April 25, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, February 14th, 2023, 8:26 pm

পিএসএল শুরুর ম্যাচে লাহোরের নাটকীয় জয়

অনলাইন ডেস্ক :

৭ উইকেট হাতে নিয়ে শেষ ওভারে মুলতান সুলতান্সের দরকার ছিল ১৫ রান। শুরুতে ডেভিড ভিসাকে বোলিংয়ের জন্য ডেকে নিলেন লাহোর কালান্দার্স অধিনায়ক শাহিন শাহ আফ্রিদি। পরক্ষণে সিদ্ধান্ত পাল্টে বল তুলে দিলেন জামান খানের হাতে। ধারাভাষ্যকার বলছিলেন, শেষ মুহূর্তে কেন সিদ্ধান্ত বদলালেন আফ্রিদি! অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিলেন তরুণ পেসার। রোমাঞ্চকর জয়ে শিরোপা ধরে রাখার অভিযান শুরু করল লাহোর। পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) নতুন আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে গতবারের দুই ফাইনালিস্টের লড়াইয়ে লাহোরের জয় ১ রানে। মুলতান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার ফখর জামানের ঝড়ো ফিফটিতে লাহোর করে ৬ উইকেটে ১৭৫ রান। জবাবে ১০০ রানের উদ্বোধনী জুটি, মোহাম্মদ রিজওয়ানের দারুণ ইনিংসে জয়ের সম্ভাবনায় ভালোভাবেই এগিয়ে ছিল মুলতান। কিন্তু ৯ উইকেট হাতে নিয়ে শেষ ৫ ওভারে ৪৯ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেনি তারা। শেষ ২ বলে দরকার ছিল ১০ রান, খুশদিল শাহ মারতে পারেন দুটি চার। তাই কাজে আসেনি রিজওয়ানের ৫০ বলে ৮ চার ও এক ছক্কায় ৭৫ রানের ইনিংস। ৪২ বলে ৫ ছক্কা ও ৩ চারে ৬৬ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা ফখর। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ফখর ও মির্জা বেইগের ব্যাটে ভালো সূচনা পায় লাহোর। পাওয়ার প্লেতে আসে বিনা উইকেটে ৫০ রান। অষ্টম ওভারে ৬১ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে উসামা মিরের দারুণ ক্যাচে বেইগের বিদায়ে (২৬ বলে ৩২)। ফখর এরপর দলকে এগিয়ে নেন শেই হোপকে সঙ্গী করে। ৩টি করে চার-ছক্কায় ফখর ফিফটি পূর্ণ করেন ¯্রফে ৩২ বলে। হোপকে (১৭ বলে ১৯) ফিরিয়ে ৫৮ রানের জুটি ভাঙেন উসামা। এই লেগ স্পিনার নিজের পরের ওভারে থামান ফখরকেও। মাঝে ফিরে যান কামরান গুলাম। ওই সময়ে রানের গতিও কমে যায় লাহোরের। শেষ দিকে সিকান্দার রাজা ও হুসেন তালাতের দুটি ক্যামিওতে পৌনে দুইশ পর্যন্ত যেতে পারে দলটি। রাজা ১৪ বলে একটি করে চার-ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ১৯ রানে। তালাত ১২ বলে করেন ২০ রান। রান তাড়ায় রিজওয়ান ও শান মাসুদের ব্যাটে মুলতান পাওয়ার প্লেতে তোলে ৫৩ রান। রিজওয়ান ফিফটি পূর্ণ করেন ৩৬ বলে। জুটির শতরান স্পর্শ করে দ্বাদশ ওভারের শুরুতে। পরের বলেই মাসুদের (৩১ বলে ৩৫) বিদায়ে ভাঙে জুটি। বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে ১০ ম্যাচে ৩৫১ রান করে যাওয়া রিজওয়ান এরপর দলকে এগিয়ে নেন ডেভিড মিলারের সঙ্গে জুটি বেঁধে। পঞ্চদশ ওভারের শেষ দুই বলে ছক্কা-চারে শেষ পাঁচ ওভারে সমীকরণটা ৪৯ রানে নামিয়ে আনেন পাকিস্তানের কিপার-ব্যাটসম্যান। চোট কাটিয়ে ফেরার ম্যাচে নিজের প্রথম ২ ওভারে ১১ রান দেওয়া আফ্রিদি ষোড়শ ওভারে বোলিংয়ে ফিরে দারুণ ইয়র্কারে বিদায় করে দেন রিজওয়ানকে। পরপর দুই ওভারে কোনো বাউন্ডারি না পাওয়া মুলতানের শেষ তিন ওভারে দরকার পড়ে ৩৮ রান, শেষ ২ ওভারে ২৯। ১৯তম ওভারের প্রথম বলে হারিস রউফ ইয়র্কারে বোল্ড করেন মিলারকে। এই পেসারের তৃতীয় বল ছক্কায় ওড়ানোর পর শেষ বলে চার মারেন কাইরন পোলার্ড। পাওয়ার প্লেতে ২ ওভারে ১৬ রান দেওয়া জামান শেষ ওভারের প্রথম বলে দেন ১ রান। পরের বলে দ্বিতীয় রানের চেষ্টায় রান আউটে কাটা পড়েন পোলার্ড। তৃতীয় বলে ফুল টসে এলবিডব্লিউ হন উসমান খান। এরপর একটি ওয়াইড এবং বাই থেকে আরও এক রান। চতুর্থ বলে দ্বিতীয় রানের চেষ্টায় রান আউট হয়ে যান উসামা। ২ বলে চাই ১০, পঞ্চম বল এক্সট্রা কাভার দিয়ে চার মেরে আশা জাগান খুশদিল। তবে শেষ বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে শুধু আরেকটি বাউন্ডারিই মারতে পারেন তিনি। উল্লাসে মাতে লাহোর শিবির।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
লাহোর কালান্দার্স: ২০ ওভারে ১৭৫/৬ (ফখর ৬৬, বেইগ ৩২, হোপ ১৯, কামরান ৩, রাজা ১৯*, তালাত ২০, ভিসা ৫*; আকিল ৪-০-৩১-১, সামিন ৪-০-৪১-০, ইহসানউল্লাহ ৪-০-৩৭-২, দাহানি ৪-০-৪০-১, উসামা ৪-০-২৫-২)
মুলতান সুলতান্স: ২০ ওভারে ১৭৪/৬ (মাসুদ ৩৫, রিজওয়ান ৭৫, মিলার ২৫, পোলার্ড ২০, খুশদিল ১২*, উসমান ০, উসামা ০, আকিল ০*; আফ্রিদি ৪-০-২৭-১, রউফ ৪-০-৩৭-১, জামান ৩-০-২৯-১, রাজা ৩-০-৩২-০, ডসন ১-০-৮-০, ভিসা ৩-০-২৪-০, তালাত ২-০-১৬-১)
ফল: লাহোর কালান্দার্স ১ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: ফখর জামান