April 26, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, February 10th, 2022, 8:46 pm

প্রেমিক-প্রেমিকাকে একসঙ্গে দেখে ফেলায় শিশু লিজাকে হত্যা!

হবিগঞ্জের মাধবপুরে প্রেমিক-প্রেমিকাকে একসঙ্গে দেখে ফেলায় এবং বিষয়টি প্রেমিকার মাকে জানিয়ে দেয়ায় শিশু লিজাকে (৯) শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ বাঁশ ঝাড়ে ফেলে রাখা হয়।

এই হত্যাকাণ্ডের ছয় মাস পর ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করেছে হবিগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বৃহস্পতিবার দুপুরে হবিগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. আল মামুন শিকদার।

নিহত লিজা আক্তার উপজেলার গন্ধবপুর গ্রামের মো. সাগর আলীর মেয়ে।

এই মামলার গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- একই গ্রামের বাহার উদ্দিন, খাদিজা আক্তার তাজরীন ও আমেনা খাতুন। এ ছাড়া মামলার প্রধান আসামি প্রেমিক যুগল হলেন তাকবীর হাসান ও শান্তা।

পুলিশ সুপার জানান, গত বছরের ২১ জুলাই ঈদ-উল আযহার দিন সন্ধ্যায় শিশু লিজাকে তার মা সেলিনা বেগম প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস আনতে গ্রামের পাশের বাজারে পাঠান। কিন্তু রাত হয়ে গেলেও সে ফিরে আসেনি। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করেও তার সন্ধান পায়নি পরিবার। পরে ওইদিন রাতেই শিশু লিজার বাবা সাগর আলী মাধবপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

নিখোঁজের চারদিন পর গ্রামের পাশের বাঁশঝাড়ে লাকড়ি কুড়াতে গিয়ে লিজার অর্ধগলিত লাশ দেখতে পান এক নারী। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে।

রাতে লিজার বাবা সাগর আলী অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মাধবপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় হবিগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরে পিবিআইয়ের সদস্যরা তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে গত ৭ ও ৯ ফেব্রুয়ারি অভিযান চালিয়ে একই গ্রামের বাহার উদ্দিন, খাদিজা আক্তার তাজরীন ও আমেনা খাতুনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পুলিশের জিজ্ঞাসবাদে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করে তারা।

পরে বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) আসামিদের আদালতে হাজির করলে বাহার ও তাজরীন হবিগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিম জুমুর সরকারের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

আসামিরা আদালতকে জানায়, গ্রেপ্তার তাজরীনের ছোটভাই তাকবীর হাসানের সঙ্গে প্রতিবেশী কিশোরী শান্তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সুবাধে তারা দুজনের প্রায়ই দেখা সাক্ষাত করত।

হত্যাকাণ্ডের কয়েকদিন আগে এক সন্ধ্যায় শান্ত ও তাকবীর দেখা করার সময় শিশু লিজা তাদেরকে একসঙ্গে দেখে ফেলে এবং বিষয়টি সে শান্তার মাকে জানিয়ে দেয়। এরপর শান্তার মা শান্তাকে গালি-গালাজ করেন এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেন। এতে তাদের প্রেম নষ্ট হওয়ার পথে চলে যায়।

রাগে ও ক্ষোভে লিজাকে শায়েস্তা করার সুযোগ খুঁজতে থাকে শান্তা ও তাকবীর। গত বছরের ২১ জুলাই ঈদ-উল আযহার দিন সন্ধ্যায় বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে লিজাকে চকলেটের লোভ দেখিয়ে একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে যায় ঘাতকরা। এরপর তারা লিজাকে গলা টিপে হত্যা করে বাঁশ ঝাড়ে ফেলে রেখে আসে।

পুলিশ সুপার মো. আল মামুন শিকদার বলেন, হত্যাকাণ্ডে বেশ কয়েকজন অংশ নেয়। এর মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।

—-ইউএনবি