November 18, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, August 3rd, 2021, 9:19 pm

প্রতিটি মানুষ সুন্দর ও উন্নত জীবন পাবে: প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক :

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতার এই বাংলাদেশে প্রত্যেকটি মানুষ সুন্দর ও উন্নত জীবন পাবে। জাতির পিতা বেঁচে থাকলে আরও আগেই সেটা পেত। তবে আমাদের দুর্ভাগ্য তাকে আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নেয়ার ফলে সেটা পেলাম না। তবে আমরা তার সেই কাজই করে যাচ্ছি। জাতির পিতার এই দেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না। পিছিয়ে থাকবে না। মঙ্গলবার (৩রা আগষ্ট) মুজিববর্ষ উপলক্ষে ‘সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ঢাকায় নির্মিত দুই হাজার ৪৭৪টি ফ্ল্যাট সংবলিত ৫টি আবাসন প্রকল্প’, ‘মাদারীপুরে নির্মিত সমন্বিত অফিস ভবন উদ্বোধন’ এবং ‘জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের নিজ-অর্থায়নে বস্তিবাসীদের জন্য মিরপুরে নির্মিত ভাড়াভিত্তিক ৩০০টি ফ্ল্যাট’ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা তার জীবন উৎসর্গ করেছেন দেশের জন্য। তিনি সবসময় একটি কথাই বলতেন, ‘আমার জীবনের একমাত্র কামনা বাংলাদেশের মানুষ অন্ন পাবে, বস্ত্র পাবে, তারা উন্নত জীবনের অধিকারী হবে।’ এই বাংলাদেশের মানুষ রোগে-শোকে ছিল। শিক্ষার আলো পেত না। তাদের ভাগ্যোন্নয়ন করাই ছিল বঙ্গবন্ধুর মূল লক্ষ্য। এজন্য ছাত্রজীবন থেকেই বঙ্গবন্ধু সংগ্রাম করেছেন। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবি থেকে তিনি ধাপে ধাপে জাতিকে মুক্ত ও স্বাধীন করেছেন। আর এই দাবির সংগ্রামের মধ্যেই তাকে জেলে নিয়েছে, নির্যাতন করেছে, হত্যা করতে চেয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে ভূমিহীনদের ঘর করে দেয়ার ব্যবস্থা করেন। সাড়ে তিন বছর একটা রাষ্ট্রের জন্য কম সময়। তখন তো একটা প্রদেশ ছিল, সেটা দেশে উন্নীত করা ও তার গঠন করা; এটা তিনি করে গেছেন। কিছু বেইমান-মুনাফেকের জন্য তার ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গঠন সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, জাতির পিতার হত্যাক-ের সময় আমরা দেশের বাইরে ছিলাম। আমার দল ও বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসায় ফিরে আসি। আমার আসার পথ সহজ ছিল না। তৎকালীন ক্ষমতা দখলকারীরা নানা বাধা সৃষ্টি করেছে। আজকে আমরা ক্ষমতায়। সরকারে থেকে তৃণমূল মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন, তাদের জীবনমান উন্নত করা এবং সংবিধানের আলোকের মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছি। সরকার প্রধান বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের দিয়ে আমরা কাজ করাবো, তাদের ভালো-মন্দও তো দেখতে হবে। আজিমপুর সরকারি কলোনিতে গ্যাস ছিল না, আমিই আব্বাকে বলে সে গ্যাসের লাইন করে দিয়েছিলাম। আমি সরকার গঠন করে উদ্যোগ নিয়েছিলাম, সকলকে ফ্ল্যাট করে দেব, সুন্দর পরিবেশে থাকার ব্যবস্থা করে দেব, যাতে কর্মকর্তারা ভালোভাবে কাজ করতে পারেন। তিনি বলেন, প্রত্যেকটা মহকুমাকে জাতির পিতা জেলায় রূপান্তর করেন। জেলা গর্ভনর নিয়োগ দেন, যেন প্রত্যেকটা জায়গা পরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠতে পারে। ৭৫-এর পর এ পরিকল্পনা পরিবর্তন করে ফেলা হয়। এখন আমরা সে ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রথমে ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউনিয়ন কমপ্লেক্স করে দিয়েছি। যাতে এক জায়গা থেকে সব সেবা পাওয়া যায়। পরে উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন করে দিয়েছি। এখন মাদারীপুরে জেলায় কমপ্লেক্স করে দিলাম। এক ছাদের নিচে সব সরকারি সেবা পাবে মানুষ। সব জেলা ও উপজেলায় কমপ্লেক্স করে দেব। অফিসারদের থাকার জন্য ফ্ল্যাটও করে দেব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ঘরেফেরা কর্মসূচি নিয়েছি। কোনো বস্তিবাসী যদি নিজ গ্রামে যায়, তাকে ঘর করে দেয়া, কর্মসংস্থান ও আয়ের সুযোগ করে দেব। ঋণ দেব। বস্তিতে তারা মানবেতর জীবন যাপন করে, এটি অস্বাস্থ্যকর ও বসবাসের অনুপযোগী। এজন্য তাদের জন্য সুন্দর ও আধুনিক ব্যবস্থাপনায় থাকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। আজকে ৩০০ পরিবারকে ৩০০ ফ্ল্যাট দিচ্ছি। পর্যায়ক্রমে সবাইকে ফ্ল্যাট দেব। কেউ গ্রামে যেতে চাইলে সে ব্যবস্থাও করবো। গ্রামের ঘরবাড়ি করে দেব। ঢাকায় ফ্ল্যাটে থাকলে মাসে ভাড়া দিয়ে থাকতে হবে। গ্রামে গেলে সব বিনামূল্যে করে দেয়া হবে। আমাদের লক্ষ্য একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। এসময় তিনি বলেন, পূর্বাচলে যাদের জমির মালিকানা ছিল, তাদের একটা করে প্লট করে দেয়ার কথা ছিল। সেটা কেউ করেনি। আমাদের গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় নামমাত্র মূল্যে তাদের প্লটগুলো দিয়েছে। এজন্য মন্ত্রণালয়ের সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমদে ও সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার।