November 23, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, January 19th, 2024, 7:32 pm

ফরিদপুরে সূর্যমুখী ফুল আকৃষ্ট হচ্ছেন মানুষ

ফরিদপুরের ফসলি মাঠগুলো এখন দেখতে অনেকটাই হলুদের গালিচা বিছানো এক প্রান্তরে পরিণত হয়েছে। কাছে যাওয়ার পরই কেবল এমন সৌন্দর্যের দেখা মেলে। সূর্যমুখী ফুলে সজ্জিত হয়ে যেন রূপ নিয়েছে স্বর্গীয় এক বাগানের। প্রকৃতির এমন স্নিগ্ধতা টানছে প্রকৃতি প্রেমিকদের। শীতের হিমবাতাসে দোল খেয়ে ফুলগুলো নিজের সৌন্দর্য বিলিয়ে বিমোহিত করছে দর্শনার্থীদের। ততবে আর্থিক দিক বিবেচনায়ও এই ফুলচাষে আকৃষ্ট হচ্ছেন মানুষ।

এমন অপরুপ সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিন ভীড় করছে দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজারো প্রকৃতি প্রেমিক। কেউ বন্ধুদের সঙ্গে আসছেন, কেউ বা আসছেন পরিবার পরিজন নিয়ে। ভালো লাগা স্মৃতি ধরে রাখতে নানা ভঙ্গিতে নিজেদের করছেন ক্যামেরাবন্দী।

এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্যটি ফরিদপুর শহরতলীর বদরপুর এলাকার বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্রে। এখানে ৩ একর জায়গাজুড়ে বপন করা হয়েছে বারি সূর্যমুখী-২ জাতের ফুলের বীজ। ডিসেম্বরের শেষ ভাগ থেকে প্রতিটি গাছে ফুল ফুটতে শুরু হয়।

স্বল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এই ফুলের চাষ। ফরিদপুর বিএডিসির উৎপাদিত বীজ স্থানীয় চাহিদা পুরণ করে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।

বৈচিত্র্যময় কৃষির জেলা ফরিদপুর। এ জেলায় প্রায় সবধরণের ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে। সে কারণেই ফরিদপুরে শুরু হয়েছে অধিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ সূর্যমুখী ফুলের চাষ।

ফরিদপুরের সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, সূর্যমুখীর তেল কোলেস্টেরলমুক্ত। প্রচুর পরিমাণে প্রাণশক্তি থাকায় আমাদের শরীরের দুর্বলতা, কার্যক্ষমতা বাড়াতে সূর্যমুখীর ভূমিকা অনন্য। যে কোনো তেলের চাইতে সূর্যমুখী তেল দশগুণ বেশি পুষ্টিসমৃদ্ধ। আর সে কারণেই ফরিদপুরে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এই ফুলের চাষ।

ফরিদপুর জেলার ৯টি উপজেলায় প্রায় দুইশতাধিক কৃষক চলতি মৌসুমে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। মাঠ জুড়ে হলুদ ফুলের সমারোহ। ফুলের সৌন্দর্য দেখতে আসছে দর্শনার্থীরাও। আর কৃষকরাও ভাল ফলন আশা করছেন।

গঙ্গাবন্দি এলাকার চাষী গিয়াজ উদ্দিন জানান, অন্য ফসলের চেয়ে খরচ কম, অধিক লাভ হওয়ার কারনে এই ফুলের চাষ করেছি। আর ফুল দেখতে আসা দর্শনার্থীরা আগামীতে সূর্যমুখী ফুল চাষের আগ্রহ প্রকাশ করছেন অনেকেই।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে সারিবদ্ধভাবে বীজ বপন করা হয়। বীজ বপনের ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে ফসল তোলা যায়। সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার ও দু’বার সেচ দিতে হয় এ ফসলে। প্রতি একর জমিতে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়। আর এক একর জমির উৎপাদিত বীজ থেকে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা লভ করা সম্ভব। সূর্যমুখী গাছ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, দিন দিন চাষীরা সূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদের দিকে ঝুঁকছেন। এই তেলে কোনো ক্লোস্টোরেল নেই। যে কারণে চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এটা অন্য ফসলের চেয়ে স্বল্প জীবনকাল ও লাভজনক। সে কারণেই সূর্যমুখী ফুল চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে বলে জানান জেলার ।

তিনি বলেন, সূর্যমুখী তেলে মানবদেহের জন্য উপকারী অনেক গুণ থাকায় ভোক্তাদের চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে।

—-ইউএনবি