November 22, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, June 21st, 2021, 2:29 pm

পাচার হওয়া নদীই এখন আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের সমন্বয়ক

নিজস্ব প্রতিবেদক :

পাচার হওয়া নদীই পরবর্তীতে হয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের বাংলাদেশ অঞ্চলের সমন্বয়ক। ভারত, মালয়েশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই পর্যন্ত তার জাল বিস্তৃত। পাচার করার পর মেয়েদের তদারকি করতে প্রায়ই বিদেশ ভ্রমণ করেন তিনি। বহুভাষায় পারদর্শী এই নারীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে ভারতে গ্রেপ্তার টিকটক হৃদয় বাবুসহ মানবপাচার চক্রের সদস্যদের। সঙ্গী-সাথীদের নিয়ে অনেক সময় পানশালায় পার্টিতে মশগুল এই নারী। এক ডজন নামধারী এই নারীকে গ্রেপ্তারে চলছে বিশেষ অভিযান।

মানবপাচারকারী পরিচয় আড়াল করতে নিজেকে নৃত্যশিল্পী হিসেবে গড়ে তুলতে চেষ্টার কমতি নেই তার। দেশ-বিদেশে তথাকথিত নৃত্য পরিবেশনও করেন তিনি। ভিডিও প্ল্যাটফর্ম টিকটকেও রয়েছে তার সরব উপস্থিতি।

২০১৫ সালে পাচার হয়ে মালয়েশিয়ায় যান নদী। চড়াই-উৎরাইয়ের একপর্যায়ে আন্তর্জাতিক পাচার চক্রের সঙ্গে হাত মেলান তিনি। আটাশ বছরের এই নারীর জালে আটকা পড়ে ভারত, মালয়েশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে পাচার হয়েছে বহু শহুরে দরিদ্র কিশোরী ও তরুণী। তারপর তাদেরকে যৌনকর্মে বাধ্য করে কাড়ি কাড়ি টাকা কামাচ্ছে পাচারকারীরা।

পাচার হওয়া মেয়েদের দেখভালে প্রায়ই বিদেশে যাতায়াত করেন নদী। দ্রুত পারদর্শী হয়ে ওঠেন আরবি, হিন্দি, তেলেগু ও মালয় ভাষায়। বহু ভাষায় দখল থাকায় দ্রুতই চক্রে শক্তিশালী ভিত গড়ে ওঠে নদীর। দায়িত্ব পান আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের বাংলাদেশ সমন্বয়কের।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (তেজগাঁও বিভাগ) উপকমিশনার মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ‘নদী নামে যে মেয়েটির কথা আমরা জেনেছি সে ভারত, মালয়েশিয়া এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে মানব পাচারে সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করে। সে একাধারে বাংলা, মালয়, হিন্দি এবং আরবি ভাষায় কথা বলতে পারে।’

সম্প্রতি ভারতে বাংলাদেশি এক তরুণীকে যৌন নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস হলে তদন্তে নামে দুই দেশের পুলিশ। প্রতিবেশী দেশটিতে গ্রেপ্তার হয়েছে ১১ বাংলাদেশি ও এক ভারতীয়। এরমধ্যে দশজনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ভারতে গ্রেপ্তারকৃতদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে নদীর।

মুন্সিগঞ্জে নদীর এক ডজন নাম পাওয়া গেছে। ভারতে ভুয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে বাগিয়েছেন আঁধার কার্ড। পুলিশ জানিয়েছে, বর্তমানে দেশে আত্মগোপনে রয়েছেন এই নারী। তাকে ধরতে সীমান্তের জেলাসহ বিভিন্ন স্থানে চলছে অভিযান। উপকমিশনার মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা এই মেয়েটিকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করছি। আশাকরি তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হলে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাব তার কাছ থেকে।’

বাংলাদেশে গ্রেপ্তার হয়েছে ১৩ মানবপাচারকারী। এরমধ্যে ৮ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এই চক্রের অন্যান্যের ধরতেও চলছে অভিযান।