April 16, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, February 3rd, 2023, 8:22 pm

বরিশালের কাছে হেরে খুলনার বিদায়

অনলাইন ডেস্ক :

টিকে থাকতে জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না। কিন্তু সামনে লক্ষ্য ছিল পাহাড়সম। যা পেরিয়ে যেতে পারল না খুলনা টাইগার্স। ফরচুন বরিশালের কাছে বড় ব্যবধানে হেরে সবার আগে বিদায় নিশ্চিত হলো দলটির। শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার খুলনাকে ৩৭ রানে হারিয়েছে সাকিব আল হাসানের বরিশাল। ১৯৪ রান তাড়ায় ইয়াসির আলি চৌধুরি-তামিম ইকবালদের খুলনা করতে পারে ১৫৭ রান। ১০ ম্যাচে এটি তাদের অষ্টম পরাজয়। স্রেফ ৪ পয়েন্ট নিয়ে শেষ হয়ে গেছে তাদের শেষ চারে থাকার সম্ভাবনা। বরিশাল ১০ ম্যাচে ৭ জয় নিয়ে দুই নম্বর স্থান সুসংহত করেছে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশে ফেরার আগে শেষ ম্যাচে নিজের ঝলক দেখিয়েছেন ইফতিখার আহমেদ। ৩টি করে চার-ছয়ে খেলেছেন ৩১ বলে ৫১ রানের ইনিংস। এবারের বিপিএলে খেলা ১০ ম্যাচে ৬৯.৪০ গড়ে ৩৪৭ রান করেছেন তিনি। তিনটি ফিফটির পাশাপাশি একটি সেঞ্চুরিও আছে ইফতিখারের নামের পাশে। মাঝের দুই ম্যাচে রান না পাওয়া সাকিব এই ম্যাচে ফেরেন স্বরূপে। ¯্রফে ২১ বলে ৩৬ রানের ইনিংস খেলে ছাড়িয়ে গেছেন নিজেকেই। এবারের বিপিএলে এখন পর্যন্ত ১০ ম্যাচে তার সংগ্রহ ৩৪৭ রান। এই টুর্নামেন্টের এক আসরে তার আগের সর্বোচ্চ ছিল ৩২৯ রান, করেছিলেন ২০১৩ সালে। এবার প্রথমবার ৪০০ রানের হাতছানি বাঁহাতি এই অলরাউন্ডারের সামনে। বোলিংয়ে বাকি কাজ সারেন করিম জানাত, খালেদ আহমেদরা। জানাতের মিডিয়াম পেসে ড্রেসিংরুমে ফেরেন খুলনার ৪ ব্যাটসম্যান। খালেদের শিকার ২ উইকেট। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরু করে বরিশাল। পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেট হারিয়ে পায় ৬২ রান। ৭ বলে ১২ রান করে চতুর্থ ওভারে আউট হন এনামুল হক বিজয়। আগের দুই ম্যাচে একাদশে থাকলেও ব্যাটিংয়ের সুযোগ না পাওয়া ফজলে মাহমুদ এই ম্যাচে ইনিংস উদ্বোধন করেন। শুরু থেকেই আগ্রাসী ভূমিকায় দেখা যায় তাকে। মূলত তার ঝড়ো ব্যাটিংয়েই পাওয়ার প্লের সুবিধা কাজে লাগাতে পারে বরিশাল। তবে ফিফটির সম্ভাবনা জাগিয়েও ২ চার ও ৪ ছয়ে ৩৯ রানে ফেরেন ফজলে মাহমুদ। ওয়ানডে ঘরানার ব্যাটিংয়ে ২৩ বলে ২৩ রান করে ফেরেন ইব্রাহিম জাদরান। চতুর্থ উইকেটে জুটি বাঁধেন এবারের আসরে বরিশালের সেরা দুই ব্যাটসম্যান ইফতিখার ও সাকিব। এই জুটিতে ৩৬ বলে আসে ৫২ রান। খুলনার চার স্পিনার নাহিদুল ইসলাম, নাসুম আহমেদ, হাসান মুরাদ ও মার্ক ডেয়ালকে একটি করে ছক্কা মারেন সাকিব। মনে হচ্ছিল আরও একটি পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংস দেখা যাবে সাকিবের ব্যাটে। তার আগেই তাকে থামান পল ফন মিকেরেন। ডাচ পেসারের স্লোয়ারে মাহমুদুল হাসান জয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাকিব। ১ চার ও ৪ ছয়ে ২১ বলে করেন ৩৬ রান। অধিনায়কের বিদায়ের পরও শেষ ১৬ বলে ৪৬ রান পায় বরিশাল। সাকিবের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের সামনে শুরুতে কিছুটা সময় নেন ইফতিখার। ব্যক্তিগত ২ রানে জয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান, প্রথম ১৫ বলে করেন ১৩ রান করেন। সেখান থেকে এবারের বিপিএলে নিজের তৃতীয় ফিফটি করতে আর ১৫ বল খেলেন পাকিস্তানি তারকা। অপরাজিত ইনিংসে তিনটি করে চার-ছয়ে ৩১ বলে করেন ৫১ রান। ক্যামিও ব্যাটিংয়ে ৮ বলে ১৬ রান করেন করিম জানাত। খুলনার পক্ষে ৩ উইকেট পেলেও ৪ ওভারে ৪৮ রান খরচ করেন মিকেরেন। বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় দ্বিতীয় ওভারে বিদায় নেন তামিম। মোহাম্মদ ওয়াসিমের বলে অনসাইডে খেলতে গিয়ে লেগ স্টাম্প হারান অভিজ্ঞ এই বাঁহাতি ওপেনার। তিন নম্বরে নেমে অধিনায়ক শেই হোপ রানের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যাটিংয়ের প্রয়াস চালান। কিন্তু অন্য প্রান্ত থেকে পাননি তেমন কোনো সহায়তা। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে আউট হন আরেক ওপেনার অ্যান্ডি বালবার্নি (১৩ বলে ১২)। হোপের ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লেতে ৪৭ রান করে খুলনা। সপ্তম ওভারে দারুণ আর্ম ডেলিভারিতে মাহমুদুল হাসান জয়কে বোল্ড করেন সাকিব। রানের খাতা খুলতে পারেননি তরুণ ব্যাটসম্যান। দলের বিপদ আরও বাড়িয়ে খালেদের বলে থার্ড ম্যানে মাহমুদউল্লাহর হাতে ক্যাচ দেন হোপ। ৪ চার ও ১ ছয়ে ২৪ বলে ৩৭ রান করেন খুলনা অধিনায়ক। ৮ ওভারের মধ্যে প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ম্যাচ থেকে একপ্রকার ছিটকে যায় খুলনা। পঞ্চম উইকেট জুটিতে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন ইয়াসির ও নাহিদুল ইসলাম। তাদের জুটিতে আসে ৫৭ বলে আসে ৮১ রান। যেখানে নাহিদুলের অবদান ২৪ বলে ২৪ রান। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের নবম ফিফটি করেন ইয়াসির। দুজনকে একই ওভারে ফেরান জানাত। ১৮তম ওভারের প্রথম বলে লং অফে ওয়াসিমের হাতে ক্যাচ দেন নাহিদুল। ইয়াসির দুই বল পর একই জায়গায় একইভাবে আউট হন। ৩৫ বলে ফিফটি করা ইয়াসির ৫ চার ও ৩ ছয়ে ৩৮ বলে খেলেন ৬০ রানের ইনিংস। পরের ব্যাটসম্যানরা আর তেমন কিছু করতে পারেননি। ২৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে বরিশালের সফলতম বোলার জানাত।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ফরচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ১৯৪/৫ (এনামুল ১২, ফজলে ৩৯, ইব্রাহিম ২৩, সাকিব ৩৬, ইফতিখার ৫১*, জানাত ১৬, মাহমুদউল্লাহ ৪*; শফিকুল ২-০-৩২-০, নাহিদুল ৪-০-২৬-১, নাসুম ৪-০-২৯-০, মিকেরেন ৪-০-৪৮-৩, মুরাদ ৪-০-২৫-১, ডেয়াল ২-০-২৯-০)
খুলনা টাইগার্স: ২০ ওভারে ১৫৭/৮ (তামিম ১, বালবার্নি ১২, হোপ ৩৭, জয় ০, ইয়াসির ৬০, নাহিদুল ২৪, ডেয়াল ৫*, নাসুম ১০, মিকেরেন ১, মুরাদ ০*; ইবাদত ৪-০-৩৭-০, ওয়াসিম ৪-০-২৯-১, সাকিব ৪-০-২৪-১, খালেদ ৪-০-৩৬-২, জানাত ৪-০-২৯-৪)
ফল: ফরচুন বরিশাল ৩৭ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: সাকিব আল হাসান