November 18, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, November 3rd, 2023, 7:16 pm

ফরিদপুরে লক্ষাধিক মেট্রিক টন মুড়িকাটা পেঁয়াজ উৎপাদনের প্রত্যাশা

ইউএনবি) – চলতি রবি মৌসুমে ফরিদপুরের পেঁয়াজ চাষিরা লক্ষাধিক মেট্রিকটন মুড়িকাটা পেঁয়াজ উৎপাদনের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

ইতোমধ্যেই জেলার লক্ষ্যমাত্রার ৫০শতাংশ চাষাবাদ শেষ করেছেন তারা। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজ উঠার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে পেঁয়াজ বাজারের অস্থিরতা কিছুটা স্থিতিশিল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ফরিদপুর সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ও ডিগ্রিরচর ইউনিয়নে কয়েকটি মাঠে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শীতকালীন মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ করার জন্য চাষিরা খেতে কাজ করছেন। কেউ নিড়ানি দিচ্ছেন, কেউ সেচ দিচ্ছেন, আবার কেউ প্রস্তুতকৃত জমিতে ভাল্ব (ছোট পেঁয়াজ) রোপন করছেন ।

এসব খেতের চাষিরা জানান, এ বছর পেঁয়াজের ভালো দর পাওয়ায় রবি মৌসুমে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চাষিরা খেত প্রস্তুত করেছে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদের জন্য। সরকারি আবাদের লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে আরো বেশি পরিমাণ জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের ভাল্ব রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষি কর্মকতা মো. আনোয়ার হোসেন জানান, শীতকালীন সময়ে দেশের মধ্যে শুধু ফরিদপুর অঞ্চলেরই এই পেঁয়াজের আবাদ হয়ে থাকে । অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে চাষিরা মুড়িকাটা ভাল্ব সংগ্রহ করে খেতে রোপণের কাজ শুরু করে।

তিনি আরও বলেন, আবহাওয়া উপযোগী থাকলে রোপণের ৪৫ থেকে ৫০ দিনের মধ্যে খেত থেকে ফসল ঘরে তুলতে পারে তারা। সেই হিসাব মতে- ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে খেত থেকে চাষিরা তাদের মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে তুলতে পারবেন।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে সরকারি হিসাব মতে- প্রতি হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের উৎপাদন হবে ১৮ থেকে ২০ মেট্রিক টন। জেলায় এ বছর ৫ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে আবাদ হচ্ছে। যা থেকে উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে এক লক্ষাধিক মেট্রিক টন।

চলতি বছরের নভেম্বরের শেষে বা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে চাষিরা তাদের ফসলটি বাজারে তুলতে পারবে, আর এতে পেঁয়াজের অস্থির বাজার দর কিছুটা হলেও স্থিতিশিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের চাষি আক্কাশ মন্ডল, জব্বার হোসেন, আব্দুল গফুর মোল্লাসহ বেশ কয়েক জন মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষিরা বলছেন, আবহাওয়া পেঁয়াজ চাষের অনুকুলে থাকলে এবার ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বাজার দর কৃষক পর্যায়ে কেজি প্রতি ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দর পেলে খুশি তারা।

চাষিরা আরও জানান, বর্তমানে বাজারের পেঁয়াজের দর বেশি থাকায় তারা চাহিদার থেকে বেশি পরিমাণ জমিতে এবার শীতকালীন পেঁয়াজ চাষ করেছেন ।

মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে এলেই বাজার দরের অস্থিরতা কমে যাবে বলে মনে করেন ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, দেশের পেঁয়াজ ক্রাইসেস মৌসুমে চাষিদের মুড়িকাটা পেঁয়াজ ভোক্তাদের জন্য অনেকটা সহায়ক হিসেবে ভূমিকা রাখে।

সরকারি এই কৃষি কর্মকতা আরও জানান, জেলার চাষিরা শীতকালীন এই পেঁয়াজ যে পরিমাণ আবাদ করেছে তাতে লক্ষাধিক মেট্রিক টনের বেশি উৎপাদন হবে।

উল্লেখ্য, ফরিদপুর অঞ্চলের মাটি পেঁয়াজ চাষে জন্য উর্বর। এ জেলায় বছরের তিন প্রকারের পেঁয়াজের আবাদ হয়। এরমধ্যে রয়েছে হালি পেঁয়াজ, দানা পেঁয়াজ ও মুড়িকাটা পেঁয়াজ । দেশের মোট পেঁয়াজ উৎপাদনের দিকে থেকে দ্বিতীয় বৃহত্তর জেলা ফরিদপুর।