জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার:
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় কৃষি জমিতে শতভাগ যান্ত্রিকীকরণের ফলে এবার পতিত আউশ-আমনের প্রায় ৫০ একর জমি বোরো চাষের জন্য নতুন করে যোগ করা হয়েছে। এই ৫০ একর জমির শুরু থেকে ফসল কাটা পর্যন্ত সম্পূর্ণটাই হবে আধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে। ফলে বোরো চাষ নিয়ে স্থানীয় কৃষকরা ব্যাপক কৌতুহলী। এ থেকে অধিক মুনাফা অর্জনের আশাও করছেন কৃষক ও কৃষিবিদরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, কুলাউড়ার দক্ষিণাঞ্চলের এলাকাগুলোতে দু’মৌসুম ধান (আউশ ও আমন) ক্ষেতের পর জমিগুলো পতিত থাকে। এবার সেই পতিত জমিগুলোতে বোরো ফসল আবাদের উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি বিভাগ। এর জন্য প্রাথমিক অবস্থায় কুলাউড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের লক্ষীপুর-গুতগুতি এলাকায় ৫০ একর দু’ফসলা জমিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। আর এই বোরো চাষটি হবে সম্পূর্ন আধুনিক কৃষি যন্ত্রের মাধ্যমে। প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে কৃষিক্ষেত্রকে যান্ত্রিকীকরণই হচ্ছে এর মূল লক্ষ্য। কুলাউড়া উপজেলায় এটি প্রথম উদ্যোগ। এই ৫০ একর জমির চাষাবাদের জন্য স্থানীয় ৫০ থেকে ৬০ জন কৃষককে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে শোয়িং মেশিনের মাধ্যামে সিডলিং ট্রেতে চারা উৎপাদনের জন্য বীজ বপন করা শুরু হয়েছে।
স্থানীয় কৃষক রজব আলী জানান, লক্ষীপুর-গুতগুতি গ্রামে শতশত একর জমি দীর্ঘদিন থেকে পতিত হয়ে পড়ে ছিল। আমরা এখানে শুধু আউশ-আমন ধানের চাষাবাদ করতাম। কৃষি অফিসের সাথে যোগাযোগ করে ৫০-৬০ কৃষক পাশ^বর্তী ফানাই নদী থেকে পানি নিয়ে প্রথমবারের মতো পতিত এইসব জমিতে বোরো চাষ শুরু করছি।
কুলাউড়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোছাদ্দিক আহমদ নোমান বলেন, কৃষকের মুখে হাসি ফুটানোর ছোট্ট প্রয়াসের জন্য প্রায় দেড়শ বিঘা জমির উপর বোরো চাষের জন্য ফানাই নদীর উপর এলাকার কৃষকদের নিয়ে বাঁধ নির্মাণ করেছি। পতিত জমিতে বোরো চাষে পরিষদের পক্ষ থেকে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ আব্দুল মোমিন বলেন, জেলা প্রকৌশলী সোনিয়া শারমিনের তত্ত্বাবধানে সিডলিং ট্রেতে বীজতলা প্রস্তুত করা হচ্ছে। সেচ সুবিধার কথা বিবেচনা করে প্রথম অবস্থায় ফানাই নদীর তীরে কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের লক্ষীপুর-গুতগুতি এলাকার পতিত মাঠকে বেছে নেওয়া হয়েছে। সেখানে সিড শোয়িং মেশিনের সাহায্যে মাটি ও বীজ মিশ্রিত সাড়ে চার হাজার ট্রেতে চারা উৎপাদন শুরু হয়েছে। এরপর রাইছ ট্রান্সপ্লান্টার দিয়ে জমিতে সেই চারা রোপন করা হবে এবং সবশেষে কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার মেশিনের মাধ্যমে ধান কাটা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহমুদুর রহমান খোন্দকার বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কুলাউড়া উপজেলায় পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধাজনক জমিগুলোতে আমন-আউশের পর বোরো আবাদের যাবতীয় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে মনিটরিং অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি