November 18, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, October 31st, 2021, 7:47 pm

পার্থ গোপাল বণিকের জামিন বাতিলের আদেশ আপিল বিভাগে বহাল

রাজধানীর নর্থ রোডের ফ্ল্যাট থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধারের মামলায় বরখাস্ত কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি-প্রিজনস) পার্থ গোপাল বণিকের জামিন বাতিল করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা পার্থ গোপালের আবেদন রবিবার (৩১ অক্টোবর) খারিজ করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ।

আদালতে পার্থ গোপালের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

পরে খুরশীদ আলম খান জানান, আপিল বিভাগ পার্থ গোপাল বণিকের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। অর্থাৎ হাইকোর্ট জামিন বাতিল করে যে রায় দিয়েছিলেন সে রায় বহাল রয়েছে।

গত ১৭ জুন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেনের ভার্চুয়াল আদালত পার্থ গোপাল বণিকের জামিন মঞ্জুর করেছিলেন। এরপর তিনি কারামুক্ত হন।

পরে এ বিষয়ে সংবাদ প্রচার করে চ্যানেল ২৪। ওই জামিনের বিরুদ্ধে পরে উচ্চ আদালতে আপিল করে দুদক। গত ২৮ জুন পার্থ গোপাল বণিকের জামিন বাতিল চেয়ে দুদকের করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট।

পরে ২ সেপ্টেম্বর শুনানি শেষে রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে দুদকের আপিল মঞ্জুর করে পার্থ গোপাল বণিকের জামিন বাতিল করে দেন আদালত। একই সাথে ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ থেকে মামলাটি বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এ পাঠিয়েছেন। আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে বলেছেন। এছাড়া মামলার প্রত্যেক রায় ও আদেশ উন্মুক্ত আদালতে দিতে বলেছেন। আর ভবিষ্যতের জন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেনকে সতর্ক করেন।

পরে ১৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন পার্থ গোপাল বণিক। আদালতে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এরপর পার্থ গোপাল বণিক হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন। যেটি রোববার খারিজ হয়ে যায়।

২০২০ সালের ২৪ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন ডিআইজি প্রিজনস পার্থের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

গত বছরের ৪ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এরপর ১৫ ডিসেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, পার্থ গোপালের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ৮০ লাখ টাকার কোনো বৈধ উৎস তিনি দেখাতে পারেননি। অর্থাৎ তিনি সরকারি দায়িত্ব পালনকালে ৮০ লাখ টাকা বিভিন্ন অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে উপার্জন করে অর্থপাচারের উদ্দেশে নিজ বাসায় লুকিয়ে রেখেছেন মর্মে প্রমাণিত হয়।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, ২০১৪ সালে তিনি ৩১ হাজার ২৫০ টাকা বেতন স্কেলে কারা উপ-মহাপরিদর্শক পদে পদোন্নতি লাভ করেন। তার এ বেতন স্কেলের সঙ্গে এত টাকা উপার্জন অসামঞ্জস্যপূর্ণ। তিনি তার কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে তা উত্তোলন করেননি বা তিনি কখনও এ অর্থ আয়কর বিবরণীতেও প্রদর্শন করেননি। যা দণ্ডবিধির ১৬১ ধারা, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

২০১৯ সালের ২৮ জুলাই বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পার্থ গোপাল বণিকের বাসায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৮০ লাখ টাকা জব্দ করা হয় এবং তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসা হয়।

পরে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ দুদকের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধান দলের নেতা মো. সালাউদ্দিন বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

পরে ২০১৯ সালের ৩০ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে পার্থ গোপাল বণিককে গ্রেপ্তারের দিন থেকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।

—ইউএনবি