ফেনী প্রতিনিধি
ফেনীর দাগনভুঞায় সিজারের সময় প্রসূতির কিডনি নালী কেটে ফেলার অভিযোগে চিকিৎসক, হসপিটাল মালিক ও নার্স সহ ৩ জনকে আসামী করে ফেনী চীফ জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ম্যাজিস্ট্রেট ফাতেমা তুজ জোহরা মোনার আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী গৃহবধূ ফেরদৌস আরার স্বামী শাহাদাত হোসেন।
মামলায় গাইনী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. চম্পা কুন্ডু ও সেবিকা কলি রানী সহ আয়েশা জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু নাসের তুহিনকে আসামী করা হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ৩০ জুন রাতে প্রসব বেদনা নিয়ে জেলার দাগনভুঞার উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের আকবর সদ্দার বাড়ীর গৃহবধূ ফেরদৌস আরা উপজেলার ফাজিলের ঘাট রোডের আয়েশা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হোন।একপর্যায় হাসপাতাল কতৃপক্ষ গাইনী ডা. চম্পা কুন্ডু’র কাছে চিকিৎসা নিতে পরামর্শ দেন।এসময় চিকিৎসক চম্পা কুন্ডু এসে গৃহবধূর অবস্থা জটিল বলে নরমাল ডেলিভারি করালে সমস্যা হতে পারে মর্মে দ্রুত ওই গৃহবধূর অস্ত্রোপচার করার পরামর্শ দেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই গৃহবধূর স্বামীর কাছ থেকে একটি সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর নেন। কিন্তু সিজারের পর থেকে অনবরত প্রস্রাব বের হওয়ার পাশাপাশি জ্বর,পেটব্যাথা সহ শারীরিক বিভিন্ন সমস্যায় পড়লে তারা গত ২৪ জুলাই ফের ফেনী জেনারেল হাসপাতালে রোগীকে ভর্তি করে।একপর্যায় আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে ধরা পড়ে কিডনি নালি আঘাতপ্রাপ্ত।পরে ৩ আগস্ট রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেখান থেকে ঢাকা বা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নেয়ার পরামর্শ দিয়ে ছাড়পত্র দিয়ে দেন।বর্তমানে রোগী অর্থসংকটাপন্নবস্থায় নিজ বাড়ীতে বিনাচিকিৎসায় মৃত্যুর প্রহর গুনছেন।
এ বিষয়ে ডা. চম্পা কুন্ডুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি স্বাভাবিকভাবেই সিজার সম্পন্ন করি। এবং মা ও বাচ্চাকে সুস্থাবস্থায় হাসপাতাল থেকে বাড়ীতে পাঠাই। বাড়ীতে যাওয়ার ৩/৪ দিন পর ওই গৃহবধুর কি কারনে সমস্যা হয়েছে তা আমি বোধগম্য নই। আর কিডনির নালি কেটে যাওয়ার কোন কারনই নেই।
এবিষয়ে আয়েশা জেনারেল হসপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু নাছের তুহিন বলেন, আমার হসপিটালের অপারেশন থিয়েটারে সবধরনের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি রয়েছে। ডাক্তার সিজার অপারেশন শেষে তাদের উভয়কে সুস্থাবস্থায় বাড়ীতে পাঠায়। আর এখানে হসপিটাল কর্তৃপক্ষের কোন গাফলতি নেই।
এবিষয়ে ফেনী জেলা সিভিল সার্জন ডা.রফিকুস সালেহীন বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়ে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। ওই কমিটি তদন্তও করেছে।
বাদি পক্ষের আইনজীবী শাহাজাহান সাজু বলেন,আদালত বাদির বক্তব্য শুনে মামলাটি আমলে নিয়েছেন।এই জঘন্য ঘটনার দ্রুত সমাধান চান তিনি।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি