পদ্মায় প্রবল স্রোত বেড়ে যাওয়ায় শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফেরি বন্ধ ঘোষণার পর নদী পারপারে অপেক্ষারত হাজার হাজার মানুষ বিপাকে পরে।
এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিসিএর চেয়ারম্যান সৈয়দ তাজুল ইসলাম জানান, পদ্মা নদীতে স্রোত বেড়ে যাওয়ায় শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ফেরি চলাচল সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। বিকালে স্রোতের গতি মাপা হবে। এরপর বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে ফেরি চলাচলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
ঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, পদ্মা সেতুর নিরাপত্তা ও নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে স্রোত কমে আসলে আবারও ফেরি চলাচল শুরু হবে। পদ্মায় স্রোত ও পানির উচ্চতা বেশি থাকায় গত জুলাই ও আগস্টে পদ্মা সেতুর খুঁটিতে পাঁচবার ফেরির ধাক্কা লাগে। ওই পরিস্থিতিতে সব ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে গত ১৮ আগস্ট দুপুরের পর এ রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।
নদীর পরিস্থিতি স্বাভাবিক উল্লেখ করে গত ৪ অক্টোবর (সোমবার) থেকে পাঁচটি ছোট ফেরির মাধ্যমে আবারও পারাপার শুরু হয়। কিন্তু ঠিক এক সপ্তাহ পর সোমবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে স্রোত বেড়ে যাওয়ার কারণ উল্লেখ করে আবারও ফেরি চলাচল বন্ধ করে কর্তৃপক্ষ। এতে আবারও দুর্ভোগে পড়লো এই রুটের যাত্রী ও চালকরা।
শিমুলিয়া ঘাটের ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক মো. জাকির হোসেন জানান, স্রোতের কারণে সাময়িক সময়ের জন্য ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। আপাতত ঘাটে ৪০টি ছোট গাড়ি পারাপারের অপেক্ষায় আছে। এর মধ্যে ঘাটে মাইকিং করা হয়েছে। যাত্রী ও যানবাহন চালকদের অন্য নৌপথ ব্যবহারের জন্য বলা হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের উপ মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সফিকুল ইসলাম জানান, পাঁচটি ছোট ফেরি দিয়ে জরুরি সেবার যানবাহন ও ছোট গাড়ি পারাপার করা হচ্ছিলো। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কমিটির রিপোর্টে জানানো হয়েছে পদ্মা নদীতে হঠাৎ করে স্রোত বেড়ে যাওয়ায় ফেরিগুলো চলাচলে ঝুঁকি রয়েছে। নৌ দুর্ঘটনা ও পদ্মা সেতু নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় সাময়িকভাবে ফেরি বন্ধ রাখা হয়েছে।
এদিকে,ফেরি চালুর সাত দিনের মাথায় বন্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে ঘাট ব্যবহারকারীরা জানান, হেমন্ত আসতে যাচ্ছে। প্রকৃতিতে শীত কড়া নাড়ছে, সেখানে নাব্য সঙ্কট হতে পারে। কিন্তু স্রোতের কারণে ফেরি বন্ধ গ্রহণযোগ্য নয়। লঞ্চ, ট্রলার ও স্পিডবোট সব নৌ যান চলাচল করছে, শুধু ফেরি বন্ধ রাখা হচ্ছে। হঠাৎ ফেরি চলাচল বন্ধ হওয়ায় অনেক মানুষ ফিরে যাচ্ছে। এই পথে আসা যাত্রী ও যানবাহনগুলোর সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। পূজোর ছুটিতে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ আর বেশি।
তবে কর্তৃপক্ষ কখন চালু হবে তা নিশ্চিত না করে বলছে, স্রোত স্বাভাবিক হলে ফেরি চলাচল করবে। কর্তৃপক্ষ বলছে, যে দিক দিয়ে ফেরি চলাচল করছে, সেখানে প্রতি ঘণ্টায় স্রোতের গতি পৌনে ৮ কিলোমিটার।
–ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম