ইয়াছিন রনি, ফেনী :
গত বছরের ২৩ নভেম্বর ফেনী জেলা পুলিশের আয়োজনে এবং সালেহ্ উদ্দীন- হোসনে আরা চৌধুরী ফাউন্ডেশনের সহযোগীতায় জেলা ব্যাপী বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হয়ে। দাগনভূঞা থানা থেকে এ প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করে জন্মগতভাবে ২ হাত না থাকা শারিরিক প্রতিবন্ধি আব্দুল্লাহ আল মোনায়েম।
সে প্রতিযোগীতায় পা দিয়ে চিত্র এঁকে প্রাইমারী ক্যাটাগরিতে যৌথভাবে ২য় স্থান অর্জন করে মোনায়েম। ৬ ডিসেম্বর ফেনী মুক্ত দিবসে উক্ত প্রতিযোগীতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।
এর আগে মোনায়েমের পা দিয়ে আঁকা ছবিটি সালেহ্ উদ্দীন-হোসনে আরা চৌধুরী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা আলাউদ্দীন আহমেদ চৌধুরী নাসিম ও ট্রাস্টি অধ্যাপক ডা. জাহানারা আরজুর হাতে তুলে দেন ফেনীর পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন। পুলিশ সুপারের কাছে মোনায়েম সম্পর্কে জেনে ও তার পা দিয় আঁকা চিত্রকর্ম দেখে এবং পড়াশোনার প্রতি তার আগ্রহের বিষয়টি জেনে আলাউদ্দীন নাসিম মোনায়েমের শিক্ষা জীবনের সমস্ত ব্যায় তার ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বহনের সিদ্ধান্ত নেন। তখন ফেনীর পুলিশ সুপার দাগনভূঞা থানার ওসি মো. হাসান ইমামকে মোনায়েম ও তার মাকে নিয়ে ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় ফেনী পুলিশ লাইনস্ এ উপস্থিত থাকার নির্দেশনা প্রদান করেন। সে অনুযায়ী থানার ওসি মো. হাসান ইমাম ওসি (তদন্ত) পার্থ প্রতিম দেব মোনায়েম, তার মা ও মামাকে নিয়ে ২৫ মার্চ শুক্রবার সন্ধ্যায় উপস্থিত হন।
পুলিশ লাইনস্ ড্রিল শেড় হলে সালেহ্ উদ্দীন-হোসনে আরা চৌধুরী ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি বিএসএমএমইউ’র কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. জাহানারা আরজু মোনায়েমের শিক্ষার খরচ বাবৎ গত তিন মাসের নগদ ১৫ হাজার টাকা তার পরিবারের নিকট প্রদান করেন। এবং প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা করে মোনায়েমের ব্যাংক একাউন্টে জমা হবে বলে তিনি জানান। এসময় ফেনীর পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লা, নাদিয়া ফারজানা, দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন, দাগনভূঞা থানার ওসি মো. হাসান ইমাম, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক (ফেনী) বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের উপস্থিত ছিলেন।
মোনায়েম দাগনভূঞা উপজেলার ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের এনায়েত নগর মরহুম কামাল উদ্দিন ও বিবি কুলসুমের সন্তান। দুই সন্তানের মধ্যে সে সবার বড়। জন্ম থেকে তার দুইটি হাত নেই।
ছোট বেলা থেকে ছবি আঁকতে ভালোবাসে মোনায়েম। চলার পথে অন্যের সহযোগিতায় চলে তার জীবন তরী।
পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি মোনায়েমের বাবা ওমানে ইন্তেকাল করলে থমকে যায় তার স্বপ্ন ও বেঁচে থাকার সব আশা। চরম হতাশায় পড়ে তার পরিবার। ঠিক সে মুহূর্তে মোনায়েমের প্রতি সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে তার স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়ায় সালেহ্ উদ্দীন- হোসনে আরা চৌধুরী ফাউন্ডেশনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন মোনায়েম ও তার পরিবার। মোনায়েম বর্তমানে দাগনভূঞা একাডেমীতে ৬ষ্ঠ শ্রেনির অধ্যয়নরত ছাত্র।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি