অনলাইন ডেস্ক :
নেপালের পোখারায় ইয়েতি এয়ারলাইন্সের বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের ককপিট ভয়েস রেকর্ডার এবং ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার- দুটোই খুঁজে পেয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা। রয়টার্স জানিয়েছে, ওই ফ্লাইটে থাকা ৭২ আরোহীর মধ্যে ৬৮ জনের মরদেহ রোববারই উদ্ধার করা হয়েছিল, বাকি চারজনের খোঁজে সোমবারও (১৬ জানুয়ারী) উদ্ধার অভিযান চলছে। তবে কাউকে জীবিত পাওয়ার আশা উদ্ধারকর্মীরা আর দেখছেন না। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় সেতি নদীর গভীর পার্বত্য খাতে উদ্ধার অভিযান চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে তাদের জন্য। পুলিশের বরাত দিয়ে নেপালের সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট লিখেছে, এ পর্যন্ত ৬৮ জনের মরদেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে সেগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। কাঠমান্ডু থেকে ৭২ জন আরোহী নিয়ে উড়ে পর্যটন নগরী পোখরায় নামার পথে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের এটিআর ৭২-৫০০ উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয় রোববার সকালে। ওই ফ্লাইটে যাত্রী ছিলেন ৬৮ জন, বাকিরা ক্রু। যাত্রীদের মধ্যে ১৫ জন ছিলেন বিদেশি নাগরিক। তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এই বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতদের স্মরণে গতকাল সোমবার শোক পালন করছে নেপাল। রোববার দিনভর ওই দুর্গম এলাকায় তল্লাশি শেষে রাতে উদ্ধার অভিযান স্থগিত রাখা হয়েছিল; সকালে আবারও সেখানে কাজ শুরু করেন উদ্ধারকর্মীরা। সকালেই তারা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে ব্ল্যাক বক্স দুটি উদ্ধার করেন। কাঠমান্ডু বিমানবন্দরের কর্মকর্তা টেকনাথ সিতুয়ালা রয়টার্সকে বলেছেন, ব্ল্যাক বক্সগুলো অক্ষত অবস্থাতেই আছে বলে বাইরে থেকে দেখে মনে হয়েছে। ইয়েতি এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজটি কেন দুর্ঘটনায় পড়ল, সে বিষয়ে কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি এখনও। শেষ মুহূর্তে বিমানে কী ঘটেছিল, ককপিট ভয়েস রেকর্ডার এবং ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার থেকে সে বিষয়ে তথ্য মিলতে পারে। নেপালের সিভিল এভিয়েশন দপ্তর জানিয়েছে, রোববার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে পোখারা বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে উড়োজাহাজটির সর্বশেষ সংকেত পাওয়া যায়। তারপর সেটি বিধ্বস্ত হয়। স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের শেয়ার করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ছোট একটি উড়োজাহাজ অবতরণের সময় হঠাৎ কাত হয়ে সরাসরি মাটির দিকে নেমে আসতে থাকে। বিধ্বস্ত হওয়ার পর ওই বিমানে আগুন ধরে যায়। সেই সময়ের পরিস্থিতি ধরা এক যাত্রীর মোবাইল ফোনের ভিডিওতে যিনি সে সময় ফেইসবুকে লাইভ করছিলেন। ভিডিওর শুরুটা হয়েছে উড়োজাহাজের ভেতরে যাত্রীদের বসে থাকা দৃশ্য দিয়ে। জানালা দিয়ে দেখা যাচ্ছিল নিচের পোখারা শহর। বিমানটি তখন অবতরণের আগে আকাশে চক্কর দিচ্ছিল। এরপর হঠাৎ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে মোবাইল। ক্যামেরার সামনের দৃশ ওলট-পালট হয়ে যায়। শেষ কয়েক সেকেন্ডে স্কিনে দেখা যায় ভয়াবহ আগুনে জ¦লছে সব, শোনা যায় যাত্রীদের আতঙ্কিত চিৎকার। বলা হচ্ছে, নেপালে তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিমান দুর্ঘটনা এটি। এর আগে ২০১৮ সালের ১২ মার্চ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে নামার সময় বাংলাদেশের ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হলে ৫১ জনের প্রাণ যায়।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু