অনলাইন ডেস্ক :
প্রথমবারের মতো দেশে ক্যাসিনো খোলার পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছে জাপান সরকার। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ওসাকায় এক ট্রিলিয়ন ইয়েনের বেশি অর্থ ব্যয় করে (৮.১ বিলিয়ন ডলার) ২০২৯ সালের মধ্যেই নির্মাণ করা হবে এই ক্যাসিনো। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যটকদের আগ্রহ বাড়াতেই নতুন এই পরিকল্পনার অনুমোদন দেওয়া হলো। সম্প্রতি রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। ইউমেশিমা নামে ওসাকা উপসাগরে পুনরুদ্ধার হওয়া একটি দ্বীপে বৃহত্তম রিসোর্ট কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। এতে থাকবে বেশ কিছু হোটেল, সম্মেলনকেন্দ্র, শপিং মল, জাদুঘর এবং ফেরি টার্মিনাল। এ ছাড়া হেলিকপ্টার অবতরণের জন্যও ব্যবস্থা থাকবে।
জাপানে ব্যক্তিগত জুয়া খেলা বা ক্যাসিনো আগে অবৈধ ছিল। কিন্তু ২০১৮ সালে পর্যটকদের আকর্ষণ করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সরকারিভাবে অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে জুয়া বা ব্যাকারেটের মতো ক্যাসিনোতে অনুমতি দিয়ে একটি আইন পাস করা হয়। ১২ কোটি ৬০ লাখ জনসংখ্যা এবং এশিয়ার ধনী জুয়াড়িদের সান্নিধ্যের কারণে ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত পক্ষগুলোর কাছে জাপান একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার হয়ে উঠেছে। তবে জনমত জরিপ অনুযায়ী, দেশের অনেক নাগরিকই জুয়ার আসক্তি এবং অপরাধ নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাসিনো অপারেটর এমজিএম এবং জাপানের ওরিক্স কর্প ক্যাসিনো কোম্পানিতে ৪০ শতাংশ করে শেয়ারের মালিকানায় জাপানের এই ক্যাসিনো নির্মাণ করা হচ্ছে। স্থানীয় সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাকি ২০ শতাংশ শেয়ারের মালিক অন্য ২০টি কোম্পানি।
এ ছাড়া এই রিসোর্টে এমইউএফজি ব্যাংক, সুমিতোমো ব্যাংকিং কর্প ৫৫০ বিলিয়ন ইয়েন আর্থিক সহায়তা দেবে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা আশা প্রকাশ করে বলেছেন, এই প্রকল্পটি ওয়ার্ল্ড এক্সপো ২০২৫-এর পরে ওসাকার আশেপাশের কানসাই অঞ্চল এবং বৃহত্তর জাপানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে। করোনা মহামারির কারণে দেশের পর্যটন খাতে যে ধস নেমে এসেছিল তা পুনরুদ্ধারে কাজ করছে জাপান সরকার। পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, এই রিসোর্ট থেকে বছরে প্রায় ৫২০ বিলিয়ন ইয়েন অর্থনৈতিক সুবিধা যার বেশির ভাগই আসবে বিভিন্ন ধরনের গেমিং ব্যবসা থেকে। এই প্রকল্পের নথিপত্রতে দেখানো হয়েছে, ৬০ লাখ আন্তর্জাতিক এবং ১ কোটি ৪০ লাখ অভ্যন্তরীণ পর্যটককে আকর্ষণ করবে এই প্রকল্প। এমজিএম রিসোর্ট, অরিক্স এবং ওসাকার স্থানীয় সরকার বলছে, তারা এই অনুমোদনকে স্বাগত জানিয়েছে এবং প্রকল্প বিকাশের ক্ষেত্রে তারা একসঙ্গে কাজ করবে। ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি চুক্তি বাতিলের হুমকি রাশিয়ার ইউক্রেনের শস্য রপ্তানির লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তি থেকে সরে আসার হুমকি দিয়েছে রাশিয়া।
আগামী ১৮ মে এ চুক্তির বর্ধিত মেয়াদও শেষ হতে যাচ্ছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সোমবার রুশ শস্য ইউনিয়নের সভাপতি আর্কাদি জ্লোচেভস্কি বলেছেন, ইউক্রেনের কৃষিপণ্য রপ্তানির সুযোগ করে দিতে স্বাক্ষরিত কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তি রাশিয়ার জন্য ইতিবাচক কিছু বয়ে আনেনি কিংবা বৈশ্বিক বাজারে সরবরাহ বাড়াতে কোনো সাহায্য করেনি। গত বছরের জুলাইতে তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় এ চুক্তি সই হয়েছিল। এই চুক্তির অধীনে ইউক্রেন কৃষ্ণসাগরে উপকূলে অবস্থিত দেশটির বিভিন্ন বন্দর ব্যবহার করে ২ কোটি ৭০ লাখ টনের বেশি শস্য রপ্তানি করেছে। রাশিয়া বরাবরই এই চুক্তির সমালোচনা করে আসছে। দেশটি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, পশ্চিমা বিধিনিষেধের ফলে রাশিয়ার নিজস্ব কৃষিপণ্য ও সার রপ্তানিতে সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা দূর করার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ১৮ মে শস্য চুক্তি থেকে সরে আসবে দেশটি।
এদিকে, গুরুত্বপূর্ণ এই চুক্তির ‘মেয়াদ বৃদ্ধি, পুরোপুরি বাস্তবায়ন ও সম্প্রসারণের’ আহ্বান জানিয়েছে শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭। রোববার এক বিবৃতিতে জোটের কৃষিমন্ত্রীরা এ আহ্বান জানান। তবে রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, জি-৭ যদি রাশিয়ায় পণ্য রপ্তানি বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়, তাহলে কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তি বাতিলের মাধ্যমে তার জবাব দেবে মস্কো। অবশ্য এই শস্য চুক্তি বাঁচাতে তৎপর হয়েছে জাতিসংঘ। গত বছর লাটভিয়ার জব্দ করা রাশিয়ার সার জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মাধ্যমে কেনিয়ায় নেওয়া হচ্ছে। লাটভিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত শনিবার এ কথা জানিয়েছে। শস্য চুক্তিতে অংশগ্রহণ অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে এই সার জব্দকে প্রধান প্রতিবন্ধকতা হিসেবে উল্লেখ করে আসছিল রাশিয়া।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু