কুবি প্রতিনিধি:
আন্তর্জাতিক কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় (আইসিপিসি, এশিয়া) চট্টগ্রাম বিভাগে প্রথম স্থান এবং জাতীয় পর্যায়ে ১৬ তম স্থান অর্জন করেছে কুমিল্লা (কুবি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) বিভাগের দল সিওইউ আনপ্রেডিক্টেবল ৩২০৭।
এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের ১০৪ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬৫টি প্রোগ্রামিং দলের ৬৪০ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহন করেন।
শনিবার (৮ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজিতে (বিইউবিটি) প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেওয়া হয়৷
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন আইসিটি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক চক্রবর্তী, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম রিয়াদ, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইফতেখার নাহিম৷
শিক্ষার্থীদের এমন অর্জনে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন কুবি উপাচার্য। তিনি বলেন, এটা অনেক বড় একটা সফলতা মনে করি। আর আইসিটি বিভাগও যে অনেক বেশি ক্যাপাবল এটার মাধ্যমে তা আবারও প্রমাণিত হলো। আমি অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানাতে ও সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য আগামীকাল ডেকেছি। এভাবে প্রত্যেকটা অর্জনে আমি সবসময় উৎসাহ প্রদান করে থাকি। কারন বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বৃদ্ধিতে এরাই মূলত কাজ করে। আর এমন কাজে যেমন সাপোর্ট প্রয়োজন আমি দেওয়ার চেষ্টা করি। অন্য কিছুর চেয়ে আমি এগুলো বেশি প্রায়োরিটি দেই।
এদিকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে দলনেতা অনিক চক্রবর্তী বলেন, প্রোগ্রামিং এ হাতেখড়ি হয় আমাদের বড় ভাইদের হাত ধরে। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। আমাদের এই কন্টেস্টের যোগ্যতা অর্জনের পিছনে তাদের ভূমিকা অপরিসীম। আমাদের ডিপার্টমেন্ট আমাদেরকে এক্ষেত্রে অনেক হেল্প করেছে। প্রতি মাসে ডিপার্টমেন্ট থেকে একটা প্রোগ্রামিং কন্টেস্টের আয়োজন করা হয়। যার মাধ্যমে তারা প্রোগ্রামারদের উৎসাহ প্রদান করে। এছাড়া প্রায়শই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রোগ্রামিং কন্টেস্টে যেতে উৎসাহ দিয়েছেন এবং আর্থিক ভাবে সাহায্য করেছেন।
আরেক প্রতিযোগী রাকিবুল ইসলাম রিয়াদ বলেন, ভার্সিটিতে ভর্তি হবার পর বড় ভাইদের অনুপ্রেরণার প্রোগ্রামিং শুরু করি। আমরা যারা প্রোগ্রামিং করি তাদের জন্য সবচেয়ে বড় কয়েকটি স্বপ্নের মধ্যে একটা হচ্ছে আইসিপিসি। প্রথম বর্ষ থেকে স্বপ্ন ছিলো এমন একটা সম্মানজনক প্রতিযোগিতায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে অংশগ্রহণ করার। এর আগে দুই বার প্রিলিমিনারি থেকে বাদ পরি।আলহামদুলিল্লাহ এইবার সুযোগ পাই জাতীয় পর্যায়ে যাওয়ার এবং অনেক ভালোও করেছি। দেশের সেরা সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে দেখা সত্যিই অনেক আনন্দের। অনেক কিছু শিখেছি এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি।
ইফতেখার নাহিম বলেন, আমাদের এই সাফল্যে আমরা খুবই আনন্দিত। আমাদের এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে আমাদের ডিপার্টমেন্ট এর স্যারদের অনুপ্রেরণা। ওনারা সবসময় প্রোগ্রামিং করার জন্য উৎসাহিত করেছেন। ডিপার্টমেন্টে প্রায় মাসেই প্রোগ্রামিং কন্টেস্টের আয়োজন করা হয়। যার কারনে আমাদের মধ্যে একটি প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব সৃষ্টি হয়, যা আমাদের জাতীয় প্রোগ্রামিং কন্টেস্টে ভালো করতে সহযোগিতা করেছে।
বিইউবিটির উপাচার্য ড. মো ফাইয়াজ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। প্রতিমন্ত্রী বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন৷ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইসিপিসি এশিয়ার ঢাকা অঞ্চলের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মাদ আলী নূর৷
আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ কায়কোবাদ, বিউবিটি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারমান আবু সালেহ, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আবুল এল হক, আইসিপিসি ফাইনালের বিচারক শাহরিয়ার মঞ্জুর, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাফর আলম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ‘আন্তর্জাতিক কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় (আইসিপিসি)’ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্বের জনপ্রিয় এবং সবচেয়ে বড় প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করে৷ প্রতি বছর দু’টি পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। ১ম পর্বে বিশ্বের আটটি অঞ্চল থেকে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিজয়ীরা চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেয়। আইসিপিসি ঢাকা, বিশ্বের আটটি অঞ্চলের মধ্যে এশিয়া-পশ্চিম অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। বিশ্বের আটটি অঞ্চল থেকে আঞ্চলিক পর্বে বিজয়ী দলগুলো এবছর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় আইসিপিসির চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেবে।
আরও পড়ুন
এইচএসসির ফল প্রকাশ শিগগিরই: শিক্ষা মন্ত্রণালয়
আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের জন্য সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা রাখা হবে: বেরোবি উপাচার্য
তিন মাস পর ক্লাসে ফিরলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা