অনলাইন ডেস্ক :
দীর্ঘ ৫৫ বছরের বন্ধু ড. ইনামুল হককে শেষ বিদায় জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে হাজির প্রখ্যাত অভিনেতা আবুল হায়াত। চোখেমুখে এক আকাশ বিষণ্ণতা তাঁর। সেই বিষণ্ণতা নিয়েই বন্ধুর জন্য খোলা শ্রদ্ধাঞ্জলি খাতাটি উল্টে দেখলেন। মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে যখন শহীদ মিনারে ড. ইনামুল হকের মরদেহ নেওয়া হলো, ছুটে গেলেন আবুল হায়াত। ৫৫ বছরের বন্ধুকে শেষ বিদায় জানাতে হাতে নেন একগুচ্ছ রজনীগন্ধা। কোনও রকমে বন্ধুর মৃত দেহের কাছে ফুলগুলো সঁপে অঝোরে কাঁদেন আবুল হায়াত। মেয়ে নাতাশা হায়াত বাবার কাছে ছুটে গেলেও বন্ধুর জন্য কান্না থামেনি আবুল হায়াতের। উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের কেঁদে কেঁদে বিশিষ্ট অভিনয়শিল্পী আবুল হায়াত জানিয়েছেন, ‘আমি আর নিতে পারছি না। এখন আর কিছুই বলার নেই আমার। বলার মতো অবস্থায়ও নেই।’ মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ড. এনামুল হকের মরদেহ শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে নেওয়া হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ, অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি, তানজিকা আমিন, নাতাশা হায়াত, মোমেনা চৌধুরী, বৃন্দাবন দাস, মীর সাব্বির, নির্মাতা অরণ্য আনোয়ারসহ অনেকে। একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রখ্যাত নাট্যকার, অভিনেতা, লেখক, শিক্ষক ড. ইনামুল হককে মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) বাদ জোহর নগরীর বনানী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়। গত সোমবার বিকেল আনুমানিক সোয়া ৩টার দিকে রাজধানীর বেইলি রোডের বাসভবনে ড. ইনামুল হকের মৃত্যু হয়। ড. ইনামুল হকের জন্ম ফেনীর এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি রসায়নে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। দীর্ঘকাল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগের শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে জনগণকে উদ্ধুদ্ধ করার প্রয়াসে বিভিন্ন আন্দোলনমুখী নাটকে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭০ সালে আইয়ুব খানের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে তৎকালীন অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নেন নাট্যচর্চাকে হাতিয়ার করে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ সৃজনীর ব্যানারে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে ট্রাকে ট্রাকে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে পথনাটক করেন। ব্যক্তিজীবনে ড. ইনামুল হকের দাম্পত্য সঙ্গী বরেণ্য নাট্যজন লাকী ইনাম। তাঁদের সংসারে দুই মেয়ে হৃদি হক (স্বামী লিটু আনাম) ও প্রৈতি হক (স্বামী সাজু খাদেম)। ড. ইনামুল হক ২০০২ সালে একুশে পদক এবং ২০১৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন।
আরও পড়ুন
ইউটিউব থেকে সরানো হলো শাকিবের ‘তুফান’
চিন্তিত অনন্যা পান্ডে
কনাকে নিয়ে সুখবর দিলেন আসিফ