অনলাইন ডেস্ক :
শক্ত ভিত, হাতে পর্যাপ্ত উইকেট। নিউ জিল্যান্ডের রান তিনশ ছাড়িয়ে যাওয়ার জোর সম্ভাবনা ছিল। শেষ দিকে দারুণ বোলিংয়ে তা হতে দিলেন না নাসিম শাহ, হারিস রউফরা। রান তাড়ায় দুর্দান্ত সেঞ্চুরি উপহার দিলেন ফখর জামান। অনায়াস জয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল পাকিস্তান। পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বৃহস্পতিবার নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের জয় ৫ উইকেটে। ২৮৯ রানের লক্ষ্য স্বাগতিকরা পেরিয়ে যায় ৯ বল হাতে রেখে। ওয়ানডেতে পাকিস্তানের ৫০০তম জয় এটি। অস্ট্রেলিয়া (৫৯৪) ও ভারতের (৫৩৯) পর তৃতীয় দল হিসেবে এই মাইলফলক স্পর্শ করল তারা।
এই সংস্করণে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে ১১৪ বলে ১৩ চার ও এক ছক্কায় ১১৭ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন ফখর। গত জানুয়ারিতে এই নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষেই করাচিতে ১০১ রানের ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত ফখর ছিলেন পরাজিত দলে। আরেকটি সেঞ্চুরিতে এবার জয়ের নায়ক তিনিই। তার সঙ্গে শতরানের উদ্বোধনী জুটির পথে ফিফটি করেন ইমাম-উল-হক। অধিনায়ক বাবর আজম পঞ্চাশের ছোঁয়া পাননি স্রেফ এক রানের জন্য। নাসিম শাহর অবদানও কম নয়। ফ্ল্যাট পিচে অসাধারণ বোলিংয়ের প্রদর্শনী মেলে ধরেন তরুণ এই পেসার। ১০ ওভারে দুই মেডেনে স্রেফ ২৯ রান দিয়ে তার প্রাপ্তি ২ উইকেট।
তাদের আলোয় আড়ালে পড়ে গেল ড্যারিল মিচেলের ১১৫ বলে ১১৩ ও উইল ইয়াংয়ের ৭৮ বলে ৮৬ রানের ইনিংস। রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নিউ জিল্যান্ডের উদ্বোধনী জুটিতে ইয়াং ও চ্যাড বাওয়েস যোগ করেন ৪৮ রান। দশম ওভারে বাওয়েসকে (২৬ বলে ১৮) ফিরিয়ে পাকিস্তানকে প্রথম সাফল্য এনে দেন রউফ। দ্বিতীয় উইকেটে ১০১ বলে ১০২ রানের জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন ইয়াং ও মিচেল। ইয়াং যেভাবে খেলছিলেন তার সেঞ্চুরি মনে হচ্ছিল খুব সম্ভব। কিন্তু স্পিনার শাদাব খানকে ছক্কার চেষ্টায় লং অফে ধরা পড়েন তিনি। ৮ চার ও ২ ছক্কায় গড়া তার ৮৬ রানের ইনিংস।
অধিনায়ক টম ল্যাথাম শুরু থেকে সংগ্রাম করছিলেন রানের জন্য। অন্য প্রান্তে রানের চাকা সচল রাখেন মিচেল। ৩৯ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ ছিল ২ উইকেটে ২১৮ রান। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোয় তাদের সংগ্রহ প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি। ল্যাথামের ৩৬ বলে ২০ রানের নড়বড়ে ইনিংস থামে আফ্রিদির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে। টি-টোয়েন্টি সিরিজে রানের বন্যা বইয়ে দিয়ে ওয়ানডে দলে সুযোগ পাওয়া মার্ক চাপম্যান থামেন ১৪ বলে ১৫ রান করে।
মিচেল ১০৩ বলে সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন। ৪৭তম ওভারের শুরুতে তার ১১ চার ও এক ছক্কায় সাজানো ১১৩ রানের ইনিংস থামান আফ্রিদি। ইনিংসের শেষ দুই বলে নাসিম নেন ২ উইকেট। শেষ ৪ ওভারে কোনো বাউন্ডারি মারতে পারেনি নিউ জিল্যান্ড। রান তাড়ায় পাকিস্তান জয়ের ভিত পেয়ে যায় উদ্বোধনী জুটিতে। ফখর ও ইমামের শুরুর জুটিতে ১২৪ রান আসে ১২৮ বলে। ফিফটির পর ইনিংস বেশিদূর টেনে নিতে পারেননি ইমাম। ৬৫ বলে ৫ চার ও এক ছক্কায় তিনি ৬৫ বলে করেন ৬০ রান।
দ্বিতীয় উইকেটে ফখর ও বাবরের ৮৪ বলে ৯০ রানের জুটি ম্যাচ থেকে প্রায় ছিটকে দেয় নিউ জিল্যান্ডকে। ফখর নবম ওয়ানডে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৯৯ বলে। অ্যাডাম মিল্নের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন বাবর। ৪৬ বলে ৩ চার ও এক ছক্কায় খেলেন ৪৯ রানের ইনিংস।
জয় থেকে ৩৪ রান দূরে থাকতে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় ফখরের দুর্দান্ত ইনিংসটি। শান মাসুদ ও আঘা সালমান ভালো করতে না পারলেও দলকে সমস্যায় পড়তে দেননি মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৩৪ বলে ৪২ রানের ইনিংসে দলের জয় নিয়ে ফেরেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান। একই মাঠে আগামী শনিবার হবে দ্বিতীয় ম্যাচ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউ জিল্যান্ড: ৫০ ওভারে ২৮৮/৭ (ইয়াং ৮৬, বাওয়েস ১৮, মিচেল ১১৩, ল্যাথাম ২০, চাপম্যান ১৫, নিকোলস ২০*, রবীন্দ্র ৯, মিল্ন ০; আফ্রিদি ১০-০-৬৩-২, নাসিম ১০-২-২৯-২, নাওয়াজ ৮-০-৫৫-০, রউফ ১০-০-৬৫-২, শাদাব ১০-০-৫৬-১, সালমান ২-০-১৫-০)
পাকিস্তান: ৪৮.৩ ওভারে ২৯১/৫ (ফখর ১১৭, ইমাম ৬০, বাবর ৪৯,, মাসুদ ১, রিজওয়ান ৪২*, সালমান ৭, নাওয়াজ ৮*; মিল্ন ৯-০-৬০-২, হেনরি ১০-০-৪৫-০, টিকনার ৯-০-৫২-১, সোধি ১০-০-৫১-১, মিচেল ৩-০-২৭-০, রবীন্দ্র ৭.৩-০-৫৩-১)
ফল: পাকিস্তান ৫ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: ৫ ম্যাচের সিরিজ ১-০তে এগিয়ে পাকিস্তান
ম্যান অব দা ম্যাচ: ফখর জামান
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা