কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাত ও পাচারে অভিযুক্ত বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদারকে গ্রেপ্তার করায় ভারত সরকারকে ধন্যবাদ দেয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। সোমবার ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন মানিক পিকের গ্রেপ্তারের বিষয়টি বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চের নজরে আনলে আদালত এই মন্তব্য করেন।
আদালত আরও বলেন, ‘আমাদের মেসেজ ক্লিয়ার। দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অপরাধের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না, সে যেই হোক। আমরা এ ব্যাপারে সিরিয়াস।’
গত ১৩ মে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদার ও তার কয়েক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে ভারতের ডিরেক্টরেট অব এনফোর্সমেন্ট (ইডি)। পরের দিন আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে তিনদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।
গ্রেপ্তারের পর ইডি সাংবাদিকদের জানায়, বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার পর শিবশঙ্কর হালদার নামে ভারতীয় নাগরিকের সনদ যোগাড় করেন পি কে হালদার। পশ্চিমবঙ্গের নকল রেশন কার্ড, ভোটার আইডি কার্ড, আধার কার্ডও তৈরি করান পি কে।
সংস্থাটি আরও জানায়, পি কে হালদার এবং তার সহযোগীরা পশ্চিমবঙ্গে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানও পরিচালনা করছেন। প্রচুর অর্থ ব্যয় করে কলকাতা মেট্রোপলিটন এলাকায় নকল নাগরিক সনদ দেখিয়ে জমি কিনেছেন। এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আইএলএফএসএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। আইএলএফএসএল গ্রাহকদের অভিযোগের মুখে পি কে হালদারের বিদেশ পালানোর পর ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি দুদক তার বিরুদ্ধে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার ‘অবৈধ সম্পদ’ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে। তার বিরুদ্ধে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা পাচার ও আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। দুই বিনিয়োগকারীর করা আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চ এক আদেশে প্রশান্ত কুমার হালদারসহ সংশ্লিষ্ট ২০ জনের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু এর আগেই সে দেশ থেকে পালিয়ে যায়।
এরপর ‘পি কে হালদারকে ধরতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাইবে দুদক’ শীর্ষক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর তাকে বিদেশ থেকে ফেরাতে এবং গ্রেপ্তার করতে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে স্বত:প্রণোদিত আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়, দুদক থেকে পাঠানো নিষেধাজ্ঞা জারির আদেশ ইমিগ্রেশন পুলিশের পক্ষ থেকে জারির প্রায় দুই ঘন্টা আগেই ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর বিকাল ৩টা ৩৮মিনিটে বেনাপোল স্থল বন্দর দিয়ে পিকে হালদার দেশত্যাগ করেন।’ সর্বশেষ গত বছরের ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারকে গ্রেপ্তারে রেড অ্যালার্ট জারি করে ইন্টারপোল।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
বঙ্গোপসাগরে ১২ নাবিকসহ কার্গো জাহাজডুবি
চুয়াডাঙ্গায় রাতে বৃষ্টি দিনে সূর্যের চোখ রাঙানি, রেকর্ড তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি
তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যেই ২৮ এপ্রিল খুলছে মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ