জেলা প্রতিনিধি, ফেনী :
বহিরাগতদের হামলার প্রতিবাদে রোববার সকালে ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরোনো মহাসড়ক ও ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়কের সংযোগস্থল অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। পরে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ, পুলিশ ও স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাদের আশ্বাসে তাঁরা অবরোধ তুলে নেন।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল শনিবার বিকেলে বহিরাগতদের হামলায় আহত হন তিন শিক্ষার্থী। হামলার প্রতিবাদে ওই দিন রাত সাড়ে নয়টার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ ও শিক্ষকদের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে হোস্টেলে ফিরে যান তাঁরা। একই দাবিতে আজ সকালে শিক্ষার্থীরা আবার ইনস্টিটিউটের সামনে সড়ক অবরোধ করে স্লোগান দিতে থাকেন।
শিক্ষার্থীদের সমাবেশ চলাকালে ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থোয়াই অং প্রু মারমা, ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আমিনুল ইসলাম, ফেনী মডেল থানার ওসি মো. নিজাম উদ্দিন, শিক্ষক পরিষদের সভাপতি তাজ উদ্দিন, ফেনী পৌরসভার কাউন্সিলর বাহার উদ্দিন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম জাবেদ উপস্থিত ছিলেন।
হামলার শিকার ৫ম পর্বের শিক্ষার্থী শাহীন জানান, শনিবার বিকেলে ইনস্টিটিউটের শাহীন হোস্টেল ও শাহাবউদ্দিন হোস্টেলের মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থিত মাঠে ফুটবল খেলার আয়োজন করেন দুই হোস্টেলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। এ সময় দুজন বহিরাগত যুবক সেখানে এসে তাঁদের খেলায় নিতে বলেন। তাঁদের নিতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁরা শিক্ষার্থীদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যান। পরে মাগরিবের নামাজের সময় অধিকাংশ শিক্ষার্থী মসজিদে ও নিজ নিজ কক্ষে চলে যান। এ সময় ৩০ জনের একটি দল শাহীন হোস্টেলে প্রবেশ করে শাহীন, দ্বীন ইসলাম ও শামীম নামের তিন শিক্ষার্থীকে টেনেহিঁচড়ে ভবন থেকে বের করে রাস্তায় নিয়ে যায়। এ সময় অন্য শিক্ষার্থীদের চিৎকারে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এলে বহিরাগতরা কলেজের দেয়াল টপকে পালিয়ে যায়।
মাহাদী হাসান নামের অন্য এক শিক্ষার্থী জানান, প্রায় প্রতিদিনই বহিরাগতদের হাতে নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। বহিরাগতদের ব্যাপারে কেউ ভয়ে মুখ খুলতে চান না। অনতিবিলম্বে এর সুষ্ঠু বিচার না হলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আরও কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন।
এ বিষয়ে ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আমিনুল ইসলাম ভূঞা বলেন, বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হাতে কলেজশিক্ষার্থীরা নির্যাতনের শিকার, এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে তিনি স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছেন। পুলিশ তাৎক্ষণিক এসে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছেন।
আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, এই ইনস্টিটিউটে রংপুর-দিনাজপুরসহ সারা দেশের দূরদূরান্তের শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করেন। বেশির ভাগ শিক্ষার্থী হোস্টেলের বাইরে আশপাশের বাড়িতে মেস করে বসবাস করেন। বহিরাগতরা ছাত্রদের কাছ থেকে টাকা, মুঠোফোন, মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যান। মারধর করেন। তাঁদের নিরাপত্তা নেই।
ওসি নিজাম উদ্দিন জানান, কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে বহিরাগতদের কোনো ধরনের অপরাধ ছাড় দেওয়া হবে না। শিক্ষার্থীরা কয়েকজন বহিরাগতের নাম দিয়েছেন। তাঁরা তাঁদের শনাক্তের চেষ্টা করছেন। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম