প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ যুদ্ধ না চাইলেও বহিরাগত হুমকি থেকে নিজেদের রক্ষা করতে সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে দুটি মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফ্ট (এমপিএ-৮৩২২ ও এমপিএ-৮৩২৭) অন্তর্ভুক্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রবিবার বক্তব্যকালে এই কথা বলেন।
বাংলাদেশ নৌবাহিনী চট্টগ্রামের পতেঙ্গার নেভাল এভিয়েশন হ্যাঙ্গারে (বিমান রাখার স্থান) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এবং প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে সরকার সব প্রতিষ্ঠানকে প্রস্তুত করছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর সমুদ্র ও আকাশ রক্ষায় নৌবাহিনীকে সত্যিকারের ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে রূপান্তরিত করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে এই দুটি টহল বিমানের অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিমান চালনার সক্ষমতা বহুগুণে শক্তিশালী করবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার ২০১৭ সালে দুটি সাবমেরিন ‘বিএনএস নবযাত্রা’ ও ‘বিএনএস জয়যাত্রা’ অন্তর্ভুক্ত করেছে।
তিনি বলেন, বন্দরে সাবমেরিন ও যুদ্ধজাহাজকে নিরাপদ জেটি সুবিধা দিতে কক্সবাজারের পেকুয়ায় একটি স্থায়ী সাবমেরিন ঘাঁটি নির্মাণের কাজ চলছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের উপকূলীয় অঞ্চলে নৌযানের পরিচালন ও যোগাযোগ সুবিধা বাড়াতে ‘শের-ই-বাংলা ঘাঁটি’ এর নির্মাণ কাজ উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও যুদ্ধজাহাজ সংগ্রহে কাজ করেছে এবং বিদ্যমান জাহাজের পরিচালনা ক্ষমতা জোরদার করছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত প্রতিরক্ষা নীতির আলোকে ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ বাস্তবায়ন শুরু করেছে সরকার।
তিনি বলেন, ‘আমাদের নৌবাহিনীর কর্মীরা প্রতিনিয়ত অনেক প্রাকৃতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সামুদ্রিক এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে, যা প্রশংসার দাবিদার।’
তিনি আরও বলেন, সরকার ইতোমধ্যেই অত্যাধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সম্বলিত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আধুনিক যুদ্ধজাহাজ, হেলিকপ্টার, মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট ও সাবমেরিন বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, হেলিকপ্টার ও এমপিএ পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আধুনিক সব সুবিধাসহ দ্বিতীয় হ্যাঙ্গার নির্মাণের কাজ চলছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের রোল মডেল। দেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু এটা দুর্ভাগ্যজনক যে করোনাভাইরাস ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ আমাদের উন্নয়নের গতিকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেছে। কিন্তু আমরা আমাদের নিজস্ব সম্পদ, ভূমি ও জনশক্তি দিয়ে এ দেশকে রক্ষা করব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সামুদ্রিক সম্পদকে কাজে লাগানোর উপায় খুঁজে বের করতে হবে এবং সেদিকে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।’
ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল। অনুষ্ঠানে নেভাল এভিয়েশন সম্পর্কিত একটি ছোট ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
কমতে শুরু করেছে কুড়িগ্রামের নদীর পানি, ভাঙন আতঙ্কে মানুষ
দিনাজপুরে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় নিহত ২