অনলাইন ডেস্ক :
ফিলিস্তিনিদের চারজনে প্রায় তিনজনই মনে করেন, গত ৭ অক্টোবরে দক্ষিণ ইসরায়েলে ঢুকে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলা সঠিক ছিল। একইসঙ্গে গাজায় চলমান যুদ্ধের মধ্যে সেখানকার এমনকি পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের মধ্যেও হামাসের সমর্থন বেড়ে যেতে দেখা গেছে একটি জরিপে। জরিপটি চালিয়েছে ফিলিস্তিনের জরিপ সংস্থা ‘দ্য প্যালেস্টিনিয়ান সেন্টার ফর পলিসি সার্ভে অ্যান্ড রিসার্চ (পিসিপিএসআর)।
হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় ব্যাপকমাত্রায় ফিলিস্তিনি নিহতের সংখ্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বাড়তে থাকার মধ্যে জরিপের এই ফল প্রকাশ হল। গাজায় ইসরায়েলের হামলা তিনমাসে গড়িয়েছে। এই যুদ্ধের মধ্যে পরিচালিত জনমত জরিপে অংশ নেওয়াদের ৭২ শতাংশই বলেছে, দক্ষিণ ইসরায়েলে ঢুকে হামাসের হামলা চালানো সঠিক ছিল, তা এর পরিণতি এখন পর্যন্ত যা-ই হয়ে থাকুক না কেন। আর মাত্র ২২ শতাংশ ফিলিস্তিনি হামাসের ৭ অক্টোবরের ওই হামলা ঠিক ছিল না বলে মত দিয়েছে।
বাকিরা এ ব্যাপারে কোনও মত প্রকাশ করেনি। ইসরায়েলকে ধ্বংসের অঙ্গীকার করা ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস ২০০৭ সালে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ (পিএ) থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার পর থেকেই গাজায় শাসন পরিচালনা করে আসছে। আর পশ্চিম তীরের শাসন ক্ষমতায় আছে পিএ। পিসিপিএসআর এর জরিপে দেখা গেছে, যুদ্ধের আগের জরিপে হামাসের প্রতি ফিলিস্তিনিদের যে সমর্থন ছিল, তার তুলনায় এখন গাজায় হামাসের প্রতি সমর্থন আরও বেড়েছে এবং পশ্চিম তীরে হামাসের প্রতি সমর্থন তিনগুণেরও বেশি বেড়ে গেছে। সম্প্রতি কয়েকবছরে পশ্চিম তীরে সর্বোচ্চ মাত্রার সহিংসতা হয়েছে।
বার বার প্রাণঘাতী সংঘর্ষ হয়েছে ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে সেখানকার ইহুদি বসতিস্থাপনকারী এবং ফিলিস্তিনিদের। জরিপে দেখা গেছে, যুদ্ধে হামাসের ভূমিকা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে গাজার ৫২ শতাংশ ফিলিস্তিনি আর পশ্চিম তীরের ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি- অর্থাৎ, সামগ্রিকভাবে ৭২ শতাংশ ফিলিস্তিনি হামাসের পক্ষে মত দিয়েছে। আর মাত্র ১১ শতাংশ ফিলিস্তিনি ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের (পিএ) প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে। ইসরায়েলের পাশাপাশি আলাদা একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গড়া নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে শুরু হওয়া আলোচনায় প্রায় এক দশকব্যাপী অচলাবস্থার কারণে আব্বাসের জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছে।
গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের প্রতিশোধ হামলায় এ পর্যন্ত ১৮ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আহত হয়েছে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ। দেখা দিয়েছে মানবিক সংকট। পিসিপিএসআর এর জরিপে দেখা গেছে, গাজার ৪৪ শতাংশ ফিলিস্তিনি বলেছে, ১ দিন বা ২ দিনের জন্য তাদের পর্যাপ্ত খাবার ও পানি আছে। আর ৫৬ শতাংশ ফিলিস্তিনি বলেছে,তাদের খাবার ও পানি নেই। এছাড়া, গাজার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ (৬৪ শতাংশ) ফিলিস্তিনিই বলেছে, যুদ্ধে তাদের পরিবারের অন্তত একজন সদস্য নিহত কিংবা আহত হয়েছে।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু