অনলাইন ডেস্ক :
অবশেষে প্যারিসের বিমানবন্দরেই মারা গেলেন আলোচিত ইরানি নাগরিক মেহরান করিমি নাসেরি। কূটনৈতিক জটিলতার কারণে তিনি ১৮ বছর (১৯৮৮-২০০৬) ধরে প্যারিসের চার্লস ডি গল বিমানবন্দরে বসবাস করে আসছিলেন। গত শনিবার সেখানেই তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা। ইরানের খুজিস্তান প্রদেশে ১৯৪৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন মেহরান। মাকে খুঁজতে ইউরোপে পাড়ি জমিয়েছিলেন। বেলজিয়ামে কয়েক বছর ছিলেন। তবে প্রয়োজনীয় নথিপত্র না থাকায় যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ড, জার্মানিসহ কয়েকটি দেশ থেকে বহিষ্কার হয়েছেন। এরপর ১৯৮৮ সালে তিনি ফ্রান্সে যান। ফ্রান্সে পৌছানোর সাথে সাথে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পরে যেহেতু আইন সিদ্ধ ভাবে তিনি ফ্রান্স বিমান বন্দরে পৌছেন সেহেতু ছেড়ে দেয়া হয়। কিন্তু পাসপোর্ট না থাকায় তাকে কোন দেশের নাগরিকের মর্যাদা দিয়ে সেখানে পাঠাতেও পারছিল না ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষ। অবশেষে বিমান বন্দরের এক নম্বর টারমিনালের বাসিন্দা হিসাবে বসবাস আরম্ভ করেন। সেখানে নোটবুকে নিজের জীবনকাহিনী লিখে, বই ও সংবাদপত্র পড়ে সময় কাটতো তার। নিজেকে পরিচয় দিতেন ‘স্যার আলফ্রেড’ হিসেবে। এদিকে নাসেরির জীবনকাহিনীতে অনুপ্রাণিত হয়ে ২০০৪ সালে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন হলিউডের প্রভাবশালী প্রযোজন স্টিভেন স্পিলবার্গ। ব্লকবাস্টার হওয়ার সেই ছবির নাম ‘দ্য টার্মিনাল’। ছবিটিতে অভিনয় করেছিলেন জনপ্রিয় অভিনেতা টম হ্যাংকস। ছবি নির্মিত হওয়ার পর বহু মানুষ নাসেরিকে এক নজর দেখতে প্যারিস বিমানবন্দরে ভিড় জমাতেন। তখন একদিনে ৬টি সাক্ষাৎকারও দিতে হয়েছে তাকে। নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, স্পিলবার্গ নাসেরির কাছ থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার ডলারে এর স্বত্ত কেনেন। উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে নাসেরি ফ্রান্সে থাকার অনুমতি দিয়েছিলো কতৃপক্ষ। তবে নিজের ইচ্ছেতে ২০০৬ পর্যন্ত বিমানবন্দরেই ছিলেন। ২০০৬ সালে অসুস্থ হয়ে পড়ার পর বিমানবন্দর থেকে নাসেরিকে হাসপাতালে নেয়া হয়। এরপর থেকে স্পিলবার্গের ওেথকে পাওয়া অর্থ দিয়ে একটি হোস্টেলে থাকতেন নাসেরি। কয়েক সপ্তাহ আগে তিনি আবারও বিমানবন্দরে থাকা শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত সেই বিমানবন্দরেই মৃত্যু হয়েছে নাসেরির। এ সময় তার কাছে কয়েক হাজার ইউরো পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা। সূত্র : বিবিসি
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু