April 20, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, June 1st, 2022, 8:09 pm

ফ্রেঞ্চ ওপেন: কোয়ার্টার ফাইনালে নাদালের কাছে পরাজিত জকোভিচ

অনলাইন ডেস্ক :

চির প্রতিদ্বন্দ্বি নোভাক জকোভিচকে হারিয়ে ফরাসী ওপেন টেনিসের সেমিফাইনালে উঠেছেন রাফায়েল নাদাল। ক্লে কোর্টে আরো একবার নিজের সেরাটা দিয়ে জকোভিচকে চার সেটের লড়াইয়ে পরাজিত করে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেন নাদাল।
১৩ বারের রোলা গাঁরো চ্যাম্পিয়ন নাদাল এনিয়ে ক্যারিয়ারে ৫৯ বারের মত জকোভিচের মুখোমুখি হয়েছিলেন। চার ঘন্টা ১২ মিনিট স্থায়ী হাই ভোল্টেজ লড়াইয়ে শেষ হাসি হেসেছেন নাদাল। কোর্ট ফিলিপে অনুষ্ঠিত ম্যাচে নাদাল জয়ী হয়েছেন ৬-২, ৪-৬, ৬-২, ৭-৬ গেমে। গত বছরের চ্যাম্পিয়ন জকোভিচের বিপক্ষে এনিয়ে নিজের ১০ম ফ্রেঞ্চ ওপেনের ম্যাচে অষ্টম জয় তুলে নিলেন নাদাল। শেষ চারে নাদালের প্রতিপক্ষ তৃতীয় বাছাই আলেক্সান্দার জেভরেভ। ম্যাচ শেষে নাদাল বলেছেন, ‘আমি খুবই আবেগপ্রবন একজন মানুষ। এখানে খেলতে পারাটা সবসময়ই আমার কাছে অসাধারণ এক অনুভূতি। জকোভিচের বিপক্ষে খেলাটা সবসময়ই দুর্দান্ত চ্যালেঞ্জের। তার বিপক্ষে জয়ের একটি মাত্র পথ আছে, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নিজের সেরাটা দিয়ে যাওয়া।’ ২০০৫ সালে প্রথমবারের মত রোলা গাঁরোতে শিরোপা জয়ের পর ৩৫ বছর বয়সী নাদাল এখানে ১১৩ ম্যাচের মধ্যে মাত্র তিনটিতে পরাজিত হয়েছেন। ক্যারিয়ারে জকোভিচের বিপক্ষে তার জয়ের অনুপাত এখন ৩০:২৯। এ বছরের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের পর পঞ্চম বাছাই জকোভিচের সামনে এখন রেকর্ড বৃদ্ধিকারী ২২তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের হাতছানি। দ্বিতীয় সেটে জকোভিচ ডাবল ব্রেক পয়েন্টে পিছিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত ৮৮ মিনিটের লড়াইয়ে সেটটি জিতে লড়াই জমিয়ে তুলেছিলেন। চতুর্থ সেটে তিনি দুটি সেট পয়েন্ট মিস করেন। বিশে^র নাম্বার ওয়ান এই সার্বিয়ানকে এখন ক্যারিয়ারের ২১তম গ্র্যান্ড স্ল্যামের জন্য উইম্বলডন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। জকোভিচ অবশ্য এই ম্যাচের পর নাদালকে অভিনন্দন জানাতে ভুল করেননি, ‘রাফাকে অভিনন্দন। গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে সে আজ আমার চেয়ে ভাল খেলেছে। সে দেখিয়ে দিয়েছে কেন সে অসাধারণ একজন চ্যাম্পিয়ন। তার জন্য শুভকামনা। এই জয়টা তার প্রাপ্য ছিল।’ এর আগের রাউন্ডে ফেলিক্স অগার-আলিয়াসিমের বিপক্ষে পাঁচ সেটের জমাট লড়াইয়েল পর নাদাল শেষ আট নিশ্চিত করেছিলেন। যে কারণে জকোভিচের বিপক্ষে ম্যাচটিতে তাকে আন্ডারডগ হিসেবেই বিবেচনা করা হয়েছিল। পায়ের ইনজুরির কারণে জকোভিচের বিপক্ষে ম্যাচটিতে পরাজিত হলে এটাই হয়ত প্যারিসে তার শেষ ম্যাচ হতে পারতো বলে ইঙ্গিত ছিল। ক্লে কোর্টের রাজা নাদাল কাল ট্রেডমার্ক পারফরমেন্স দিয়ে ৫৭টি উইনিং শট খেলেছেন। ১২ মাস আগে এই একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সেমিফাইনালে পরাজয়ের প্রতিশোধটাও নিয়ে নিলেন নাদাল। শুরু থেকেই নাদাল নিজেকে প্রমান করতে শুরু করেন। ১০ মিনিটের মধ্যে দুটি ব্রেক পয়েন্ট অর্জন করে ৩-১’এ এগিয়ে যান। পঞ্চম গেমে দুটি ডাবল ব্রেক নিয়ে সেটটিকে একপেশে করে তুলেন। এর মাধ্যমে জকোভিচের ২২ সেট অপরাজিত থাকার রেকর্ড ভঙ্গ করেন। দ্বিতীয় সেটের প্রথম গেমটি কিছুটা লম্বা হয়েছিল। কিন্তু ফলাফল সেই একই, নাদাল ছয়টি ব্রেক পয়েন্ট জয় করেন। জকোভিচের আনফোর্সড এররগুলোই নাদালকে এগিয়ে যেতে সহায়তা করেছে। নাদালের একটি ড্রপ শটের কারণে শেষ পর্যন্ত জকোভিচ ব্রেক পয়েন্ট অর্জন করেন। পঞ্চম ব্রেক পয়েন্ট জিতে দ্বিতীয় সেট নিজের করে নেন সার্বিয়ান নাম্বার ওয়ান। ১০ম গেমে পাওয়া সেট পয়েন্টটি এখানে কাজে লাগান জকোভিচ। তৃতীয় সেটে আবারো জকোভিচ ৪-১’এ পিছিয়ে পড়েন। অষ্টম গেমে নাদাল দুই সেট পয়েন্টের জন্য সার্ভিস শুরু করলেও জকোভিচ তা সফল হতে দেনননি। যদিও শেষ পর্যন্ত কোন ভুল করেননি নাদাল। চতুর্থ সেটের শুরুতেই সহজ কিছু সুযোগ হাতছাড়া করে জকোভিচ কার্যত ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়েন। যদিও শুরুতে ২-০ গেমের লিড নিয়েছিলেন শীর্ষ বাছাই। কিন্তু দুটি সেট পয়েন্ট রক্ষা করে দারুন এক ফোরহ্যান্ড শটে নাদাল সেটটি ও একইসাথে গেমটি নিজের করে নেন। টাই ব্রেকে একচেটিয় আধিপত্য দেখিয়ে নাদাল ৬-১’এ এগিয়ে গিয়েছিলেন। জকোভিচ তিনটি ম্যাচ পয়েন্ট রক্ষা করলেও শেষ পর্যন্ত আর পেরে উঠেননি। এদিকে দিনের আরেক উত্তেজনাপূর্ণ কোয়ার্টার ফাইনালে তৃতীয় বাছাই আলেক্সান্দার জেভরেভ ৬-৪, ৬-৪, ৪-৬, ৭-৬ (৯/৭) গেমে স্প্যানিশ সেনসেশন১৯ বছর বয়সী কার্লোস আলকারাজকে পরাজিত করে শেষ চার নিশ্চিত করেছেন। এনিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মত ফ্রেঞ্চ ওপেনের শেষ চারে উঠলেন জেভরেভ। আলকারাজ এ বছর চারটি শিরোপা জয় করেছেন যার মধ্যে দুটি মাস্টার্স ১০০০ শিরোপা রয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৫৬টি আনফোর্সড এররে জেভরেভের কাছে তাকে নতি স্বীকার করতে হলো। অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন জেভরেভ ক্যারিয়ারে পঞ্চমবারের মত কোন গ্র্যান্ড স্ল্যামের শেষ চারে খেলার যোগ্যতা অর্জন করলেন। চলতি মাসের শুরুতে মাদ্রিদ মাস্টার্সের ফাইনালে আলকারাজের কাছে বড় পরাজয় স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিলেন জেভরেভ।