অনলাইন ডেস্ক :
মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির দুটি মামলার রায় ঘোষণা ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি করেছে জান্তা শাসিত দেশটির একটি আদালত। গতকাল সোমবার আদালতের কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে একথা জানিয়েছেন। এদিন অবৈধভাবে ওয়াকিটকি রাখাসহ সু চির বিরুদ্ধে দায়ের করা কয়েক ডজন মামলার মধ্যে দুটির রায় হওয়ার কথা ছিল। এর আগে অবৈধভাবে ওয়াকিটকি আমদানি এবং ব্যবহারের অভিযোগে দায়ের করা মামলাটির রায় ২০ ডিসেম্বর হওয়ার কথা ছিল। তখন রায় ঘোষণা ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করেছিল আদালত। এবার তা ফের মুলতবি করা হল। ওয়াকিটকির মামলা ছাড়াও রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন ভঙ্গসহ সু চির বিরুদ্ধে প্রায় ডজনখানেক মামলা করেছে জান্তা সরকার। সব ক’টিতে দোষী সাব্যস্ত হলে ১০০ বছরের বেশি কারাদ- হতে পারে সু চির। তবে সব অভিযোগই সু চি অস্বীকার করেছেন। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী সু চি (৭৬) সমর্থকরা বলেছেন, তার বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো ভিত্তিহীন এবং সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে তার কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জগুলো একবারে শেষ করার জন্য এগুলো দায়ের করা হয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানোর আগ পর্যন্ত মিয়ানমারের স্বাধীনতার নায়ক অং সানের কন্যা সু চি দেশটির একটি বেসামরিক সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। ক্ষমতাচ্যুত করার পর তাকে কারাবন্দি করে সামিরক জান্তা তার বিরুদ্ধে অনেকগুলো মামলা দেয়। মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোয় জান্তার একটি বিশেষ আদালতে সু চির রুদ্ধদ্বার বিচার হচ্ছে। সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উসকানি দেওয়া এবং করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধ ভঙ্গের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় এর আগে এ মাসের শুরুতেই সু চি চার বছর কারাদ- হয়। এরপর সেই সাজা কমিয়ে দুই বছর করা হয়। বলা হয়েছিল, অজ্ঞাত যে স্থানে সু চি কে রাখা হয়েছে সেখানেই সাজা ভোগ করবেন তিনি। ওয়াকিটকির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে একবছরের জেল এবং সর্বোচ্চ তিন বছরের সাজার মুখোমুখি হতে পারেন সু চি। সামরিক শাসনের বিরোধিতা করায় সু চি ২০১০ সালের আগ পর্যন্ত বহু বছর গৃহবন্দি ছিলেন। ওই বছর মুক্তি পাওয়ার পর ২০১৫ সালের নির্বাচনে তার নেতৃত্বাধীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি বড় ধরনের জয় পায়। গত বছরের নভেম্বরের নির্বাচনে তার দল ফের জয় পায়। এর কয়েক সপ্তাহ পর নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করে। যদিও নির্বাচন কমিশন সামরিক বাহিনীর অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছিল। ওই অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমারজুড়ে অশান্তি চলছে, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও লড়াইয়ে দেশটিতে এ পর্যন্ত অন্তত ১ হাজার ৩৭৫ জনের প্রাণ গেছে বলে হিসাব অ্যাসোসিয়েশন ফর এসিস্ট্যান্স অব পলিটিকাল প্রিজনার্সের।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২