September 25, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, June 21st, 2023, 8:49 pm

পাকিস্তানি ধনকুবের দাউদ নিখোঁজ ডুবোযানে

অনলাইন ডেস্ক :

যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড নিশ্চিত করেছে, একটি কানাডিয়ান পি-৩ বিমান ‘পানির নিচে শব্দ’ শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। যে এলাকায় নিখোঁজ ডুবোযানটির সন্ধান চলছে সেখান থেকেই এই শব্দ শোনা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম অভ্যন্তরীণ মার্কিন সরকারের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, পানির নিচে কিছুতে আঘাতের মতো ‘টুং টাং’ শব্দ শোনা যাচ্ছে। তবে সিএনএনের তথ্য অনুযায়ী, কখন এবং কতক্ষণ এই শব্দ স্থায়ী হয়েছিল তা স্পষ্ট নয়। কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ডের উপকূলে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে তিন হাজার ৮০০ মিটার নিচে যাওয়ার পর গত রোববার পাঁচজন যাত্রীসহ ডুবোযানটি নিখোঁজ হয়। ডুবোযানে এখন ৩০ ঘণ্টারও কম অক্সিজেন বাকি আছে বলে ধারণা করছে কর্তৃপক্ষ। সাগরে ডুব দেওয়ার পর প্রায় ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে ছোট এই ডুবোযানটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এদিকে তৃতীয় দিনের উদ্ধার অভিযান রাতভর অব্যাহত রাখা হয়েছে।

কারা রয়েছেন এই ডুবোযানে?
পাকিস্তানের অন্যতম ধনী ব্যক্তি এবং তার কিশোর ছেলে নিখোঁজ ডুবোযানের পাঁচজনের মধ্যে রয়েছেন। শাহজাদা দাউদ (৪৮) যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রিন্স ট্রাস্ট দাতব্য সংস্থার বোর্ড মেম্বার এবং তার ছেলে সুলাইমান দাউদ (১৯) ছোট্ট ওই আন্ডারওয়াটার ক্রাফটের আরোহী ছিলেন। ব্রিটিশ বিলিয়নেয়ার হামিস হার্ডিং, বিশ্ববিখ্যাত ফরাসি পর্যটক পল-হেনরি নারজিওলট এবং ডুবোযানটির মালিক প্রতিষ্ঠান ওশানগেট-এর প্রধান নির্বাহী (সিইও) স্টকটন র‌্যাশ এই যানের পঞ্চম আরোহী ছিলেন। তারা সমুদ্রের গভীর অন্ধকারে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। সাড়ে ১২ হাজার ফুট পানির নিচে সেই ঐতিহাসিক ধ্বংসাবশেষ দেখার জন্য গিয়েছিলেন তারা। শাহজাদার স্ত্রী ক্রিস্টিনা দাউদ এবং মেয়ে আলিনাসহ অন্যরা এখন তাদের সর্বশেষ অবস্থা জানতে যন্ত্রণাদায়ক অপেক্ষা সহ্য করছেন।

এই বিবৃতিতে এমনটি জানিয়েছে দাউদ পরিবার। দাউদ পরিবার পাকিস্তানের সবচেয়ে ধনী পরিবারের মধ্যে একটি এবং যুক্তরাজ্যের সঙ্গে এই পরিবারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। আটলান্টিক সাগরে ডুবে যাওয়া টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গত রোববার এই পর্যটকবাহী ডুবোযান সমুদ্রের তলদেশে নিখোঁজ হয়। এটিকে খুঁজে পাওয়ার জন্য ব্যাপক তল্লাশি চালানো হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড জানায়, ডুবোযানটি সাগরের তলদেশে যাওয়ার এক ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পর এটির সঙ্গে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ট্যুরিস্ট ফার্ম ওশেনগেট জানিয়েছে, ডুবোযানটিতে পাঁচজন পর্যটক রয়েছে। তাদের উদ্ধারে সমস্ত পদ্ধতি কাজে লাগানো হচ্ছে।

১২ হাজার ৫০০ ফুট সমুদ্রের তলদেশে যাওয়ার জন্য একজন পর্যটককে খরচ করতে হয়েছে দুই লাখ ৫০ হাজার ডলার। আট দিন দীর্ঘ এ ট্রিপের আয়োজন করা হয়। ওশেনগেট জানিয়েছে, ডুবোযানটিতে যে অক্সিজেন রয়েছে তা দিয়ে চার দিন চলা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ডের একজন কর্মকর্তা সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, নিখোঁজ ডুবোযানটি ৭০ ঘণ্টা কিংবা ৯৬ ঘণ্টা অতিক্রম হলে কোথাও না কোথাও পাওয়া যাবে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডুবোযানটি নিখোঁজ হওয়ার ৭০ ঘণ্টা পার হয়েছে। এর মধ্যে সব অক্সিজেন শেষে হয়ে গেছে। ফলে ডুবোযানটিতে থাকা পর্যটকদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে গেছে। ১৯১২ সালে তৎকালীন বিশ্বের বৃহত্তম যাত্রীবাহী এই জাহাজ সাউদাম্পটন থেকে নিউ ইয়র্কের উদ্দেশে প্রথম সমুদ্রযাত্রায় বিশাল বরফখ-ের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ডুবে যায়। জাহাজটিতে দুই হাজার ২০০ জন যাত্রী ও ক্রু ছিলেন। ভয়াবহ দুর্ঘটনায় তাদের মধ্যে এক হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মারা যান। ১৯৮৫ সালে ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পাওয়ার পর থেকে টাইটানিক নিয়ে ব্যাপক গবেষণা চলছে। প্রায়ই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটক বিখ্যাত এই জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে আটলান্টিকের তলদেশে ভ্রমণে যান।