রান দেড়শ পার করে বাংলাদেশকে জয়ের পথে রাখেন তারা। এরপরই বিচ্ছিন্ন হন মোমিনুল ও মুশফিক। স্পিনার আবরার আহমেদের বলে মিড অন দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সাইম আইয়ুবকে ক্যাচ দেন মোমিনুল। ৪টি চারে ৩৪ রান করেন তিনি। মোমিনুল ফেরার সময় জয়ের জন্য ৩২ রান দরকার ছিলো বাংলাদেশের। মুশফিককে নিয়ে দেখেশুনে খেলে অবিচ্ছিন্ন ৩২ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান সাকিব। আবরারের করা ইনিংসের ৫৬তম ওভারের শেষ বলে এক্সট্রা কাভার দিয়ে চার মেরে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন সাকিব। এক বাউন্ডারিতে মুশফিক ২২ এবং ১টি করে বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারিতে ২১ রানে অপরাজিত থাকেন সাকিব। হামজা-শাহজাদ-আবরার ও সালমান ১টি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
পাকিস্তান প্রথম ইনিংস : ২৭৪/১০, ৮৫.১ ওভার (আইয়ুব ৫৮, মাসুদ ৫৭, সালমান ৫৪, মিরাজ ৫/৬১, তাসকিন ৩/৫৭)।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ২৬২/১০, ৭৮.৪ ওভার (লিটন ১৩৮, মিরাজ ৭৮, শাহজাদ ৬/৯০)।
পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংস : ১৭২/১০, ৪৬.৪ ওভার (সালমান ৪৭*, রিজওয়ান ৪৩, হাসান ৫/৪৩, রানা ৪/৪৪)।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস : ১৮৫/৪, ৫৬ ওভার (জাকির ৪০, শান্ত ৩৮, মোমিনুল ৩৪, মুশফিক ২২*, সাকিব ২১ *, সালমান ১/১৪)।
ফল : বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী
সিরিজ : দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জয়ী বাংলাদেশ
ম্যাচ সেরা : লিটন দাস (বাংলাদেশ)
সিরিজ সেরা : মেহেদি হাসান মিরাজ (বাংলাদেশ)
আরও পড়ুন
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু
নেপালে ভয়াবহ বন্যা, ভূমিধসে মৃত্যু বেড়ে ১৯২