সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে এক পাসপোর্ট গ্রহীতাকে হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগে সিলেট মহানগর জজ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (২১ নভেম্বর) তাঁর বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেন সিলেটের মোগলাবাজার থানাধীন গোটাটিকর পাঠানপাড়া এলাকার বাসিন্দা সাহারা খানম (৫৩)।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য মোগলাবাজার থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, নগরীর গোটাটিকর পাঠানপাড়া এলাকার বাসিন্দা বায়োবৃদ্ধ সাহারা খানম পবিত্র হজ্ব পালন করতে সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য নতুন পাসপোর্ট তৈরির উদ্দেশ্যে নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংক চালানের টকা জমা দিয়ে গত ১০ নভেম্বর সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে ফাইল জমা দেন। নিয়ম অনুযায়ী ফাইল জমা দিলেও অফিসের কর্তব্যরতরা ফাইলে বিশেষ চিহ্ন ‘মার্কা’ না থাকায় তা অনলাইনে নিবন্ধন করেননি বলে জানান। এজন্য পাসপোর্টের জন্য ফিঙ্গার না নিয়ে বারবার তাকে হয়রানি করতে থাকলে তিনি গত ১৪ নভেম্বর সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের অফিসে গিয়ে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারকে বিষয়টি অবগত করে পাসপোর্ট পেতে তার সহযোগিতা চান। পরে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে তিনি সুপারিশ করেছেন জানানোর জন্য বললে যথারীতি সাহারা খানম তা জানান।
তারপরই তার উপর ক্ষেপে যান পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তারা। তারা অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারের চাকরি করেন না এবং তিনি কেন উনার কাছে গিয়েছেন বলে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। তখন সাহারা খানম বাধ্য হয়ে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহা পরিচালক উম্মে সালমা তানজিয়ার ব্যবহৃত মোবাইলে ফোনে কল দিয়ে বিষয়টি জানালে তিনি তাকে সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক মাজহারুল ইসলামের কাছে গিয়ে তার নাম বললে তিনি সাহারা খানমের পাসপোর্ট এর ফিঙ্গার নেয়ার বিষয়ে সহায়তা করার ব্যবস্থা করে দিবেন।
তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৬ নভেম্বর সকাল অনুমান সকাল ১১টায় সাহারা খানম সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালকের কক্ষে গিয়ে তাকে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহা পরিচালকের কথা বললে তিনি আমাকে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে বলেন। আনুমানিক ২ ঘন্টা পর সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক মাজহারুল ইসলাম সাহারা খানমকে বলেন যে, আপনার পাসপোর্টের জন্য জনৈক ছয়েফ খানকে ৮ হাজার টাকা দিয়েছেন মর্মে একটা লিখিত অভিযোগ দিলে আপনার ফিঙ্গার নেয়া হবে। এই কথা শুনে সাহারা খানম পাসপোর্ট করার জন্য কাউকে কোন টাকা দেই নাই এবং কোন লিখিত অভিযোগ দিতে অস্বীকার করলে পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক মাজহারুল ইসলাম তাকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি প্রদান করেন। একপর্যায়ে তিনি তার অফিসে কর্মরত আরও ২ জন কর্মকর্তাকে ডেকে এনে কক্ষের দরজা বন্ধ করে দেন। তখন যদি তার কথা মতো একটি লিখিত অভিযোগ না করি তাহলে তিনি সাহারা খানমকে শারিরীক লাঞ্ছনা ও প্রাণে মারার হুমকি দেন।
তখন তিনি প্রাণ ভয়ে তার কথামতো একটা সাদা কাগজে ‘ছয়েফ খানকে আমার পাসপোর্টের জন্য ৮ হাজার টাকা দিয়েছি’ লিখে দিলে তিনি তার অফিসের কর্মরত আরও ২ জন কর্মকর্তার মাধ্যমে আমার পাসপোর্টের ফিঙ্গার নেন।
পরে ভোক্তভোগী সাহারা খানম বাসায় ফিরে তার আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করে ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য তিনি মোগলাবাজার থানায় গত ১৬ নভেম্বর একটি সাধারণ ডায়েরী করেন এবং ২১ নভেম্বর সোমবার সিলেট মহানগর জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি