November 19, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, April 3rd, 2022, 8:41 pm

বরিশালে বাস টার্মিনালের দখল নিয়ে হামলা ভাংচুর

বরিশাল নগরীর রূপাতলী বাস টার্মিনালের কর্তৃত্ব নিয়ে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম অনুসারী শ্রমিক নেতাকর্মীর ওপর হামলা ও অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ অনুসারীদের বিরুদ্ধে। তবে মেয়র অনুসারীরা বলছেন, হামলা তারা নয়, তাদের ওপর একাধিকবার হামলা চালানো হয়েছে। উভয় পক্ষের অভিযোগ মতে এই ঘটনায় আহত হয়েছে ছয়জন।

আহতরা হলেন- পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী অনুসারী বরিশাল জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান মাহামুদ, তার অনুসারী শ্রমিক মানিক, শামীম, নাসির এবং পাল্টা কমিটি বরিশাল জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি, মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারী পরিমল চন্দ্র দাসের সমর্থক কালাম ও দিপু সিকদার।

 

শনিবার দুপুর ১টার দিকে সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারীরা মোটরসাইকেল বহর নিয়ে রুপাতলী বাস টার্মিনাল সংলগ্ন সুলতান মাহামুদের অফিসে ভাঙচুর করে এবং তার ওপর হামলা চালায়। এসময় হামলাকারীদের সঙ্গে আগ্নেয় ও ধারালো অস্ত্র ছিল বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

আহত সুলতান মাহামুদ বলেন, আমি আমার ব্যক্তিগত অফিসে বসা ছিলাম। হঠাৎ করে শ্রমিক নেতা দাবীদার রইজ আহম্মেদ মান্না, জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সাজ্জাদ, মুনিম, সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিবসহ দুই শতাধিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী শর্টগান ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমার ওপর হামলা করে। এতে আমিসহ আমার সঙ্গে থাকা কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়। এরা সব মেয়র সাদিকের কথায় আমার ওপর হামলা চালিয়েছে। সাদিক রুপাতলী বাস টার্মিনাল কন্ট্রোলে নিতে পারছে না আমার কারণে, সে জন্য আমার ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে। আমার অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সিনেমা দেখেছে।

সুলতান বলেন, আমি এবং আমার অনুসারীরা কেউ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেয়ার সাহস পাচ্ছি না, নিজ বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছি। হাসপাতালে ভর্তি হলে আমাদের ওপর আবার হামলা করা হবে।

অপরদিকে সিটি মেয়র অনুসারী বরিশাল জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিমল চন্দ্র দাস জানান, আমরা কারও ওপর হামলা করিনি। যাদের নাম বলছে তারা তো টার্মিনালেই আসেনি। বরং সুলতান মাহামুদ আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে আমাদের দুই শ্রমিককে আহত করেছে। তাদের চিকিৎসার জন্য মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।

 

সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার বাবু বলেন, আমরা সকাল থেকে টার্মিনালে ছিলাম। কিন্তু কোথাও কোনো ঝামেলার খবর শুনিনি। উল্টো আমাদের ওপর হামলা হয়েছে। যেখানে আমাদের শ্রমিক পাচ্ছে সেখানেই মারধর করা হচ্ছে।

এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী সুলতান মাহামুদের অফিস সংলগ্ন অগ্রণী ব্যাংকের ম্যানেজার জিয়াউর রহমান বলেন, গন্ডগোল দেখে আমি ব্যাংকের গেট আটকে দেই। কারা ভাঙচুর করছে সেটা বলতে পারবো না।

বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার সহকারি কমিশনার শারমিন সুলতানা রাখি বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তদন্তের পর বিস্তারিত জানানো হবে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এনামুল হক বলেন, এখানে এসে একটি অফিস ভাঙচুর অবস্থায় দেখতে পেয়েছি। বিচ্ছিন্নভাবে এসে এই ঘটনা ঘটনো হয়েছে। যারাই এই অপরাধ করেছে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজগুলো পর্যালোচনা করে দেখবো আমরা। পুলিশের সামনে এই ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ ছিল তবে ঘটনাস্থলে নয়, তাছাড়া পুলিশের কোনো গাফলতি নেই।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ কয়েকদিন ধরেই রুপাতলী মিনিবাস টার্মিনাল দখল নিয়ে প্রতিমন্ত্রী ও মেয়র সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ চলে আসছিল। শুক্রবার দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।

—-ইউএনবি