April 20, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, April 10th, 2022, 1:31 pm

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত

অনলাইন ডেস্ক :

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন।
দেশটিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছিল। এ প্রেক্ষাপটে শনিবার রাতে দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে তাঁর বিরুদ্ধে আনা বিরোধী দলের অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হয়।
ভোটাভুটিতে ইমরানের বিরুদ্ধে ভোট পড়েছে ১৭৪টি। ৩৪২ আসনের জাতীয় পরিষদে প্রস্তাবটি পাসের জন্য দরকার ছিল ১৭২ ভোট।
পাকিস্তানে এ পর্যন্ত কোন প্রধানমন্ত্রীই তার পুরো মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে পারেননি। তবে এভাবে অনাস্থার মাধ্যমে ইমরান খানই প্রথম তার প্রধানমন্ত্রিত্ব হারালেন। তিনি ছিলেন পাকিস্তানের ২২তম প্রধানমন্ত্রী।
সোমবার নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেয়া হতে পারে। পাকিস্তান মুসলিম লীগ-এন(পিমএমএল-এন) এর প্রধান শাহবাজ শরিফই পরমাণু শক্তিধর পাকিস্তানের নেতৃত্বে আসছেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।
রোববার সকালে বিরোধী সমর্থকদের রাস্তায় গাড়ির জানালা দিয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা নাড়তে দেখা গেছে। রাজধানীতে ব্যাপক নিরাপত্তা সদস্যদের উপস্থিতি রয়েছে। তবে তেমন কোন অপ্রীতিকর ঘটার খবর পাওয়া যায়নি।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ইমরান খানের ভাগ্যনির্ধারণী এ অধিবেশন শুরু হয় শনিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায়। তবে অধিবেশন শুরুর কিছুক্ষণ পর দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। এভাবে তিন দফা মুলতবি শেষে ইফতারের পর আবার অধিবেশন শুরু হয়। তখন জানানো হয়, রাত সাড়ে ৯টায় আবার অধিবেশন বসবে।
বিরোধী দলের আইনপ্রণেতারা শুরু থেকেই অভিযোগ করেন, ইচ্ছা করেই অধিবেশন বিলম্বিত করা হচ্ছে। এ জন্য পাল্টা কৌশল ঠিক করতে বিরোধীদলীয় নেতা পাকিস্তান মুসলিম লিগের (নওয়াজ) সভাপতি শাহবাজ শরিফের চেম্বারে বৈঠক করেন দলীয় সদস্যরা। স্পিকার আসাদ কায়সারের চেম্বারে গিয়ে তাঁর সঙ্গেও তাঁরা দেখা করেন। এ সময় তাঁরা স্পিকারকে তাঁর সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার অনুরোধ জানান।
আর্থিক দুরবস্থা ও ভুল পররাষ্ট্রনীতির অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী দলগুলো। এ অনাস্থা প্রস্তাবকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে ৩ এপ্রিল খারিজ করে দেন জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। ওই দিনই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এতে চরম রাজনৈতিক সংকটে পড়ে পাকিস্তান।
এ অবস্থায় স্বতঃপ্রণোদিত নোটিশ দেন সুপ্রিম কোর্ট। বিরোধীরাও আদালতের শরণাপন্ন হন। টানা পাঁচ দিনের শুনানি শেষে গত বৃহস্পতিবার অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ ও জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক ঘোষণা করেন সর্বোচ্চ আদালত। একই সঙ্গে শনিবার অনাস্থা প্রস্তাবের সুরাহার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ।
এদিকে ইমরান খান অভিযোগ করেছেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। আর এ ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র জড়িত।
অন্যদিকে দেশটির চলমান ঘটনাপ্রবাহ থেকে সেনাবাহিনী দৃশ্যত দূরে রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতার পর দেশটিতে চার বার সেনা অভ্যুত্থান ঘটে এবং তিন দশকেরও বেশি সময় পাকিস্তান সেনা শাসনের অধীনে ছিল।