April 19, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, February 1st, 2022, 7:38 pm

ফেনীতে বড় ভাই হত্যা মামলায় ছোট ভাইয়ের ১০ বছরের কারাদণ্ড

জেলা প্রতিনিধি, ফেনী :
ফেনীতে বড় ভাই হত্যা মামলায় ছোট ভাইয়ের ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ২০১৯ সালের ২৬ মার্চ বড় ভাই জহিরুল হককে গরম তেলে ঝলসে দেয় ছোট ভাই নিজাম উদ্দিন। এতে জহিরুল হকের বুক ও মুখমন্ডল ঝলসে যায়। এক সপ্তাহ ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা যায়। সে ঘটনায় আজ ফেনীর আদালত ছোট ভাই নিজাম উদ্দিন (৫৫) কে দোষী সাব্যস্ত করে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা করে রায় দেন।
মঙ্গলবার দুপুরে ফেনীর জেলা ও দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছা এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি নিজাম উদ্দিন আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

তারা ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের সাপুয়া গ্রামের মৃত নুরুল হক মিয়ার ছেলে।

রায় শুনে সাজাপ্রাপ্ত আসামি নিজাম উদ্দিনকে হাউমাউ করে কাঁদতে দেখা যায়। পরে তাকে পুলিশের মাধ্যমে ফেনী জেলা করাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

নিহত জহিরুল হক জহিরের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার জানান, এ রায়ে তিনি সন্তুষ্ট নন, তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

আদালত সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ২৬ মার্চ সকালে ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের সাপুয়া গ্রামের একটি চায়ের দোকানে পারিবারিকে বিরোধের জের ধরে বড় ভাই জহিরুল হকের সাথে ছোট ভাই নিজাম উদ্দিনের পারিবারিক বিষয়াদি নিয়ে কথা-কাটাকাটি ও তর্কবিতর্ক শুরু হয়।

কিছু বুঝে ওঠার আগেই নিজাম উদ্দিন ক্ষিপ্ত হয়ে দোকানে কড়াইয়ের মধ্যে থাকা গরম তেল বড় ভাইকে ছুড়ে মারেন। এতে বড় ভাইয়ের শরীরের বুক ও মুখমণ্ডল ঝলসে যান। স্থানীয় লোকজন তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ফেনী ২৫০ শয্যার হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরদিন আশঙ্কাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য জহিরুল হককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় মারা যান জহির।

এ ঘটনায় তার স্ত্রী ফাতেমা আক্তার বাদী হয়ে ৪ এপ্রিল নিজাম উদ্দিনকে আসামি করে দাগনভূঞা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

দায়েরের পর আসামি নিজাম উদ্দিন গ্রেপ্তার হয়। তিনি ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মশিউর রহমান ২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি নিজাম উদ্দিনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। চার্জশিটে ভুল থাকায় ওই বছরের ১ নভেম্বর মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন আদালত। এরপর একই বছরের ২০ ডিসেম্বর মামলাটির অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. মোবারক হোসেন।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ১৩ জন সাক্ষীকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়। গত ২০২১ সালের ১১ অক্টোবর আসামি নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচারকাজ শুরু হয়।