November 19, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, June 5th, 2023, 2:00 pm

ফেনীতে মা-ছেলের রহস্যজনক মৃত্যু, বাবা পলাতক

জেলা প্রতিনিধি, ফেনী :

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়ন থেকে মা- ছেলের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আহত আরেক ছেলে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় শিশুদের বাবা পলাতক রয়েছেন।

সোমবার বেলা ১১টার দিকে ইউনিয়নের আহাম্মদপুর কাজি কোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

নিহতরা হলেন-ওই এলাকার রিকশাচালক সোহেলের স্ত্রী হাজেরা খাতুন মনি (২৭) ও তার ছেলে মো. ইমরান হোসেন ইয়ামিন (৬)।
আহত অপর সন্তান ইরফান হোসেন আরাফাতকে (১৩ মাস) গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহত গৃহবধূ হাজেরার পরিবারের অভিযোগ, যৌতুকের টাকার জন্য নেশাগ্রস্ত সোহেল তার স্ত্রী ও ছেলেকে হত্যা করে পালিয়েছে।
হাজেরার মা জাহান আরা বেগম জানান, সকাল ১১টার দিকে সোহেল তাকে মোবাইল ফোনে জানায় মনি তার ছেলে ইয়ামিন ও আরাফাতকে বিষ খাইয়ে নিজে আত্মহত্যা করেছে। এ খবরে তারা মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে এসে মেয়ে মনিকে ঝুলন্ত অবস্থায় এবং ইয়ামিনকে বিছানায় মৃত দেখতে পান। ইতোমধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। বাড়ির লোকজন ও নিহত মনির স্বামী সোহেল সংজ্ঞাহীন অবস্থায় আরাফাতকে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পরামর্শে সোহেল তার আহত ছেলে আরাফাতকে ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যেতে সেখান থেকে রওনা হন। পথে সোহেল তার বোনের জামাইয়ের কাছে আরাফাতকে দিয়ে পালিয়ে যান। পরে আরাফাতকে ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জাহান আরা বেগম বলেন, আমার মেয়ের জামাই সোহেল নেশাগ্রস্ত লোক। সে গত বেশ ক’মাস থেকে বিদেশ যাওয়ার জন্য আমাদের পরিবারের কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করে আসছিল। আমরা অপারগতা জানানোর পর মেয়ে মনির ওপর প্রায় নির্যাতন চালাতো। সোহেলের পরিবারকে দফায় দফায় জানিয়েও কোন প্রতিকার পাইনি।
স্থানীয় আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য কামাল উদ্দিন জানান, বেশ কিছুদিন ধরে রিকশাচালক সোহেলের পরিবারে কলহ চলছিল। এ নিয়ে প্রায়ই সোহেলের সঙ্গে স্ত্রী মনির ঝগড়া হতো। তাদের দাম্পত্য কলহের বিষয়টি তিনি ও স্থানীয়রা অবগত আছেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাইদুর রহমান বলেন, প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। তাকে অক্সিজেন ও চিকিৎসা দেয়ায় তার অবস্থার উন্নতি হয়েছে। শিশুটিকে গভীর পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। আরাফাতকে মোহাম্মদ হানিফ নামে এক ব্যক্তি ভর্তি করেছেন।
সোনাগাজী মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ খালেদ হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ রক্তাক্ত অবস্থায় ওই নারীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে। একই সঙ্গে ওই ঘর থেকে তার দুই সন্তানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক ইয়ামিনকে মৃত ঘোষণা করেন এবং আরাফাতকে ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল জেনারেল হাসপাতালে পাঠান।
ওসি আরও বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হলেও মৃত্যুর কারণের ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত নই। বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে জানানো হবে।