April 23, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, January 10th, 2023, 8:05 pm

প্রিন্স হ্যারির আত্মজীবনী চলছে গরম পিঠার মতো

অনলাইন ডেস্ক :

প্রিন্স হ্যারির বহুল আলোচিত স্মৃতিকথা ‘স্পেয়ার’ আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারে এসেছে। একসঙ্গে বিশ্বব্যাপী ১৬টি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে বইটি। এই বইয়ে রাজপরিবারের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কথা প্রকাশ করে বহু বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন ব্রিটিশ ডিউক অব সাসেক্স হ্যারি। বিবিসি জানিয়েছে, ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে লন্ডনের বইয়ের দোকানগুলো মধ্যরাতেই খোলা হয়। ‘সরাসরি ভুক্তভোগীর মুখ থেকে’ কাহিনি জানতে বইয়ের একটি কপি সংগ্রহের জন্য দোকানগুলোর সামনে ভক্তদের লম্বা লাইন পড়ে। স্পেয়ারের বহু অংশ ফাঁস হওয়া ও গত সপ্তাহে স্পেনে বইটি সময়ের আগেই বাজারে এসে যাওয়ায় সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার পর লন্ডনে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। ব্রিটিশ বুক রিটেইলার ওয়াটারস্টোনস জানিয়েছে, প্রিন্স হ্যারির বই ‘এক দশকের মধ্যে তাদের সবচেয়ে বেশি আগাম ক্রয়াদেশ পাওয়া’ বইগুলোর একটি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বইবিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শাখা লন্ডনের পিকাডেলির দোকানটি মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারী) নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগেই খোলা হয়। বইটি ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক চাহিদা তৈরি করবে বলে আশা করছে তারা। ‘স্পেয়ার’ এর প্রকাশ উপলক্ষে আরও যারা দোকান খোলা রাখার সময় বৃদ্ধি করেছে তাদের মধ্যে আরেক ব্রিটিশ রিটেইলার ডব্লিউএইচ স্মিথের ইউস্টন, ভিক্টোরিয়া, হিথ্রো ও গ্যাটউইকের শাখাগুলোও আছে। এই স্মৃতিকথাটি ইতোমধ্যেই যুক্তরাজ্যে অনলাইন রিটেইলার অ্যামাজনের বেস্ট সেলারগুলোর শীর্ষে উঠে গেছে। গত কয়েকদিন ধরে বইটির ফাঁস হওয়া বিভিন্ন অংশ সংবাদের শিরোনাম হয়েছে। তাতে প্রিন্স হ্যারি কীভাবে তার কৌমার্য হারিয়েছেন থেকে শুরু করে তাকে ব্রিটিশ সিংহাসনের উত্তরাধিকারী বড় ভাই প্রিন্স উইলিয়াম আক্রমণ করেছিলেন, এমন সব কথা প্রকাশ পেয়েছে। ৪১০ পৃষ্ঠার এই স্মৃতিকথায় ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্যদের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনার কথা এসেছে, প্রিন্স হ্যারির ভাষ্যে তার বেড়ে ওঠা ও রাজপরিবারের সঙ্গে তার ঝগড়ার কথাও উঠে এসেছে। তবে এ পর্যন্ত এসব নিয়ে বাকিংহাম প্রাসাদ ও কেনসিংটন প্রাসাদ কোনো মন্তব্য করেনি এবং কোনো মন্তব্যের অনুরোধে সাড়াও দেয়নি। কিন্তু বইটিতে দাবি করা হয়েছে, তার বাবাকে (রাজা তৃতীয় চার্লস) দ্বিতীয় বিয়ে না করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন প্রিন্স হ্যারি, আফগানিস্তানে ব্রিটিশ বাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করার সময় তিনি ২৫ জন তালেবান যোদ্ধাকে হত্যা করেছেন, অংশত প্যানিক অ্যাটাক এড়াতে অবৈধ মাদক গ্রহণ করেছেন এবং তার স্ত্রী মেগানের সঙ্গে বড় ভাইয়ের স্ত্রী ক্যাথেরিনের বনিবনা ছিল না। এই বইয়ের প্রধান একটি বিষয় হচ্ছে হ্যারির মাকে (প্রিন্সেস ডায়না) হারানোর শোক, যা তিনি আর কাটিয়ে উঠতে পারেছিলেন না। হ্যারি জানিয়েছেন, মাকে হারানোর আঘাত তিনি বহুদিন বয়ে বেড়িয়েছেন। ডায়নাকে অনুসরণ করার জন্য সাংবাদপত্রকে দায়ী করা হয়েছে এবং বইটির প্রচারের জন্য দেওয়া বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকারের একটিতে প্রিন্স হ্যারি বলেছেন, গণমাধ্যমের দৃষ্টিভঙ্গী পাল্টে দেওয়া তার ‘জীবনব্যাপী’ কাজ হবে। বইটিতে প্রিন্স হ্যারি ও প্রিন্স উইলিয়ামের জীবনের অপ্রত্যাশিত বিস্তারিত কিছু বিবরণ আছে বলে মন্তব্য বিবিসির। বইটিতে প্রিন্স হ্যারি জানিয়েছেন, তিনি তার নিজের পরিবারের কাছ থেকে নয় বিবিসির ওয়েবসাইট থেকেই প্রথম রানি এলিজাবেথের মৃত্যু সংবাদ পেয়েছিলেন। বইয়ের কৃতজ্ঞতাস্বীকার অংশে রাজপরিবারের সদস্যদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। তাদের বদলে ডিউক অব সাসেক্স যুক্তরাজ্যে থাকা তার এক বন্ধুকে ‘বিশেষ ধন্যবাদ’ জানিয়েছেন। এই বন্ধু বিভিন্ন দুঃসময়েও তার পাশে ছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি। ‘মানসিক আঘাত’ কাটিয়ে উঠতে থেরাপিস্ট তাকে সহায়তা করেছিলেন বলেও উল্লেখ করেছেন হ্যারি। বিবিসি বলছে, তিনি তার সৎ মা কুইন কনসোর্ট ক্যামেলিয়া, বড় ভাই প্রিন্সেস অব ওয়েলস উইলিয়ামসহ রাজপরিবারের সঙ্গে উত্তেজনার কথা প্রকাশ করে বহু বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন।